Upgrade to Pro

  • ভাই আমি আজকে সপ্নে jonosathi থেকে১০.০০০ টাকা তুলছি
    #jonosathi #foryou #viral #trending #vairal
    ভাই আমি আজকে সপ্নে jonosathi থেকে১০.০০০ টাকা তুলছি 🤩 #jonosathi #foryou #viral #trending #vairal
    Like
    1
    ·88 Views ·0 Reviews
  • আজকে কি বার কেও কি জানেন?
    আজকে কি বার কেও কি জানেন?
    Like
    1
    ·92 Views ·0 Reviews
  • সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি।
    তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না।
    আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি।
    এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম।

    দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ।
    মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব?

    বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম।
    রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।"

    আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো।
    তিশা? আমার তিশা?
    যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে?

    রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি।
    ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে।
    ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক।
    আমার হৃদয়টা থেমে গেল।

    আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ।
    সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ।

    তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়।

    — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?”
    — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?”
    — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?”
    — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।”
    — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।”

    সে ঠিক কথামতোই করল।
    তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল।
    আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল।

    সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না।
    আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি।

    রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত।
    সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।”

    আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল।
    ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে।
    রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব।

    ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।”

    আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।”
    আমার চোখে তখন আগুন।
    রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল।
    রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল।
    রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে—
    “কারে বাঁধতে চাস?”
    — “তিশারে।”
    “কার দামে?”
    — “অনিকের প্রাণ।”
    “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।”

    পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই।

    সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ।

    — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…”

    আমি হাসি।
    তাকে ঘরে তুলি।
    আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো।

    কিন্তু আমার ভুল ছিল।

    তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে—
    “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’”

    আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা।

    চলবে?

    গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা
    লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান

    দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে।

    Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence.

    #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি। তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না। আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি। এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম। দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ। মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব? বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম। রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।" আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো। তিশা? আমার তিশা? যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে? রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি। ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে। ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক। আমার হৃদয়টা থেমে গেল। আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ। সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ। তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?” — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?” — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?” — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।” — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।” সে ঠিক কথামতোই করল। তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল। আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল। সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না। আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি। রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত। সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।” আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল। ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে। রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব। ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।” আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।” আমার চোখে তখন আগুন। রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল। রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল। রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে— “কারে বাঁধতে চাস?” — “তিশারে।” “কার দামে?” — “অনিকের প্রাণ।” “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।” পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই। সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ। — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…” আমি হাসি। তাকে ঘরে তুলি। আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো। কিন্তু আমার ভুল ছিল। তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে— “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’” আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা। চলবে? গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে। Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence. #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    ·128 Views ·0 Reviews
  • সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি।
    তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না।
    আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি।
    এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম।

    দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ।
    মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব?

    বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম।
    রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।"

    আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো।
    তিশা? আমার তিশা?
    যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে?

    রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি।
    ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে।
    ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক।
    আমার হৃদয়টা থেমে গেল।

    আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ।
    সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ।

    তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়।

    — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?”
    — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?”
    — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?”
    — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।”
    — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।”

    সে ঠিক কথামতোই করল।
    তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল।
    আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল।

    সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না।
    আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি।

    রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত।
    সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।”

    আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল।
    ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে।
    রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব।

    ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।”

    আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।”
    আমার চোখে তখন আগুন।
    রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল।
    রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল।
    রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে—
    “কারে বাঁধতে চাস?”
    — “তিশারে।”
    “কার দামে?”
    — “অনিকের প্রাণ।”
    “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।”

    পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই।

    সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ।

    — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…”

    আমি হাসি।
    তাকে ঘরে তুলি।
    আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো।

    কিন্তু আমার ভুল ছিল।

    তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে—
    “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’”

    আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা।

    চলবে?

    গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা
    লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান

    দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে।

    Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence.

    #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি। তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না। আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি। এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম। দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ। মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব? বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম। রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।" আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো। তিশা? আমার তিশা? যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে? রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি। ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে। ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক। আমার হৃদয়টা থেমে গেল। আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ। সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ। তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?” — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?” — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?” — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।” — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।” সে ঠিক কথামতোই করল। তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল। আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল। সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না। আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি। রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত। সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।” আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল। ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে। রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব। ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।” আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।” আমার চোখে তখন আগুন। রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল। রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল। রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে— “কারে বাঁধতে চাস?” — “তিশারে।” “কার দামে?” — “অনিকের প্রাণ।” “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।” পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই। সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ। — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…” আমি হাসি। তাকে ঘরে তুলি। আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো। কিন্তু আমার ভুল ছিল। তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে— “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’” আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা। চলবে? গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে। Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence. #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    ·143 Views ·0 Reviews
  • 'এই বাড়িটা ভালো না ভাবী। আপনি পোয়াতি মানুষ। আপনার জামাই বিমানবাহিনীতে চাকরি করে,দুই দিন পর পর মিশনে যায়। এই অবস্থায় আপনার একা বাড়িতে থাকা ঠিক হবে না।'

    প্রতিবেশীর কথায় সেদিন একটু অবাক হয়েছিলাম।মহিলাটি দেখতে সুন্দর হলেও তার জিহ্বা কদাকার কালো। আমার শয়নকক্ষের বাতায়ন খুলে তাকালেই মহিলাটির বেলকনি দেখতে পাওয়া যায়। অথচ আসার পর থেকেই দেখছি তার বাড়ির প্রতিটি দরজা জানালা বন্ধ। জানালায় আবার পর্দাও টাঙানো। ঘরের মধ্যে মানুষ আছে কিন্তু তা বাহিরে থেকে আন্দাজ করা মুশকিল। এই তো মাত্র দুই সপ্তাহ হলো গাজীপুরে শিফট হয়েছি, আমি আর আমার হাসবেন্ড। ছোট থেকে আমার বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। তাই গাজীপুরের এমন গাছপালা আচ্ছাদিত পরিবেশ আমার জন্য একেবারে নতুন। আমাদের বাড়িটি খুব বেশি বড়ও না আবার একেবারে ছোটও না। বাড়িটি কাঠের তৈরি দোতলা বিশিষ্ট। খুব কম মূল্যেই বাড়িটি বন্ধক নিয়েছে আমার স্বামী তুষার। আশে পাশে অন্য বাড়ি বলতে আমার প্রতিবেশী নিপা ভাবীদের বাড়ি ছাড়া আর কোন বাড়ি নেই। বাড়ির চারিদিক শালবনে ঘেরা। রাত হলেই অদ্ভুত সব নিশাচর পাখির ডাক ভেসে আসে।

    আমার দিন কেটে যায় ঘরের মধ্যে সময় কাটিয়েই। এটা ওটা করতে করতে কখন যে দিন পেরিয়ে যায়! একা হাতে কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে যায়। দুপুরে তুষার আসে। লাঞ্চ করে আবার কাজে চলে যায়। কাজ থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গড়ায়। এতটুকু সময় আমি নিজের সঙ্গে কাটিয়েই পার করে দেই।বোরিং লাগে না। আমার বাড়ির সামনে একটা কদম গাছ আছে। গাছের নিচে আছে একটা দোলনা। মাঝে মধ্যেই বিকেল হলে আমি দোলনায় গিয়ে বসি। মৃদু বাতাসে কখনো বা দোলনায় বসে গুনগুন করতে করতে বই পড়ি। ভালোই লাগে। নিপা ভাবী মাঝে মধ্যেই তখন আমার কাছে আসেন। এই বাড়ি এই জায়গা নিয়ে নানা অপ্রকৃতস্থ গল্প বলেন। ভূতের গল্প আমার বেশ লাগে। তবে আমি ভূতে বিশ্বাসী নই। কিন্তু জিন যে আছে সেটা আমি মানি,বিশ্বাস করি।

    —--

    আজ বিকেলেও আমি দোলানায় এসে বসি। গোসল করে মাত্রই চুল শুকানোর জন্য বাহিরে এসে বসেছি। সঙ্গে নিয়ে এসেছি হুমায়ুন আহমেদের দেবী বইটি। কতবার পড়েছি এই বই। তাও একটুও অভক্তি জাগে না।

    'ভাবী আপনার কয় মাস চলে?'

