পিলখানা এবং বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি (R&D)
বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের নাম পিলখানা; যে অধ্যায়ের দ্বারা বাংলাদেশে দীর্ঘ ষোলো বছরের জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদ শক্তপোক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের চক্ষুশূল ছিল আমাদের আর্মড ফোর্সেস; আরো নির্দিষ্ট করে বললে ‛সেনাবাহিনী’; কারন ২৫ এবং ২৬ তারিখের ঘটনায় পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে শহীদ হন ৫৭ সেনাকর্মকর্তা সহ ৭৬ জন।
কিন্তু ২০০৯'এ ভারত এবং তাদের এদেশীয় দোসর আওয়ামীলীগের হিংস্র থাবা কি শুধুই সেনাবাহিনীর উপর ছিল.?
উত্তর হলো ‛না’।
সেনাবাহিনীর ডিসগ্রেস ছিল ভিজিবল কিন্তু ইনভিজবলি আরো একটি বাহিনীর চরম ক্ষতি করেছিল ভারত। সেটা হলো ‛বাংলাদেশ এয়ারফোর্স’। নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি বা রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট সেক্টর।
পাকিস্তান আমলে থেকেই ভারতের মাথা ব্যথার কারন ছিল ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন― দুই ফ্রন্টের এয়ার সুপেয়রিটি। ভারত যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে যেকোনো এক ফ্রন্টের এয়ার পাওয়ারকে রিডিউস করতে।
৬৫'এর ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে যখন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের তেজগাঁও এয়ারবেস থেকে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের চৌদ্দ তম স্কোয়াড্রনের ঝাঁকে ঝাঁকে এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান ৪০০ কিলোমিটার পথ উড়ে গিয়ে ভারতের কালাইকুন্ড এয়ারবেসে স্ট্রাইক করে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে আসলো তখন ভারত বুঝতে পারে ইস্টার্ন ফ্রন্টকে যেকোনো মূল্যে কব্জা করতে হবে।
সেদিনের স্ট্রাইকের নেতৃত্ব দেওয়া স্কোয়াড্রন লিডার সাব্বির হোসাইন সায়েদকে বলা হত ‛ডিফেন্ডার অব ঢাকা', কারন তিনি ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলা থেকে ঢাকাকে রক্ষা করেছিলেন।
এরপর একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষপর্যায়ে ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে ভারত ঢাকার কুর্মিটোলা, মিরপুর, তেজগাঁওয়ে বোম্বিং শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল যেকোনো মূল্যে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান গুলিকে ধ্বংস করা। কারন, এই বিমানগুলোই দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ভারতকে দৌড়ের উপর রেখেছিল। যদি বিমান গুলোকে ধ্বংস করা না যায়, অন্যথায় যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিমান গুলি বাংলাদেশের হাতে চলে যাবে। আর ভারত সবসময়ই চেয়েছিল, এমন একটি মেরুদন্ডহীন স্বাধীন দেশের উত্থান হোক, যাদেরকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
কিন্তু ভারতের সমস্ত ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ৭২' সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে যখন ঢাকার আকাশে আবারও এফ-৮৬ উড়তে শুরু করলো তখন ভারতের মাথায় সত্যিই আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
সেই থেকে ভারত বিভিন্ন সময় নানাভাবে আমাদের বিমান বাহিনীকে দুর্বল করে রাখার ফন্দি এঁটেছে। বিক্ষিপ্তভাবে সফল হলেও তাদের সবচেয়ে বড় সফলতা ছিল ২০০৯ সালে পিলখানা অধ্যায় ঘটিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মেরুদন্ড খ্যাত রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট সেক্টরকে ধ্বংস করে দেওয়া।
আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট কেনো এত গুরুত্বপূর্ণ.? আসুন বলি
R&D বা রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্টকে বলা হয় একটি অর্গানাইজেশনের প্রাণ। তেমনিভাবে ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করা বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি ছিল বিমানবাহিনীর প্রাণ।
নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, বিভিন্ন সূক্ষ্ম বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা ইত্যাদি ছিল আর এন্ড ডি এর প্রধান কাজ।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আর এন্ড ডি এর জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাজেট বরাদ্দ করে কারন একটি রাষ্ট্রের ফরোয়ার্ড মুভের অন্যতম প্রধান অংশীদার হলো আর এন্ড ডি সেক্টর।
ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই...
