হীরক রহস্য

কলকাতার এক নিরিবিলি গলির মধ্যে ডিটেকটিভ অর্ণব চৌধুরীর অফিস। একদিন সন্ধ্যায় সেখানে হাজির হলেন রিনি সেন, চোখে আতঙ্ক আর হাতে একটি কাঠের বাক্স।
“আমার বাবা, দীপক সেন, হঠাৎ মারা গেছেন,” রিনি বললেন। “সবাই বলছে হার্ট অ্যাটাক, কিন্তু আমি নিশ্চিত এটা খুন।”
অর্ণব বাক্স খুলে দেখলেন এক চকমকে নীল রঙের হীরক। হীরকের মাঝে একটি অদ্ভুত প্রতীক। রিনি জানালেন, মৃত্যুর আগের রাতে তাঁর বাবা বলেছিলেন, “এই হীরক অনেক কিছু বদলে দেবে।”
অর্ণব তদন্ত শুরু করলেন। দীপক সেন ছিলেন ইতিহাসবিদ এবং রাজস্থানের এক রাজবংশের গোপন গুপ্তধন নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত নথিতে লেখা ছিল — "হীরকের প্রতীক গোপন মানচিত্র, যা উদয়গিরি দুর্গের গুপ্তধনের অবস্থান নির্দেশ করে।"
অর্ণব এবং রিনি পাড়ি দিলেন রাজস্থানের উদয়গিরি দুর্গে। দুর্গ এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত, তবে এক গোপন পথ ধরে তাঁরা পৌঁছালেন নিচের একটি চেম্বারে। হঠাৎই একজন মুখোশধারী লোক বাধা দিল।
“হীরকটা দাও,” সে বলল, “তোমরা জানো না এর কী মূল্য।”
অর্ণব বুঝলেন, দীপক সেনের মৃত্যুর পেছনে এই গোষ্ঠীই দায়ী, যারা গুপ্তধনের খোঁজে বহুদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে।
চেম্বারের ভেতরে তারা খুঁজে পেল আরও একটি হীরক, যার প্রতীক আগেরটির সঙ্গে মিলে যায়। দুই হীরক মিলিয়ে এক আলো বিচ্ছুরিত হল, এবং খুলে গেল একটি গোপন দরজা।
ভেতরে সোনার মুদ্রা, প্রাচীন রত্ন, মূর্তি ও এক রাজার সিংহাসন — সত্যিই এটি ছিল রাজা বিমল নারায়ণের লুকানো গুপ্তধন!
ঠিক তখনই পুলিশের দল এসে পৌঁছায় — অর্ণব আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। মুখোশধারী সহ পুরো চক্র ধরা পড়ে।
ফিরে আসার পথে রিনি বলল, “আপনি না থাকলে বাবার মৃত্যুর রহস্য কোনোদিনই জানা যেত না।”
অর্ণব হেসে বললেন, “আপনার বাবার মত সাহসী মানুষই ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখেন। আমি শুধু সেই ছায়ার পথ ধরেই এগিয়েছি।”
হীরকের রহস্য ফাঁস হল, কিন্তু তার আলো ইতিহাসের গহিন অন্ধকারে আরও অনেক অজানা গল্প জ্বালিয়ে দিল।