    হঠাৎ অপ্রস্তুত কন্ঠস্বরে আমি ভরকে উঠি। পেছনে ফিরতেই দেখি নিপা ভাবী।

    'আরে আপনি? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর আপনি আমাকে নাম ধরেই চাইলে ডাকতে পারেন। জুলফা আমার নাম।’

    নিপা ভাবী কদম গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে বলল,

    'আপাতত ভাবী বলেই না হয় ডাকি? আচ্ছা উত্তর দিলেন না যে? কয় মাস চলে আপনার?'

    আমি বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে জবাব দিলাম,

    'তিন মাস। তিন মাস চলে আমার। ভাবী আপনার বাড়িতে কে কে আছে? মানে অনেকদিন তো হলো এখনে এসেছি। আপনাকে ছাড়া আর কাউকেই দেখলাম না।আপনার বাচ্চারা কোথায়?’

    ‘আমার কোন বাচ্চা নেই।তবে একটা বাচ্চার অনেক শখ।আপনার বাচ্চ…..

    আর কিছু বলার আগেই তুষারের গলা কর্নকুহরে এসে ঠেকল। বইয়ের পাতা থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলাম তুষার দাঁড়িয়ে । কদম গাছের দিকে তাকাতেই দেখি নিপা ভাবী কোথাও নেই। ওমা মহিলাটি গেল কোথায়? একটু আগেই তো এখানে ছিল।

    'এমন দুপুর বেলা তুমি এখানে কি করছো? জানো না এমন সময় অনেক কিছু বেছে চলতে হয়। চলো ঘরে চলো।’

    আমি প্রত্যুত্তর না দিয়ে তুষারের সঙ্গে ঘরে চলে আসি। তবে মনের মধ্যে একটাই প্রশ্ন বার বার স্লোগান তুলছে, নিপা ভাবী কোথায় গেল?



    ঘটনার সূত্রপাত সেদিন থেকেই। মাঝ রাতে হঠাৎ পেটে প্রচন্দ ব্যাথা অনুভব হতেই ঘুমটা ভেঙে যায় আমার। ভেবেছিলাম তুষারকে জাগিয়ে তুলবো। কিন্তু এই সামান্য কারণের জন্য তাকে জাগিয়ে তোলার ইচ্ছে হলো না। সারাদিন কত খাটুনি করে লোকটা। ঘড়ির কাঁটায় তখন বোধহয় ২:৩৫। আমি বিছানা ছেড়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসি।রান্নাঘরে যাই। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে পান করি। হঠাৎ মনে হলো ড্রয়িং রুমে কেউ একজন বসে আছে। একনাগাড়ে কিছু একটা বিরবির করছে। বিষ্ময়ে আমার ভ্রু কুঁচকে এলো। মাত্রই তো ড্রয়িং রুমের সামনে দিয়ে এলাম। তখন তো কাউকে দেখলাম না?

    সাহস করে ড্রয়িং রুমের দিকে এগুতে লাগলাম। যত এগুচ্ছি ততই শব্দটা বেড়েই যাচ্ছে সঙ্গে সোফায় বসে থাকা ব্যাক্তির ছায়াটাও ড্রিম লাইটের আলোয় বড় হচ্ছে। কাছে যেতেই দেখি একটা কালো কুচকুচে বিড়াল। আমার দিকেই অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ম্যাঁও ম্যাঁও করছে। বিরবির শব্দটা এখন আর নেই। বোধহয় মনের ভ্রম ছিল।

    ‘এ দেখি একটা বিড়াল! কিন্তু এটা ঘরে কি করে ডুকলো?’

    হঠাৎ চোখ যায় জানালার দিকে। দেখতে পাই জানালা খোলা। তার মানে জানালাটা আজকে আর লাগানো হয় নি। কিন্তু স্পষ্ট মনে আছে বিকেলেই আমি রোজকার মত সব জানালা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বিড়ালটিকে তাড়াতে হয় না। সে নিজেই জানালা দিয়ে বেড়িয়ে যায়। হঠাৎ আমার চোখ যায় জানালার বহির্ভূত দৃশ্যের দিকে। কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। অথচ কি দেখা যাচ্ছে তা আমি ঠিক করে আন্দাজ করতে পারছি না। অকস্মাৎ আমার পেছন থেকে একটা অদ্ভুত ভারী গলা ভেসে আসে,

    ‘ তোর বাচ্চাটা আমায় দিবি?’

    আমার মাথাটা হঠাৎ ব্যাথায় ছটফট করে উঠে। পেছন ফিরে তাকানোর আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে কি হয়েছিল মনে নেই। সকালে যখন ঘুম ভাঙে তখন দেখি তুষার আমার পাশেই বসে আছে। স্বামীকে রাতের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল,

    ‘আমি তো ওয়াশরুমের জন্য উঠেছিলাম। হঠাৎ দেখলাম তুমি পাশে নেই। তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে যখন নিচে নেমে আসি তখন দেখতে পাই তুমি ড্রয়িং রুমের মেঝেতে পড়ে আছো। তারপর আর কি?তোমাকে কোলে তুলে রুমে এনে শোয়ালাম। কি হয়েছিল বলো তো?’

    কিছুই মনে পড়ছিল না। তাই উত্তর দিতে চেয়েও তুষারকে কিছু বলতে পারলাম না। তবে কানে এখনো একটা কথাই বাজছে,

    ‘তোর বাচ্চাটা আমায় দিবি?’

    —---

    আজ এই বাড়িতে আমার একমাস পূর্ণ হলো।এই এক মাসে আমার সঙ্গে তেমন কিছুই ঘটে নি। সব স্বাভাবিক ছিল। কাল সকালে তুষার খাগড়াছড়ি যাবে। তিন দিনের একটা মিশনে। এ ক'দিন সে অনেক জায়গায় একটা মেয়ে মানুষ খুঁজেছে ২৪ ঘন্টা আমার তদারকি করার জন্য। আমার সঙ্গে থাকার জন্য। কিন্তু এটা তো আর ঢাকা শহর না যে মানুষ চাইলাম আর মেয়ে পেয়ে গেলাম। তুষার আমাকে একা রেখে কিছুতেই যেতে চাইছিল না। কিন্তু কি আর করার? সরকারি চাকরি বলে কথা!

    বিকেলে বাহিরে থেকে কাপড় আনতে গিয়ে দেখি কোথা থেকে যেন নিপা ভাবী ব্যাগ-পত্তর নিয়ে বাড়ি ডুকছে। সঙ্গে ছোট একটা মেয়ে,একজন পুরুষ আর দু'জন বৃদ্ধা-বৃদ্ধও ছিল। আমি ভাবী বলে হাঁক ছাড়তেই সে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।

    ‘ভাবী কোথা থেকে আসছেন?এত সব নিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন?যাক এক মাস পর আপনার পরিবারের সদস্যদের দেখা মিলল।বাচ্চা গুলো তো বিকেলে বাহিরেও আসে না।’

    নিপা ভাবীর কপালে ভাঁজ পড়লো এবার। সে আমার বাড়ির দিকে একবার তাকালো তারপর বলল,

    ‘আপনি আমাকে কি করে চিনেন?আমার নাম কি করে জানলেন?আর আপনাকে তো আমি ঠিক চিনতে পারলাম না?কে আপনি?’

