Upgrade to Pro

  • হে আল্লাহ! কষ্ট পেলে আমি কাঁদি, এর মানে এই নয় যে তোমার ফয়সালায় আমি অসন্তুষ্ট। বরং আমি তো কাঁদি তোমার স্নেহ পেতে, তোমার সাহায্য পেতে।

    হে আল্লাহ! কষ্ট পেলে আমি কাঁদি, এর মানে এই নয় যে তোমার ফয়সালায় আমি অসন্তুষ্ট। বরং আমি তো কাঁদি তোমার স্নেহ পেতে, তোমার সাহায্য পেতে।
    Love
    1
    ·57 Views ·0 Reviews
  • #jonosathi #viral #foryou #trending #vairal
    বেশ কিছুক্ষণ ঘরে এলোমেলো পায়চারি করার পর ভেতরের অস্থিরতাটা যেন একটু লাগাম দিতে পারলো রথীন। অস্থিরতাটা অনুতাপকেন্দ্রিক মোটেই নয়। কারণ, এ বাড়িতে প্রথমবার হলেও এ জীবনে তার এসব নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের ভীতিটা অন্য কোনো জায়গায়।
    #jonosathi #viral #foryou #trending #vairal বেশ কিছুক্ষণ ঘরে এলোমেলো পায়চারি করার পর ভেতরের অস্থিরতাটা যেন একটু লাগাম দিতে পারলো রথীন। অস্থিরতাটা অনুতাপকেন্দ্রিক মোটেই নয়। কারণ, এ বাড়িতে প্রথমবার হলেও এ জীবনে তার এসব নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের ভীতিটা অন্য কোনো জায়গায়।
    Love
    7
    1 Comments ·119 Views ·0 Reviews
  • (এক)

    শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল।

    শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল।

    তারপর শুভকে ডাকল,শোন।

    শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস?

    শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে?

    শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে।

    শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে?

    আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়।



    ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে?

    ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর!

    ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে?

    ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে।



    শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি?

    ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি।

    ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি।

    ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি।



    (দুই)

    শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল।

    বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে।

    শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না।

    তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না।

    শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না।

    তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না।

    এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল।

    শক্তি মনে মনে অল্প হাসল।

    তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল।

    বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে।

    এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে।

    চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে।

    একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে।

    কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা।

    শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে।

    তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না।

    সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল।

    প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে।

    তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে।

    তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল।

    সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে।

    পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল।

    সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই।

    ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি।

    নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে।

    সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে।

    হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল।

    যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল।

    মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল।

    আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে।

    ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল।

    শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে।



    (তিন)

    দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল।

    প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল।

    শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো?

    লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন?

    ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না।

    ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না।

    তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য।

    তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী?



    লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে।

    তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই।

    আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে।

    কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

    রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক।

    ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না।

    মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়।

    কেউ কানে তুললেন না।

    তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব?

    তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল।

    মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব।

    তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম।

    বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর!

    কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি।

    তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে।

    এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার।

    কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া?

    আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না।



    (চার)

    কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল।

    শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে!

    তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন।

    জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন।

    ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই।

    শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে।

    বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন।

    শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে?

    শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম।

    তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন।

    সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়।

    তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন।

    -----সমাপ্ত----


    (এক) শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল। শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল। তারপর শুভকে ডাকল,শোন। শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস? শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে? শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে। শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে? আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়। ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে? ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর! ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে? ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে। শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি? ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি। ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি। ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি। (দুই) শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল। বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে। শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না। তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না। শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না। তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না। এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল। শক্তি মনে মনে অল্প হাসল। তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল। বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে। এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে। চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে। একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে। কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা। শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে। তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না। সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল। প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে। তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে। তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল। সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে। পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল। সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই। ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি। নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে। সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে। হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল। যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল। মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল। আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে। ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল। শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে। (তিন) দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল। প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল। শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো? লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন? ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না। ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না। তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য। তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী? লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে। তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই। আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে। কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক। ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না। মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়। কেউ কানে তুললেন না। তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব? তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল। মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব। তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম। বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর! কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি। তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে। এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার। কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া? আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না। (চার) কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল। শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে! তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন। জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই। শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে। বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন। শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে? শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম। তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন। সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়। তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন। -----সমাপ্ত----
    Love
    4
    ·95 Views ·0 Reviews
  • ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের, তখনকার গ্রামের পরিবেশ আজকের মতো ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যেত চারপাশ। আলো-আঁধারির খেলায় পথঘাট হয়ে উঠত আরও রহস্যময়। আবুল কালাম চাচা তখন নতুন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছেন, বয়স বারো।