উত্তর কোরিয়া যখন তাদের নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটি গড়ে তুলছে, তখন পুরো বিশ্বের কেউই এই বিষয়ে আঁচ করতে পারেনি।
একবার কোরিয়ার কোনো এক স্থানে ট্রেনে আগুন ধরে যায়। ট্রেনের বগিগুলো একদম ছাই হয়ে যায়। তখনও পুরো বিশ্ব ঘটনাটিকে এক্সিডেন্ট হিসেবেই সাব্যস্ত করছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই টনক নড়ে মার্কিন আর এন্ড ডি এক্সপার্টদের। তারা জানায়, সাধারণ কোনো এক্সিডেন্টে ট্রেনের বগি গুলো এরকম ছাইভষ্ম হয়ে যাবে না। নিশ্চয়ই ট্রেনের মাঝে হাই এক্সপ্লোসিভ ছিল।
ইউএস আর এন্ড ডি এক্সপার্টরা ইনভেস্টিগেশন শুরু করে এবং জানা যায়, ট্রেনের বগিগুলোতে ইউরেনিয়াম-২৩৫, হাইড্রোজেনের আইসোটোপ, প্লুটোনিয়ামের মত হাই এক্সপ্লোসিভ নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল ছিল। আর এজন্যই ট্রেনের বগি গুলো একদম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এটাই মূলত আর এন্ড ডি'র কাজ। আর এন্ড ডি ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির চেয়েও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা তদন্ত ও উদ্ভাবন করে।
তো যা বলছিলাম....
বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি'র বেশ কয়েকটি সিগনিফিকেন্ট এসিভমেন্ট রয়েছে। যেমন:
1. বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি এক্সপার্টরা মিগ-২৯ এর ইঞ্জিন রিপেয়রের মাধ্যমে ফ্লাইওর্দি করতে পারত
2. তারা দুই বছর যাবৎ গ্রাউন্ডেড থাকা একটি সি-130 ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফটকে (সিরিয়াল নাম্বার- 0754) উড্ডয়নের উপযোগী করে তুলেছিল।
পিলখানা এবং বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি (R&D)
বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের নাম পিলখানা; যে অধ্যায়ের দ্বারা বাংলাদেশে দীর্ঘ ষোলো বছরের জন্য ভারতীয় আধিপত্যবাদ শক্তপোক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের চক্ষুশূল ছিল আমাদের আর্মড ফোর্সেস; আরো নির্দিষ্ট করে বললে ‛সেনাবাহিনী’; কারন ২৫ এবং ২৬ তারিখের ঘটনায় পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে শহীদ হন ৫৭ সেনাকর্মকর্তা সহ ৭৬ জন।
কিন্তু ২০০৯'এ ভারত এবং তাদের এদেশীয় দোসর আওয়ামীলীগের হিংস্র থাবা কি শুধুই সেনাবাহিনীর উপর ছিল.?
উত্তর হলো ‛না’।
সেনাবাহিনীর ডিসগ্রেস ছিল ভিজিবল কিন্তু ইনভিজবলি আরো একটি বাহিনীর চরম ক্ষতি করেছিল ভারত। সেটা হলো ‛বাংলাদেশ এয়ারফোর্স’। নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি বা রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট সেক্টর।
পাকিস্তান আমলে থেকেই ভারতের মাথা ব্যথার কারন ছিল ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন― দুই ফ্রন্টের এয়ার সুপেয়রিটি। ভারত যথাসম্ভব চেষ্টা করেছে যেকোনো এক ফ্রন্টের এয়ার পাওয়ারকে রিডিউস করতে।
৬৫'এর ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে যখন পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের তেজগাঁও এয়ারবেস থেকে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের চৌদ্দ তম স্কোয়াড্রনের ঝাঁকে ঝাঁকে এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান ৪০০ কিলোমিটার পথ উড়ে গিয়ে ভারতের কালাইকুন্ড এয়ারবেসে স্ট্রাইক করে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে আসলো তখন ভারত বুঝতে পারে ইস্টার্ন ফ্রন্টকে যেকোনো মূল্যে কব্জা করতে হবে।
সেদিনের স্ট্রাইকের নেতৃত্ব দেওয়া স্কোয়াড্রন লিডার সাব্বির হোসাইন সায়েদকে বলা হত ‛ডিফেন্ডার অব ঢাকা', কারন তিনি ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলা থেকে ঢাকাকে রক্ষা করেছিলেন।