    নিপা ভাবীর কথায় আমি পুরোই কিংকর্তব্যবিমুঢ়। এসব কি বলছে উনি?এখানে আসার পর থেকেই উনার সাথে আমার কত ভাব। আর আজকে বলছে আমাকে নাকি সে চিনে না। আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবো তার আগেই ভাবীর সঙ্গে থাকা পুরুষটি তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

    ‘আতিয়া জলদি বাড়ির চাবিটা দাও। একমাসে না জানি ঘরের কি হাল হয়েছে। এই মণি তোর মায়ের থেকে চাবিটা নিয়ে আয় তো।’

    ছোট্ট মেয়েটা দৌড়ে নিপা ভাবীর কাছে এলো চাবি নেওয়ার জন্য। নিপা ভাবী মেয়েটিকে বলল,

    ‘যাও আব্বুর কাছে। আম্মু আসছি।’

    তারপর আমার দিকে একবার তাকিয়ে বলল,

    ‘পরে কথা হবে।’

    ভাবী আমার জবাবের জন্য অপেক্ষা না করেই চলে গেল। সে চলে যেতেই লোকটি মৃদু কন্ঠে তাকে জিজ্ঞেস করল,কে ওই মহিলা?এই বাড়িতে উঠছে বুঝি?

    সবাই আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকালো। আমার বেশ অস্তিত্ব লাগছিল। তাই এক মুহুর্ত দেরি না করে আমি কাপড় নিয়ে বাড়ির ভেতর চলে এলাম। তুষার বাড়িতেই ছিল। তাকে আমি সব খুলে বললাম। তার নিজের মাথাও কাজ করছে না। সে আর আমাকে কি বুঝাবে? এবার মাথায় আমার আরেকটা প্রশ্ন ভোঁ ভোঁ করছে, নিপা ভাবী আমাকে চিনতে পারলো না কেন?নাকি ইচ্ছে করেই কোন কারন বসত না চেনার ভান করেছে সে? আর ভাবীর তো কোন বাচ্চা নেই । তবে ভাবীর কথার ধরন শুনে কেন মনে হচ্ছিলো ছোট্ট মেয়েটি তার নিজেরই। আর ওই লোকটি তাকে আতিয়া বলেই বা কেন ডাকল?তার নাম তো নিপা।



    সন্ধ্যায় হাসের মাংস আর চালের রুটি করেছি। শীতকালীন সময়ে এটা তুষারের পছন্দের খাবার। স্বামীটা আমার কাল চলে যাবে। না জানি এই তিনদিন কি না কি খায়। তাই যতটুকু পেরেছি,ততটুকুই করেছি। কাজ শেষে যখন এক বাটি মাংস আর রুটি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য রান্না ঘরের লাইটটা বন্ধ করে বেরিয়ে আসলাম তখনি নাকে একটা পঁচা দুর্গন্ধ এসে ধাক্কা খেল। বমি চলে আসার উপক্রম। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে শব্দ এলো,মনে হলো কেউ পাতিলের ঢাকনা সরিয়েছে। আরেকটু খেয়াল করতেই এবার আরো অদ্ভুত এক শব্দ কানে বাজলো,মনে হলো কে যেন খপখপ করে সব ছিড়েখুঁড়ে খাচ্ছে। আমি দ্রুত টেবিলে মাংসের বাটিটা রেখে রান্না ঘরে ডুকলাম। লাইট অন করতেই দেখি সেখানে কিছুই নেই। সব স্বাভাবিক।নেই কোনো শব্দ, সেই কোলাহল। ধ্যাত আজ-কাল হরর মুভি একটু বেশিই দেখা হচ্ছে। তারই ইফেক্ট এসব।

    সেদিন রাতে আমি সবচেয়ে বেশি অবাক হই। যখন রাতে খাবারের সময় রান্নাঘরে গিয়ে দেখি মাংসের পাতিলে এক টুকরো মাংসও নেই। পাতিলের তলায় শুধুমাত্র পড়ে আছে ঝোল। পর পর কেমন যেন সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এখন নিজের ভেতরেও খানিকটা ভয় কাজ করা শুরু করে। সব সময় তো সবকিছু একজন মানুষের ভ্রম হওয়া সম্ভব নয়। তুষার কে বিষয়টি জানানোর পর যে বলে,

    ‘আজ তো রাত হয়ে গেছে। সকালে আমাকে আবার খাগড়াছড়িও যেতে হবে। তিনদিন একটু
    কষ্ট করো। যদি দেখো তিনদিনে সব স্বাভাবিক আছে তাহলে তো ভালোই। তা না হলে আমি বাড়ি ফিরেই হুজুরকে এনে একটা মিলাদের ব্যবস্থা করবো।’

    আমিও তাতে রাজি হলাম। তবুও তুষারের আমাকে ফেলে যেতে বেশ চিন্তা হচ্ছিলো। তাই সে আমার ছোট ননদকে কল করে দুই-একদিনের ভেতর এখানে আসতে বলে। সঙ্গে আমার শাশুড়ীও আসবে। শুনে একটু খুশী হলাম। বাড়িতে একা থাকার চেয়ে তাদের এখানে চলে আসাই ভালো। এমনিতেও বছর শেষেই আমার শশুর-শাশুরি আর ননদ-দেবরের এখানে চলে আসার কথা। কিন্তু সামনেই দেবরের এক্সাম আছে তাই সবাই ঠিক করেছে একেবারে বছরটা শেষ করেই তারা এখানে শিফট হবে।

    -

    পরদিন আমার দিনটা খুব একটা ভালো যায় না। তুষারের জন্য অনেক মন খারাপ হচ্ছিলো। অদ্ভুত একটা ভয়ও মনের মধ্যে বাসা বেঁধে বসে ছিলো।

    সেদিন রাত দেড়টায় হঠাৎ বিকট এক শব্দে আচমকা ঘুম ভেঙে যায় আমার। রাত ভালোই হয়েছে। আমার আবার একটা বোধ অভ্যাস আছে। একবার ঘুম ভাঙলে সহজে ঘুম আসে না। তুষারটা চলে গেছে বিধায় মনটা কেমন কেমন জানি করছে। সারাটা দিনও আজকে কেমন যেন একগুয়ে কেটেছে। ফোনটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ ফেসবুকে স্ট্রোলিং করতে থাকি। হঠাৎ তুষারের কল আসে। প্রথমে একটু অবাক হই। এত রাতে কল করেছে?পরে ভাবলাম সারাদিন কাজ করে এখন হয়তো রাত জেগে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হচ্ছে। ফোন রিসেভ করতেই তুষার একটা কথাই বলল,সব ঠিক আছে?

    ব্যাস সঙ্গে সঙ্গে লাইনটা কেটে যায়। নেট সমস্যা হয়তো। আমি উঠে বারান্দায় যাই। হঠাৎ দোলনার দিকে তাকাতেই মনে হলো কে যেন দোলনায় পা ঝুলিয়ে বসে গুন গুন করছে। মেয়েলি কন্ঠস্বর। আমার শরীরটা শিউরে উঠে। আয়াতুল কুরসী পড়তে পড়তে বারান্দার দরজা বন্ধ করে রুমে চলে এলাম। তুষারকে বেশ কয়েকটি কল করি, কিন্তু ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। খুব ভয় করছিল আমার। হঠাৎ আননোন নাম্বার থেকে একটা কল আসে,কলটা ধরতেই ওপার থেকে ভেসে আসে একটা অস্পষ্ট কন্ঠ। ভয়েজটা কেটে কেটে আসছিল। ভাবলাম হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে দেখে তুষার অন্য কারো নাম্বার থেকে কল করেছে। নেট সমস্যার কারনে কথা অস্পষ্ট শোনাচ্ছে । একটা কল আসার পর আর কোন কল আসে নি।তাই আমিও আর এহেন বিষয়ে এত মাথা ঘামালাম না। ঘুম আসছে না।এখনো ভয় করছে। বিছানায় এসে দোয়া পড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। হঠাৎ অনুভূত হলো পিঠের ওপর কেমন যেন শীতল নিঃশ্বাস পতন হচ্ছে। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাসের শব্দ বাড়তে শুরু করে। মনে হচ্ছে এই তো ঠিক আমার পেছনেই কেও একজন শুয়ে আছে। কিন্তু সেটা তো অসম্ভব বিষয়। বাড়িতে তো এই মুহুর্তে আমি ব্যাতিত কেউ নেই?আমি আয়াতুল্লাহ কুরসী আরো দ্রুত পড়তে শুরু করলাম।যত গুলো দোয়া মাথায় আসছে অনবরত তা পাঠ করছি। কিন্তু নিঃশ্বাসের শীতল বাতাসটা তখনো আমার পিঠে লাগছে। এবার আমি দোয়া পড়তে পড়তে আস্তে আস্তে করে ঘাড় বাঁকিয়ে পেছনে ফেরার চেষ্টা করি। পেছন ফিরতেই আমার চক্ষু চড়কগাছ।মুখ থেকে অস্পষ্ট স্বরে শুধু বেরিয়ে আসে,