    সেদিন ছিল একেবারে সাধারণ সন্ধ্যা। মাগরিবের নামাজ শেষে চাচা মসজিদ থেকে ফিরছিলেন মাদ্রাসার দিকে। পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন, কারণ মসজিদ আর মাদ্রাসার দূরত্ব বেশি না, বড়জোর দশ মিনিটের পথ। তবে মাঝখানে পড়ে একটা পুরনো শ্মশানঘাট। দিনের বেলায়ও এলাকাবাসী সেদিকে যেত না, আর সন্ধ্যায় তো কথাই নেই।

    সন্ধ্যার সেই গা ছমছমে সময়ে হঠাৎ শুরু হয় ঝিরঝির বৃষ্টি। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সোঁদা গন্ধ। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় যেন। চাচা তখন শ্মশানঘাটের কাছাকাছি। হঠাৎ তিনি শুনলেন, কোথাও থেকে হুক্কা হুয়া করে এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। শীতল হাওয়ার মাঝে সেই ডাক যেন হৃদয় ছিঁড়ে দিচ্ছে। চাচা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। দেখলেন, অন্ধকারের মধ্যে একটা শেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে, যেন আগুন।

    ভয় পেয়ে যাননি চাচা, কারণ গ্রামে শেয়াল দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াল যখন শেয়ালটা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হুক্কা হুয়া করে ডাকতে থাকল। আরেকটু তাকিয়ে চাচা বুঝলেন, ওটা কোনো সাধারণ শেয়াল নয়। হঠাৎ সে যেন মানুষের মতো দাঁড়াল! এরপর কি মনে করে চাচা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা শুকনো ডালটা তুলে ছুঁড়ে মারলেন তার দিকে। ডাল টি সোজা গিয়ে শেয়ালের কপালে গিয়ে পড়ে,শেয়ালটা চিতকার করে কেঁদে উঠলো মানুষের মতো!
    শেয়ালটা আর একটুও না নড়ে শুধু একটানা তাকিয়ে রইল। তারপর হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। যেন কিছুই ছিল না!

    চাচা মাদ্রাসায় ফিরে এলেন। তখন রাত প্রায় দুইটা। ঘুম আসছিল না, চাচার টয়লেট চাপে। মাদ্রাসার টয়লেট ছিল আলাদা একটি ঝাঁপসা ঘরে, পেছনের দিকে।তাই টয়লেটে গেলেন। সেই সময়ে বৃষ্টি আরও বেড়েছে। ছাউনির টিনে টুপটাপ শব্দ পড়ছে।
    চাচা ঢুকেই টের পান—টয়লেটের ভেতরে কেউ আছে। কিন্তু দরজা তো খালি ছিল!

    টয়লেটে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেন। তারপর হঠাৎই অনুভব করলেন, কেউ যেন পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে তাকালেন, কিছুই নেই। কিন্তু বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেছে।

    কি মনে করে চাচা উপরের দিকে চোখ পড়তেই চাচার দম বন্ধ হয়ে এল। টিনের ওপর দেখা গেল একটা কাটা মাথা। চুলগুলো যেন ঝুলে পড়ে মেঝে পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। লাল চোখে তাকিয়ে আছে সোজা চাচার দিকে। ঠোঁট নড়ছে— "তুই আমাকে আঘাত করেছিলি। শোধ আমি নেবই।" চাচা চিৎকার করে উঠলেন। হুজুর আর ছাত্ররা এসে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করলেন। কিন্তু চাচা তখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন।