এরপর একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষপর্যায়ে ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে ভারত ঢাকার কুর্মিটোলা, মিরপুর, তেজগাঁওয়ে বোম্বিং শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল যেকোনো মূল্যে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান গুলিকে ধ্বংস করা। কারন, এই বিমানগুলোই দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ভারতকে দৌড়ের উপর রেখেছিল। যদি বিমান গুলোকে ধ্বংস করা না যায়, অন্যথায় যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিমান গুলি বাংলাদেশের হাতে চলে যাবে। আর ভারত সবসময়ই চেয়েছিল, এমন একটি মেরুদন্ডহীন স্বাধীন দেশের উত্থান হোক, যাদেরকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
কিন্তু ভারতের সমস্ত ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ৭২' সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে যখন ঢাকার আকাশে আবারও এফ-৮৬ উড়তে শুরু করলো তখন ভারতের মাথায় সত্যিই আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
সেই থেকে ভারত বিভিন্ন সময় নানাভাবে আমাদের বিমান বাহিনীকে দুর্বল করে রাখার ফন্দি এঁটেছে। বিক্ষিপ্তভাবে সফল হলেও তাদের সবচেয়ে বড় সফলতা ছিল ২০০৯ সালে পিলখানা অধ্যায় ঘটিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মেরুদন্ড খ্যাত রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট সেক্টরকে ধ্বংস করে দেওয়া।
আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট কেনো এত গুরুত্বপূর্ণ.? আসুন বলি
R&D বা রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্টকে বলা হয় একটি অর্গানাইজেশনের প্রাণ। তেমনিভাবে ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করা বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি ছিল বিমানবাহিনীর প্রাণ।
নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, বিভিন্ন সূক্ষ্ম বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা ইত্যাদি ছিল আর এন্ড ডি এর প্রধান কাজ।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আর এন্ড ডি এর জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাজেট বরাদ্দ করে কারন একটি রাষ্ট্রের ফরোয়ার্ড মুভের অন্যতম প্রধান অংশীদার হলো আর এন্ড ডি সেক্টর।
ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই...
উত্তর কোরিয়া যখন তাদের নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটি গড়ে তুলছে, তখন পুরো বিশ্বের কেউই এই বিষয়ে আঁচ করতে পারেনি।
একবার কোরিয়ার কোনো এক স্থানে ট্রেনে আগুন ধরে যায়। ট্রেনের বগিগুলো একদম ছাই হয়ে যায়। তখনও পুরো বিশ্ব ঘটনাটিকে এক্সিডেন্ট হিসেবেই সাব্যস্ত করছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই টনক নড়ে মার্কিন আর এন্ড ডি এক্সপার্টদের। তারা জানায়, সাধারণ কোনো এক্সিডেন্টে ট্রেনের বগি গুলো এরকম ছাইভষ্ম হয়ে যাবে না। নিশ্চয়ই ট্রেনের মাঝে হাই এক্সপ্লোসিভ ছিল।
ইউএস আর এন্ড ডি এক্সপার্টরা ইনভেস্টিগেশন শুরু করে এবং জানা যায়, ট্রেনের বগিগুলোতে ইউরেনিয়াম-২৩৫, হাইড্রোজেনের আইসোটোপ, প্লুটোনিয়ামের মত হাই এক্সপ্লোসিভ নিউক্লিয়ার ম্যাটেরিয়াল ছিল। আর এজন্যই ট্রেনের বগি গুলো একদম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এটাই মূলত আর এন্ড ডি'র কাজ। আর এন্ড ডি ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির চেয়েও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা তদন্ত ও উদ্ভাবন করে।
তো যা বলছিলাম....
বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি'র বেশ কয়েকটি সিগনিফিকেন্ট এসিভমেন্ট রয়েছে। যেমন:
1. বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের আর এন্ড ডি এক্সপার্টরা মিগ-২৯ এর ইঞ্জিন রিপেয়রের মাধ্যমে ফ্লাইওর্দি করতে পারত
2. তারা দুই বছর যাবৎ গ্রাউন্ডেড থাকা একটি সি-130 ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফটকে (সিরিয়াল নাম্বার- 0754) উড্ডয়নের উপযোগী করে তুলেছিল।