    ‘নিপা ভাবী?’........

    সমাপ্ত
    'এই বাড়িটা ভালো না ভাবী। আপনি পোয়াতি মানুষ। আপনার জামাই বিমানবাহিনীতে চাকরি করে,দুই দিন পর পর মিশনে যায়। এই অবস্থায় আপনার একা বাড়িতে থাকা ঠিক হবে না।' প্রতিবেশীর কথায় সেদিন একটু অবাক হয়েছিলাম।মহিলাটি দেখতে সুন্দর হলেও তার জিহ্বা কদাকার কালো। আমার শয়নকক্ষের বাতায়ন খুলে তাকালেই মহিলাটির বেলকনি দেখতে পাওয়া যায়। অথচ আসার পর থেকেই দেখছি তার বাড়ির প্রতিটি দরজা জানালা বন্ধ। জানালায় আবার পর্দাও টাঙানো। ঘরের মধ্যে মানুষ আছে কিন্তু তা বাহিরে থেকে আন্দাজ করা মুশকিল। এই তো মাত্র দুই সপ্তাহ হলো গাজীপুরে শিফট হয়েছি, আমি আর আমার হাসবেন্ড। ছোট থেকে আমার বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। তাই গাজীপুরের এমন গাছপালা আচ্ছাদিত পরিবেশ আমার জন্য একেবারে নতুন। আমাদের বাড়িটি খুব বেশি বড়ও না আবার একেবারে ছোটও না। বাড়িটি কাঠের তৈরি দোতলা বিশিষ্ট। খুব কম মূল্যেই বাড়িটি বন্ধক নিয়েছে আমার স্বামী তুষার। আশে পাশে অন্য বাড়ি বলতে আমার প্রতিবেশী নিপা ভাবীদের বাড়ি ছাড়া আর কোন বাড়ি নেই। বাড়ির চারিদিক শালবনে ঘেরা। রাত হলেই অদ্ভুত সব নিশাচর পাখির ডাক ভেসে আসে। আমার দিন কেটে যায় ঘরের মধ্যে সময় কাটিয়েই। এটা ওটা করতে করতে কখন যে দিন পেরিয়ে যায়! একা হাতে কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে যায়। দুপুরে তুষার আসে। লাঞ্চ করে আবার কাজে চলে যায়। কাজ থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা গড়ায়। এতটুকু সময় আমি নিজের সঙ্গে কাটিয়েই পার করে দেই।বোরিং লাগে না। আমার বাড়ির সামনে একটা কদম গাছ আছে। গাছের নিচে আছে একটা দোলনা। মাঝে মধ্যেই বিকেল হলে আমি দোলনায় গিয়ে বসি। মৃদু বাতাসে কখনো বা দোলনায় বসে গুনগুন করতে করতে বই পড়ি। ভালোই লাগে। নিপা ভাবী মাঝে মধ্যেই তখন আমার কাছে আসেন। এই বাড়ি এই জায়গা নিয়ে নানা অপ্রকৃতস্থ গল্প বলেন। ভূতের গল্প আমার বেশ লাগে। তবে আমি ভূতে বিশ্বাসী নই। কিন্তু জিন যে আছে সেটা আমি মানি,বিশ্বাস করি। —-- আজ বিকেলেও আমি দোলানায় এসে বসি। গোসল করে মাত্রই চুল শুকানোর জন্য বাহিরে এসে বসেছি। সঙ্গে নিয়ে এসেছি হুমায়ুন আহমেদের দেবী বইটি। কতবার পড়েছি এই বই। তাও একটুও অভক্তি জাগে না। 'ভাবী আপনার কয় মাস চলে?' হঠাৎ অপ্রস্তুত কন্ঠস্বরে আমি ভরকে উঠি। পেছনে ফিরতেই দেখি নিপা ভাবী। 'আরে আপনি? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর আপনি আমাকে নাম ধরেই চাইলে ডাকতে পারেন। জুলফা আমার নাম।’ নিপা ভাবী কদম গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে বলল, 'আপাতত ভাবী বলেই না হয় ডাকি? আচ্ছা উত্তর দিলেন না যে? কয় মাস চলে আপনার?' আমি বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে জবাব দিলাম, 'তিন মাস। তিন মাস চলে আমার। ভাবী আপনার বাড়িতে কে কে আছে? মানে অনেকদিন তো হলো এখনে এসেছি। আপনাকে ছাড়া আর কাউকেই দেখলাম না।আপনার বাচ্চারা কোথায়?’ ‘আমার কোন বাচ্চা নেই।তবে একটা বাচ্চার অনেক শখ।আপনার বাচ্চ….. আর কিছু বলার আগেই তুষারের গলা কর্নকুহরে এসে ঠেকল। বইয়ের পাতা থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলাম তুষার দাঁড়িয়ে । কদম গাছের দিকে তাকাতেই দেখি নিপা ভাবী কোথাও নেই। ওমা মহিলাটি গেল কোথায়? একটু আগেই তো এখানে ছিল। 'এমন দুপুর বেলা তুমি এখানে কি করছো? জানো না এমন সময় অনেক কিছু বেছে চলতে হয়। চলো ঘরে চলো।’ আমি প্রত্যুত্তর না দিয়ে তুষারের সঙ্গে ঘরে চলে আসি। তবে মনের মধ্যে একটাই প্রশ্ন বার বার স্লোগান তুলছে, নিপা ভাবী কোথায় গেল? – ঘটনার সূত্রপাত সেদিন থেকেই। মাঝ রাতে হঠাৎ পেটে প্রচন্দ ব্যাথা অনুভব হতেই ঘুমটা ভেঙে যায় আমার। ভেবেছিলাম তুষারকে জাগিয়ে তুলবো। কিন্তু এই সামান্য কারণের জন্য তাকে জাগিয়ে তোলার ইচ্ছে হলো না। সারাদিন কত খাটুনি করে লোকটা। ঘড়ির কাঁটায় তখন বোধহয় ২:৩৫। আমি বিছানা ছেড়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসি।রান্নাঘরে যাই। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে পান করি। হঠাৎ মনে হলো ড্রয়িং রুমে কেউ একজন বসে আছে। একনাগাড়ে কিছু একটা বিরবির করছে। বিষ্ময়ে আমার ভ্রু কুঁচকে এলো। মাত্রই তো ড্রয়িং রুমের সামনে দিয়ে এলাম। তখন তো কাউকে দেখলাম না? সাহস করে ড্রয়িং রুমের দিকে এগুতে লাগলাম। যত এগুচ্ছি ততই শব্দটা বেড়েই যাচ্ছে সঙ্গে সোফায় বসে থাকা ব্যাক্তির ছায়াটাও ড্রিম লাইটের আলোয় বড় হচ্ছে। কাছে যেতেই দেখি একটা কালো কুচকুচে বিড়াল। আমার দিকেই অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ম্যাঁও ম্যাঁও করছে। বিরবির শব্দটা এখন আর নেই। বোধহয় মনের ভ্রম ছিল। ‘এ দেখি একটা বিড়াল! কিন্তু এটা ঘরে কি করে ডুকলো?’ হঠাৎ চোখ যায় জানালার দিকে। দেখতে পাই জানালা খোলা। তার মানে জানালাটা আজকে আর লাগানো হয় নি। কিন্তু স্পষ্ট মনে আছে বিকেলেই আমি রোজকার মত সব জানালা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বিড়ালটিকে তাড়াতে হয় না। সে নিজেই জানালা দিয়ে বেড়িয়ে যায়। হঠাৎ আমার চোখ যায় জানালার বহির্ভূত দৃশ্যের দিকে। কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। অথচ কি দেখা যাচ্ছে তা আমি ঠিক করে আন্দাজ করতে পারছি না। অকস্মাৎ আমার পেছন থেকে একটা অদ্ভুত ভারী গলা ভেসে আসে, ‘ তোর বাচ্চাটা আমায় দিবি?’ আমার মাথাটা হঠাৎ ব্যাথায় ছটফট করে উঠে। পেছন ফিরে তাকানোর আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে কি হয়েছিল মনে নেই। সকালে যখন ঘুম ভাঙে তখন দেখি তুষার আমার পাশেই বসে আছে। স্বামীকে রাতের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল, ‘আমি তো ওয়াশরুমের জন্য উঠেছিলাম। হঠাৎ দেখলাম তুমি পাশে নেই। তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে যখন নিচে নেমে আসি তখন দেখতে পাই তুমি ড্রয়িং রুমের মেঝেতে পড়ে আছো। তারপর আর কি?তোমাকে কোলে তুলে রুমে এনে শোয়ালাম। কি হয়েছিল বলো তো?’ কিছুই মনে পড়ছিল না। তাই উত্তর দিতে চেয়েও তুষারকে কিছু বলতে পারলাম না। তবে কানে এখনো একটা কথাই বাজছে, ‘তোর বাচ্চাটা আমায় দিবি?’ —--- আজ এই বাড়িতে আমার একমাস পূর্ণ হলো।এই এক মাসে আমার সঙ্গে তেমন কিছুই ঘটে নি। সব স্বাভাবিক ছিল। কাল সকালে তুষার খাগড়াছড়ি যাবে। তিন দিনের একটা মিশনে। এ ক'দিন সে অনেক জায়গায় একটা মেয়ে মানুষ খুঁজেছে ২৪ ঘন্টা আমার তদারকি করার জন্য। আমার সঙ্গে থাকার জন্য। কিন্তু এটা তো আর ঢাকা শহর না যে মানুষ চাইলাম আর মেয়ে পেয়ে গেলাম। তুষার আমাকে একা রেখে কিছুতেই যেতে চাইছিল না। কিন্তু কি আর করার? সরকারি চাকরি বলে কথা! বিকেলে বাহিরে থেকে কাপড় আনতে গিয়ে দেখি কোথা থেকে যেন নিপা ভাবী ব্যাগ-পত্তর নিয়ে বাড়ি ডুকছে। সঙ্গে ছোট একটা মেয়ে,একজন পুরুষ আর দু'জন বৃদ্ধা-বৃদ্ধও ছিল। আমি ভাবী বলে হাঁক ছাড়তেই সে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। ‘ভাবী কোথা থেকে আসছেন?এত সব নিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন?যাক এক মাস পর আপনার পরিবারের সদস্যদের দেখা মিলল।বাচ্চা গুলো তো বিকেলে বাহিরেও আসে না।’ নিপা ভাবীর কপালে ভাঁজ পড়লো এবার। সে আমার বাড়ির দিকে একবার তাকালো তারপর বলল, ‘আপনি আমাকে কি করে চিনেন?আমার নাম কি করে জানলেন?আর আপনাকে তো আমি ঠিক চিনতে পারলাম না?কে আপনি?’ নিপা ভাবীর কথায় আমি পুরোই কিংকর্তব্যবিমুঢ়। এসব কি বলছে উনি?এখানে আসার পর থেকেই উনার সাথে আমার কত ভাব। আর আজকে বলছে আমাকে নাকি সে চিনে না। আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবো তার আগেই ভাবীর সঙ্গে থাকা পুরুষটি তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল, ‘আতিয়া জলদি বাড়ির চাবিটা দাও। একমাসে না জানি ঘরের কি হাল হয়েছে। এই মণি তোর মায়ের থেকে চাবিটা নিয়ে আয় তো।’ ছোট্ট মেয়েটা দৌড়ে নিপা ভাবীর কাছে এলো চাবি নেওয়ার জন্য। নিপা ভাবী মেয়েটিকে বলল, ‘যাও আব্বুর কাছে। আম্মু আসছি।’ তারপর আমার দিকে একবার তাকিয়ে বলল, ‘পরে কথা হবে।’ ভাবী আমার জবাবের জন্য অপেক্ষা না করেই চলে গেল। সে চলে যেতেই লোকটি মৃদু কন্ঠে তাকে জিজ্ঞেস করল,কে ওই মহিলা?এই বাড়িতে উঠছে বুঝি? সবাই আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকালো। আমার বেশ অস্তিত্ব লাগছিল। তাই এক মুহুর্ত দেরি না করে আমি কাপড় নিয়ে বাড়ির ভেতর চলে এলাম। তুষার বাড়িতেই ছিল। তাকে আমি সব খুলে বললাম। তার নিজের মাথাও কাজ করছে না। সে আর আমাকে কি বুঝাবে? এবার মাথায় আমার আরেকটা প্রশ্ন ভোঁ ভোঁ করছে, নিপা ভাবী আমাকে চিনতে পারলো না কেন?নাকি ইচ্ছে করেই কোন কারন বসত না চেনার ভান করেছে সে? আর ভাবীর তো কোন বাচ্চা নেই । তবে ভাবীর কথার ধরন শুনে কেন মনে হচ্ছিলো ছোট্ট মেয়েটি তার নিজেরই। আর ওই লোকটি তাকে আতিয়া বলেই বা কেন ডাকল?তার নাম তো নিপা। — সন্ধ্যায় হাসের মাংস আর চালের রুটি করেছি। শীতকালীন সময়ে এটা তুষারের পছন্দের খাবার। স্বামীটা আমার কাল চলে যাবে। না জানি এই তিনদিন কি না কি খায়। তাই যতটুকু পেরেছি,ততটুকুই করেছি। কাজ শেষে যখন এক বাটি মাংস আর রুটি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য রান্না ঘরের লাইটটা বন্ধ করে বেরিয়ে আসলাম তখনি নাকে একটা পঁচা দুর্গন্ধ এসে ধাক্কা খেল। বমি চলে আসার উপক্রম। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে শব্দ এলো,মনে হলো কেউ পাতিলের ঢাকনা সরিয়েছে। আরেকটু খেয়াল করতেই এবার আরো অদ্ভুত এক শব্দ কানে বাজলো,মনে হলো কে যেন খপখপ করে সব ছিড়েখুঁড়ে খাচ্ছে। আমি দ্রুত টেবিলে মাংসের বাটিটা রেখে রান্না ঘরে ডুকলাম। লাইট অন করতেই দেখি সেখানে কিছুই নেই। সব স্বাভাবিক।নেই কোনো শব্দ, সেই কোলাহল। ধ্যাত আজ-কাল হরর মুভি একটু বেশিই দেখা হচ্ছে। তারই ইফেক্ট এসব। সেদিন রাতে আমি সবচেয়ে বেশি অবাক হই। যখন রাতে খাবারের সময় রান্নাঘরে গিয়ে দেখি মাংসের পাতিলে এক টুকরো মাংসও নেই। পাতিলের তলায় শুধুমাত্র পড়ে আছে ঝোল। পর পর কেমন যেন সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। এখন নিজের ভেতরেও খানিকটা ভয় কাজ করা শুরু করে। সব সময় তো সবকিছু একজন মানুষের ভ্রম হওয়া সম্ভব নয়। তুষার কে বিষয়টি জানানোর পর যে বলে, ‘আজ তো রাত হয়ে গেছে। সকালে আমাকে আবার খাগড়াছড়িও যেতে হবে। তিনদিন একটু কষ্ট করো। যদি দেখো তিনদিনে সব স্বাভাবিক আছে তাহলে তো ভালোই। তা না হলে আমি বাড়ি ফিরেই হুজুরকে এনে একটা মিলাদের ব্যবস্থা করবো।’ আমিও তাতে রাজি হলাম। তবুও তুষারের আমাকে ফেলে যেতে বেশ চিন্তা হচ্ছিলো। তাই সে আমার ছোট ননদকে কল করে দুই-একদিনের ভেতর এখানে আসতে বলে। সঙ্গে আমার শাশুড়ীও আসবে। শুনে একটু খুশী হলাম। বাড়িতে একা থাকার চেয়ে তাদের এখানে চলে আসাই ভালো। এমনিতেও বছর শেষেই আমার শশুর-শাশুরি আর ননদ-দেবরের এখানে চলে আসার কথা। কিন্তু সামনেই দেবরের এক্সাম আছে তাই সবাই ঠিক করেছে একেবারে বছরটা শেষ করেই তারা এখানে শিফট হবে। - পরদিন আমার দিনটা খুব একটা ভালো যায় না। তুষারের জন্য অনেক মন খারাপ হচ্ছিলো। অদ্ভুত একটা ভয়ও মনের মধ্যে বাসা বেঁধে বসে ছিলো। সেদিন রাত দেড়টায় হঠাৎ বিকট এক শব্দে আচমকা ঘুম ভেঙে যায় আমার। রাত ভালোই হয়েছে। আমার আবার একটা বোধ অভ্যাস আছে। একবার ঘুম ভাঙলে সহজে ঘুম আসে না। তুষারটা চলে গেছে বিধায় মনটা কেমন কেমন জানি করছে। সারাটা দিনও আজকে কেমন যেন একগুয়ে কেটেছে। ফোনটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ ফেসবুকে স্ট্রোলিং করতে থাকি। হঠাৎ তুষারের কল আসে। প্রথমে একটু অবাক হই। এত রাতে কল করেছে?পরে ভাবলাম সারাদিন কাজ করে এখন হয়তো রাত জেগে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হচ্ছে। ফোন রিসেভ করতেই তুষার একটা কথাই বলল,সব ঠিক আছে? ব্যাস সঙ্গে সঙ্গে লাইনটা কেটে যায়। নেট সমস্যা হয়তো। আমি উঠে বারান্দায় যাই। হঠাৎ দোলনার দিকে তাকাতেই মনে হলো কে যেন দোলনায় পা ঝুলিয়ে বসে গুন গুন করছে। মেয়েলি কন্ঠস্বর। আমার শরীরটা শিউরে উঠে। আয়াতুল কুরসী পড়তে পড়তে বারান্দার দরজা বন্ধ করে রুমে চলে এলাম। তুষারকে বেশ কয়েকটি কল করি, কিন্তু ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। খুব ভয় করছিল আমার। হঠাৎ আননোন নাম্বার থেকে একটা কল আসে,কলটা ধরতেই ওপার থেকে ভেসে আসে একটা অস্পষ্ট কন্ঠ। ভয়েজটা কেটে কেটে আসছিল। ভাবলাম হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে দেখে তুষার অন্য কারো নাম্বার থেকে কল করেছে। নেট সমস্যার কারনে কথা অস্পষ্ট শোনাচ্ছে । একটা কল আসার পর আর কোন কল আসে নি।তাই আমিও আর এহেন বিষয়ে এত মাথা ঘামালাম না। ঘুম আসছে না।এখনো ভয় করছে। বিছানায় এসে দোয়া পড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। হঠাৎ অনুভূত হলো পিঠের ওপর কেমন যেন শীতল নিঃশ্বাস পতন হচ্ছে। ধীরে ধীরে নিঃশ্বাসের শব্দ বাড়তে শুরু করে। মনে হচ্ছে এই তো ঠিক আমার পেছনেই কেও একজন শুয়ে আছে। কিন্তু সেটা তো অসম্ভব বিষয়। বাড়িতে তো এই মুহুর্তে আমি ব্যাতিত কেউ নেই?আমি আয়াতুল্লাহ কুরসী আরো দ্রুত পড়তে শুরু করলাম।যত গুলো দোয়া মাথায় আসছে অনবরত তা পাঠ করছি। কিন্তু নিঃশ্বাসের শীতল বাতাসটা তখনো আমার পিঠে লাগছে। এবার আমি দোয়া পড়তে পড়তে আস্তে আস্তে করে ঘাড় বাঁকিয়ে পেছনে ফেরার চেষ্টা করি। পেছন ফিরতেই আমার চক্ষু চড়কগাছ।মুখ থেকে অস্পষ্ট স্বরে শুধু বেরিয়ে আসে, ‘নিপা ভাবী?’........ ✨সমাপ্ত
    Love
    1
    ·145 Views ·0 Reviews
  • আসলামুআলাইকুম কেমন আছেন সবাই আমি নতুন আজকে জয়েন করছি সবাই সবার পাসে থাকবো ইনশাআল্লাহ #foryou
    আসলামুআলাইকুম ❤️ কেমন আছেন সবাই আমি নতুন আজকে জয়েন করছি সবাই সবার পাসে থাকবো ইনশাআল্লাহ 🥰 #foryou
    Love
    1
    ·95 Views ·0 Reviews
  • "আজকে অফিসে গিয়েছিলাম, তবে মনে হচ্ছে অফিস আমাকে ভুলে গেছে!"
    "আজকে অফিসে গিয়েছিলাম, তবে মনে হচ্ছে অফিস আমাকে ভুলে গেছে!"
    Like
    Love
    3
    ·122 Views ·0 Reviews
  • প্রকৃতি — জীবনের নিঃশব্দ কবিতা