    এই ঘটনার পরে চাচা বাড়িতে ফিরে এলেন। পরিবার ভেবেছিল এই দুঃস্বপ্নটা শেষ হয়েছে। কয়েক মাস পর ঠিক হলো চাচার বিয়ে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। মেয়ে দেখা হয়েছে, পছন্দ হয়েছে। বিয়ের দিনটা এলো। গায়ে হলুদের দিন, চাচা একা একা বসে ছিলেন। হঠাৎ একটা চিঠি পেলেন। খাম ছাড়া চিঠি। তাতে লেখা— "শোধ নেওয়া বাকি আছে। ভুলে যাস না।"

    চাচা চুপচাপ রইলেন। কাউকে কিছু বললেন না। বিয়ে হয়ে গেল। বউকে নিয়ে চাচা ঘরে ঢুকলেন। সবাই হাসিখুশি, বাসর ঘর সাজানো।

    চাচা ঘরে ঢোকার পর, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলেন। বাসর ঘরে শুধু হালকা মিঠে আলো, মেঝেতে গন্ধ ছড়ানো ফুলের পাপড়ি, বাতাসে আতরের গন্ধ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আবুল কালাম চাচার মনটা অস্থির হয়ে উঠলো। যেন ঘরের ভেতরে একটা অদৃশ্য ভারী কিছু টানটান করে রেখেছে বাতাসকে।

    চাচা ধীরে ধীরে বিছানার দিকে এগোলেন। নববধূ মুখ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে, নিঃশব্দ। চাচা একটু ভয়ভয় ভাব নিয়ে বললেন, “তুমি কি… ঠিক আছো?”

    কোনো সাড়া নেই। চাচা হাত বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ঘোমটা তুললেন।

    ঘোমটার নিচে যে মুখটা উঠে এলো, সেটা কোনো মানুষের না। সেটা ছিল এক বিভৎস বিকৃত মুখ—চোখদুটো লাল টকটকে, যেন রক্তে ডোবা, চুল এলোমেলো, মুখের চামড়া যেন ছেঁড়া ছেঁড়া। অনেক টা শেয়ালের মতো, সেই মুখটা কাদছে। ঠাণ্ডা একটা মায়াবী কান্না!

    চাচা পেছনে সরে যেতে চাইলেন, কিন্তু পারলেন না। যেন পা দুটো জমে গেছে মেঝেতে। সেই 'বউ' মুখ তুলে বলল, “চিনলি না তো আমাকে? তুই সেই রাতে লাঠি ছুঁড়েছিলি… আমাকে, আমি প্রতিশোধ নেব। আজ তোর বিচার হবে।”