    প্রকৃতি আমাদের চারপাশের এক অলৌকিক সৌন্দর্য, যা প্রতিটি নিঃশ্বাসে জীবনের ছোঁয়া এনে দেয়। গাছের পাতায় ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির কুজন—এই সব কিছু যেন জীবনের এক নিরব ছন্দ।

    আজকের কংক্রিটের এই দুনিয়ায়, আমরা অনেকেই ভুলে যাই প্রকৃতি কতটা দরকারি আমাদের শরীর ও মনের জন্য। কিছুক্ষণ নিরিবিলি সবুজে চোখ রাখা মানে আত্মাকে প্রশান্ত করা। শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস নয়, প্রকৃতিই আমাদের শেখায় ধৈর্য, ভারসাম্য এবং কৃতজ্ঞতা।

    চলো, আমরা প্রকৃতিকে ভালোবাসি। গাছ লাগাই, নদী-নালা রক্ষা করি, প্লাস্টিক কমাই। প্রকৃতি আমাদের যত্ন করে, আমরাও তার বন্ধুর মতো হই।

    প্রকৃতি রক্ষা মানে নিজেকে রক্ষা করা।
    #NatureLover #GreenLife #প্রকৃতি_আমার_ভালোবাসা
    🌿 প্রকৃতি — জীবনের নিঃশব্দ কবিতা 🌿 প্রকৃতি আমাদের চারপাশের এক অলৌকিক সৌন্দর্য, যা প্রতিটি নিঃশ্বাসে জীবনের ছোঁয়া এনে দেয়। গাছের পাতায় ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির কুজন—এই সব কিছু যেন জীবনের এক নিরব ছন্দ। আজকের কংক্রিটের এই দুনিয়ায়, আমরা অনেকেই ভুলে যাই প্রকৃতি কতটা দরকারি আমাদের শরীর ও মনের জন্য। কিছুক্ষণ নিরিবিলি সবুজে চোখ রাখা মানে আত্মাকে প্রশান্ত করা। শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস নয়, প্রকৃতিই আমাদের শেখায় ধৈর্য, ভারসাম্য এবং কৃতজ্ঞতা। চলো, আমরা প্রকৃতিকে ভালোবাসি। গাছ লাগাই, নদী-নালা রক্ষা করি, প্লাস্টিক কমাই। প্রকৃতি আমাদের যত্ন করে, আমরাও তার বন্ধুর মতো হই। 🍃 প্রকৃতি রক্ষা মানে নিজেকে রক্ষা করা। #NatureLover #GreenLife #প্রকৃতি_আমার_ভালোবাসা
    Like
    Love
    6
    1 Comments ·112 Views ·0 Reviews
  • আজকের আকাশ মেঘলা ছায়া,
    বৃষ্টি ঝরে ভেজা মাটির গায়া।
    ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে যায় ধীরে,
    মন ভরে যায় ভালোবাসায় সেরে।
    আজকের আকাশ মেঘলা ছায়া, বৃষ্টি ঝরে ভেজা মাটির গায়া। ☁️ ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে যায় ধীরে, মন ভরে যায় ভালোবাসায় সেরে। 🌧️
    Love
    4
    ·87 Views ·0 Reviews
  • ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের, তখনকার গ্রামের পরিবেশ আজকের মতো ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যেত চারপাশ। আলো-আঁধারির খেলায় পথঘাট হয়ে উঠত আরও রহস্যময়। আবুল কালাম চাচা তখন নতুন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছেন, বয়স বারো।

    সেদিন ছিল একেবারে সাধারণ সন্ধ্যা। মাগরিবের নামাজ শেষে চাচা মসজিদ থেকে ফিরছিলেন মাদ্রাসার দিকে। পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন, কারণ মসজিদ আর মাদ্রাসার দূরত্ব বেশি না, বড়জোর দশ মিনিটের পথ। তবে মাঝখানে পড়ে একটা পুরনো শ্মশানঘাট। দিনের বেলায়ও এলাকাবাসী সেদিকে যেত না, আর সন্ধ্যায় তো কথাই নেই।

    সন্ধ্যার সেই গা ছমছমে সময়ে হঠাৎ শুরু হয় ঝিরঝির বৃষ্টি। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সোঁদা গন্ধ। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় যেন। চাচা তখন শ্মশানঘাটের কাছাকাছি। হঠাৎ তিনি শুনলেন, কোথাও থেকে হুক্কা হুয়া করে এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। শীতল হাওয়ার মাঝে সেই ডাক যেন হৃদয় ছিঁড়ে দিচ্ছে। চাচা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। দেখলেন, অন্ধকারের মধ্যে একটা শেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে, যেন আগুন।

    ভয় পেয়ে যাননি চাচা, কারণ গ্রামে শেয়াল দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াল যখন শেয়ালটা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হুক্কা হুয়া করে ডাকতে থাকল। আরেকটু তাকিয়ে চাচা বুঝলেন, ওটা কোনো সাধারণ শেয়াল নয়। হঠাৎ সে যেন মানুষের মতো দাঁড়াল! এরপর কি মনে করে চাচা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা শুকনো ডালটা তুলে ছুঁড়ে মারলেন তার দিকে। ডাল টি সোজা গিয়ে শেয়ালের কপালে গিয়ে পড়ে,শেয়ালটা চিতকার করে কেঁদে উঠলো মানুষের মতো!
    শেয়ালটা আর একটুও না নড়ে শুধু একটানা তাকিয়ে রইল। তারপর হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। যেন কিছুই ছিল না!

    চাচা মাদ্রাসায় ফিরে এলেন। তখন রাত প্রায় দুইটা। ঘুম আসছিল না, চাচার টয়লেট চাপে। মাদ্রাসার টয়লেট ছিল আলাদা একটি ঝাঁপসা ঘরে, পেছনের দিকে।তাই টয়লেটে গেলেন। সেই সময়ে বৃষ্টি আরও বেড়েছে। ছাউনির টিনে টুপটাপ শব্দ পড়ছে।
    চাচা ঢুকেই টের পান—টয়লেটের ভেতরে কেউ আছে। কিন্তু দরজা তো খালি ছিল!

    টয়লেটে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেন। তারপর হঠাৎই অনুভব করলেন, কেউ যেন পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে তাকালেন, কিছুই নেই। কিন্তু বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেছে।

    কি মনে করে চাচা উপরের দিকে চোখ পড়তেই চাচার দম বন্ধ হয়ে এল। টিনের ওপর দেখা গেল একটা কাটা মাথা। চুলগুলো যেন ঝুলে পড়ে মেঝে পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। লাল চোখে তাকিয়ে আছে সোজা চাচার দিকে। ঠোঁট নড়ছে— "তুই আমাকে আঘাত করেছিলি। শোধ আমি নেবই।" চাচা চিৎকার করে উঠলেন। হুজুর আর ছাত্ররা এসে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করলেন। কিন্তু চাচা তখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন।

    এই ঘটনার পরে চাচা বাড়িতে ফিরে এলেন। পরিবার ভেবেছিল এই দুঃস্বপ্নটা শেষ হয়েছে। কয়েক মাস পর ঠিক হলো চাচার বিয়ে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। মেয়ে দেখা হয়েছে, পছন্দ হয়েছে। বিয়ের দিনটা এলো। গায়ে হলুদের দিন, চাচা একা একা বসে ছিলেন। হঠাৎ একটা চিঠি পেলেন। খাম ছাড়া চিঠি। তাতে লেখা— "শোধ নেওয়া বাকি আছে। ভুলে যাস না।"

    চাচা চুপচাপ রইলেন। কাউকে কিছু বললেন না। বিয়ে হয়ে গেল। বউকে নিয়ে চাচা ঘরে ঢুকলেন। সবাই হাসিখুশি, বাসর ঘর সাজানো।

    চাচা ঘরে ঢোকার পর, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলেন। বাসর ঘরে শুধু হালকা মিঠে আলো, মেঝেতে গন্ধ ছড়ানো ফুলের পাপড়ি, বাতাসে আতরের গন্ধ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আবুল কালাম চাচার মনটা অস্থির হয়ে উঠলো। যেন ঘরের ভেতরে একটা অদৃশ্য ভারী কিছু টানটান করে রেখেছে বাতাসকে।

    চাচা ধীরে ধীরে বিছানার দিকে এগোলেন। নববধূ মুখ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে, নিঃশব্দ। চাচা একটু ভয়ভয় ভাব নিয়ে বললেন, “তুমি কি… ঠিক আছো?”

    কোনো সাড়া নেই। চাচা হাত বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ঘোমটা তুললেন।

    ঘোমটার নিচে যে মুখটা উঠে এলো, সেটা কোনো মানুষের না। সেটা ছিল এক বিভৎস বিকৃত মুখ—চোখদুটো লাল টকটকে, যেন রক্তে ডোবা, চুল এলোমেলো, মুখের চামড়া যেন ছেঁড়া ছেঁড়া। অনেক টা শেয়ালের মতো, সেই মুখটা কাদছে। ঠাণ্ডা একটা মায়াবী কান্না!

    চাচা পেছনে সরে যেতে চাইলেন, কিন্তু পারলেন না। যেন পা দুটো জমে গেছে মেঝেতে। সেই 'বউ' মুখ তুলে বলল, “চিনলি না তো আমাকে? তুই সেই রাতে লাঠি ছুঁড়েছিলি… আমাকে, আমি প্রতিশোধ নেব। আজ তোর বিচার হবে।”

    চাচার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই রাতের দৃশ্য—ঝিরঝির বৃষ্টি, হুক্কা হুয়া করে শেয়ালের ডাক..
    #ghost #Bhoot
    ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের, তখনকার গ্রামের পরিবেশ আজকের মতো ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যেত চারপাশ। আলো-আঁধারির খেলায় পথঘাট হয়ে উঠত আরও রহস্যময়। আবুল কালাম চাচা তখন নতুন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছেন, বয়স বারো। সেদিন ছিল একেবারে সাধারণ সন্ধ্যা। মাগরিবের নামাজ শেষে চাচা মসজিদ থেকে ফিরছিলেন মাদ্রাসার দিকে। পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন, কারণ মসজিদ আর মাদ্রাসার দূরত্ব বেশি না, বড়জোর দশ মিনিটের পথ। তবে মাঝখানে পড়ে একটা পুরনো শ্মশানঘাট। দিনের বেলায়ও এলাকাবাসী সেদিকে যেত না, আর সন্ধ্যায় তো কথাই নেই। সন্ধ্যার সেই গা ছমছমে সময়ে হঠাৎ শুরু হয় ঝিরঝির বৃষ্টি। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সোঁদা গন্ধ। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় যেন। চাচা তখন শ্মশানঘাটের কাছাকাছি। হঠাৎ তিনি শুনলেন, কোথাও থেকে হুক্কা হুয়া করে এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। শীতল হাওয়ার মাঝে সেই ডাক যেন হৃদয় ছিঁড়ে দিচ্ছে। চাচা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। দেখলেন, অন্ধকারের মধ্যে একটা শেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে, যেন আগুন। ভয় পেয়ে যাননি চাচা, কারণ গ্রামে শেয়াল দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াল যখন শেয়ালটা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হুক্কা হুয়া করে ডাকতে থাকল। আরেকটু তাকিয়ে চাচা বুঝলেন, ওটা কোনো সাধারণ শেয়াল নয়। হঠাৎ সে যেন মানুষের মতো দাঁড়াল! এরপর কি মনে করে চাচা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা শুকনো ডালটা তুলে ছুঁড়ে মারলেন তার দিকে। ডাল টি সোজা গিয়ে শেয়ালের কপালে গিয়ে পড়ে,শেয়ালটা চিতকার করে কেঁদে উঠলো মানুষের মতো! শেয়ালটা আর একটুও না নড়ে শুধু একটানা তাকিয়ে রইল। তারপর হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। যেন কিছুই ছিল না! চাচা মাদ্রাসায় ফিরে এলেন। তখন রাত প্রায় দুইটা। ঘুম আসছিল না, চাচার টয়লেট চাপে। মাদ্রাসার টয়লেট ছিল আলাদা একটি ঝাঁপসা ঘরে, পেছনের দিকে।তাই টয়লেটে গেলেন। সেই সময়ে বৃষ্টি আরও বেড়েছে। ছাউনির টিনে টুপটাপ শব্দ পড়ছে। চাচা ঢুকেই টের পান—টয়লেটের ভেতরে কেউ আছে। কিন্তু দরজা তো খালি ছিল! টয়লেটে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেন। তারপর হঠাৎই অনুভব করলেন, কেউ যেন পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে তাকালেন, কিছুই নেই। কিন্তু বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেছে। কি মনে করে চাচা উপরের দিকে চোখ পড়তেই চাচার দম বন্ধ হয়ে এল। টিনের ওপর দেখা গেল একটা কাটা মাথা। চুলগুলো যেন ঝুলে পড়ে মেঝে পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। লাল চোখে তাকিয়ে আছে সোজা চাচার দিকে। ঠোঁট নড়ছে— "তুই আমাকে আঘাত করেছিলি। শোধ আমি নেবই।" চাচা চিৎকার করে উঠলেন। হুজুর আর ছাত্ররা এসে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করলেন। কিন্তু চাচা তখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন। এই ঘটনার পরে চাচা বাড়িতে ফিরে এলেন। পরিবার ভেবেছিল এই দুঃস্বপ্নটা শেষ হয়েছে। কয়েক মাস পর ঠিক হলো চাচার বিয়ে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। মেয়ে দেখা হয়েছে, পছন্দ হয়েছে। বিয়ের দিনটা এলো। গায়ে হলুদের দিন, চাচা একা একা বসে ছিলেন। হঠাৎ একটা চিঠি পেলেন। খাম ছাড়া চিঠি। তাতে লেখা— "শোধ নেওয়া বাকি আছে। ভুলে যাস না।" চাচা চুপচাপ রইলেন। কাউকে কিছু বললেন না। বিয়ে হয়ে গেল। বউকে নিয়ে চাচা ঘরে ঢুকলেন। সবাই হাসিখুশি, বাসর ঘর সাজানো। চাচা ঘরে ঢোকার পর, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলেন। বাসর ঘরে শুধু হালকা মিঠে আলো, মেঝেতে গন্ধ ছড়ানো ফুলের পাপড়ি, বাতাসে আতরের গন্ধ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আবুল কালাম চাচার মনটা অস্থির হয়ে উঠলো। যেন ঘরের ভেতরে একটা অদৃশ্য ভারী কিছু টানটান করে রেখেছে বাতাসকে। চাচা ধীরে ধীরে বিছানার দিকে এগোলেন। নববধূ মুখ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে, নিঃশব্দ। চাচা একটু ভয়ভয় ভাব নিয়ে বললেন, “তুমি কি… ঠিক আছো?” কোনো সাড়া নেই। চাচা হাত বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ঘোমটা তুললেন। ঘোমটার নিচে যে মুখটা উঠে এলো, সেটা কোনো মানুষের না। সেটা ছিল এক বিভৎস বিকৃত মুখ—চোখদুটো লাল টকটকে, যেন রক্তে ডোবা, চুল এলোমেলো, মুখের চামড়া যেন ছেঁড়া ছেঁড়া। অনেক টা শেয়ালের মতো, সেই মুখটা কাদছে। ঠাণ্ডা একটা মায়াবী কান্না! চাচা পেছনে সরে যেতে চাইলেন, কিন্তু পারলেন না। যেন পা দুটো জমে গেছে মেঝেতে। সেই 'বউ' মুখ তুলে বলল, “চিনলি না তো আমাকে? তুই সেই রাতে লাঠি ছুঁড়েছিলি… আমাকে, আমি প্রতিশোধ নেব। আজ তোর বিচার হবে।” চাচার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই রাতের দৃশ্য—ঝিরঝির বৃষ্টি, হুক্কা হুয়া করে শেয়ালের ডাক.. #ghost #Bhoot
    Like
    Love
    2
    ·178 Views ·0 Reviews
  • বিনোদন মাফিয়া ইউটিউব চ্যানেল ফেসবুক পেজ যারা ফলো করবে তাদের জন্য আজকে একটা বিশেষ উপহার আছে
    বিনোদন মাফিয়া ইউটিউব চ্যানেল ফেসবুক পেজ যারা ফলো করবে তাদের জন্য আজকে একটা বিশেষ উপহার আছে
    Haha
    1
    ·77 Views ·0 Reviews
  • বিনোদন মাফিয়া
    YouTube Facebook
    নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা হয় সবাই গিয়ে ভিডিও গানটা দেখে খুব ধামাকা অফার
    আজকে আমার ভিডিও দেখলে আপনাদের সামনে একটি বিশাল আকর্ষণীয় পুরস্কার আছে
    বিনোদন মাফিয়া YouTube Facebook নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা হয় সবাই গিয়ে ভিডিও গানটা দেখে খুব ধামাকা অফার আজকে আমার ভিডিও দেখলে আপনাদের সামনে একটি বিশাল আকর্ষণীয় পুরস্কার আছে
    Love
    Like
    3
    ·70 Views ·0 Reviews
More Results
Jono Sathi - Bangladeshi Social Media Platform https://jonosathi.com