    চাচার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই রাতের দৃশ্য—ঝিরঝির বৃষ্টি, হুক্কা হুয়া করে শেয়ালের ডাক..
    #ghost #Bhoot
    ঘটনাটা আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের, তখনকার গ্রামের পরিবেশ আজকের মতো ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যেত চারপাশ। আলো-আঁধারির খেলায় পথঘাট হয়ে উঠত আরও রহস্যময়। আবুল কালাম চাচা তখন নতুন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছেন, বয়স বারো। সেদিন ছিল একেবারে সাধারণ সন্ধ্যা। মাগরিবের নামাজ শেষে চাচা মসজিদ থেকে ফিরছিলেন মাদ্রাসার দিকে। পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন, কারণ মসজিদ আর মাদ্রাসার দূরত্ব বেশি না, বড়জোর দশ মিনিটের পথ। তবে মাঝখানে পড়ে একটা পুরনো শ্মশানঘাট। দিনের বেলায়ও এলাকাবাসী সেদিকে যেত না, আর সন্ধ্যায় তো কথাই নেই। সন্ধ্যার সেই গা ছমছমে সময়ে হঠাৎ শুরু হয় ঝিরঝির বৃষ্টি। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সোঁদা গন্ধ। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় যেন। চাচা তখন শ্মশানঘাটের কাছাকাছি। হঠাৎ তিনি শুনলেন, কোথাও থেকে হুক্কা হুয়া করে এক অদ্ভুত শব্দ ভেসে আসছে। শীতল হাওয়ার মাঝে সেই ডাক যেন হৃদয় ছিঁড়ে দিচ্ছে। চাচা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন। দেখলেন, অন্ধকারের মধ্যে একটা শেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে, যেন আগুন। ভয় পেয়ে যাননি চাচা, কারণ গ্রামে শেয়াল দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াল যখন শেয়ালটা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে হুক্কা হুয়া করে ডাকতে থাকল। আরেকটু তাকিয়ে চাচা বুঝলেন, ওটা কোনো সাধারণ শেয়াল নয়। হঠাৎ সে যেন মানুষের মতো দাঁড়াল! এরপর কি মনে করে চাচা রাস্তার পাশে পড়ে থাকা শুকনো ডালটা তুলে ছুঁড়ে মারলেন তার দিকে। ডাল টি সোজা গিয়ে শেয়ালের কপালে গিয়ে পড়ে,শেয়ালটা চিতকার করে কেঁদে উঠলো মানুষের মতো! শেয়ালটা আর একটুও না নড়ে শুধু একটানা তাকিয়ে রইল। তারপর হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। যেন কিছুই ছিল না! চাচা মাদ্রাসায় ফিরে এলেন। তখন রাত প্রায় দুইটা। ঘুম আসছিল না, চাচার টয়লেট চাপে। মাদ্রাসার টয়লেট ছিল আলাদা একটি ঝাঁপসা ঘরে, পেছনের দিকে।তাই টয়লেটে গেলেন। সেই সময়ে বৃষ্টি আরও বেড়েছে। ছাউনির টিনে টুপটাপ শব্দ পড়ছে। চাচা ঢুকেই টের পান—টয়লেটের ভেতরে কেউ আছে। কিন্তু দরজা তো খালি ছিল! টয়লেটে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেন। তারপর হঠাৎই অনুভব করলেন, কেউ যেন পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে তাকালেন, কিছুই নেই। কিন্তু বাতাস ঠান্ডা হয়ে গেছে। কি মনে করে চাচা উপরের দিকে চোখ পড়তেই চাচার দম বন্ধ হয়ে এল। টিনের ওপর দেখা গেল একটা কাটা মাথা। চুলগুলো যেন ঝুলে পড়ে মেঝে পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। লাল চোখে তাকিয়ে আছে সোজা চাচার দিকে। ঠোঁট নড়ছে— "তুই আমাকে আঘাত করেছিলি। শোধ আমি নেবই।" চাচা চিৎকার করে উঠলেন। হুজুর আর ছাত্ররা এসে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করলেন। কিন্তু চাচা তখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলেন। এই ঘটনার পরে চাচা বাড়িতে ফিরে এলেন। পরিবার ভেবেছিল এই দুঃস্বপ্নটা শেষ হয়েছে। কয়েক মাস পর ঠিক হলো চাচার বিয়ে। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। মেয়ে দেখা হয়েছে, পছন্দ হয়েছে। বিয়ের দিনটা এলো। গায়ে হলুদের দিন, চাচা একা একা বসে ছিলেন। হঠাৎ একটা চিঠি পেলেন। খাম ছাড়া চিঠি। তাতে লেখা— "শোধ নেওয়া বাকি আছে। ভুলে যাস না।" চাচা চুপচাপ রইলেন। কাউকে কিছু বললেন না। বিয়ে হয়ে গেল। বউকে নিয়ে চাচা ঘরে ঢুকলেন। সবাই হাসিখুশি, বাসর ঘর সাজানো। চাচা ঘরে ঢোকার পর, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিলেন। বাসর ঘরে শুধু হালকা মিঠে আলো, মেঝেতে গন্ধ ছড়ানো ফুলের পাপড়ি, বাতাসে আতরের গন্ধ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আবুল কালাম চাচার মনটা অস্থির হয়ে উঠলো। যেন ঘরের ভেতরে একটা অদৃশ্য ভারী কিছু টানটান করে রেখেছে বাতাসকে। চাচা ধীরে ধীরে বিছানার দিকে এগোলেন। নববধূ মুখ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে, নিঃশব্দ। চাচা একটু ভয়ভয় ভাব নিয়ে বললেন, “তুমি কি… ঠিক আছো?” কোনো সাড়া নেই। চাচা হাত বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ঘোমটা তুললেন। ঘোমটার নিচে যে মুখটা উঠে এলো, সেটা কোনো মানুষের না। সেটা ছিল এক বিভৎস বিকৃত মুখ—চোখদুটো লাল টকটকে, যেন রক্তে ডোবা, চুল এলোমেলো, মুখের চামড়া যেন ছেঁড়া ছেঁড়া। অনেক টা শেয়ালের মতো, সেই মুখটা কাদছে। ঠাণ্ডা একটা মায়াবী কান্না! চাচা পেছনে সরে যেতে চাইলেন, কিন্তু পারলেন না। যেন পা দুটো জমে গেছে মেঝেতে। সেই 'বউ' মুখ তুলে বলল, “চিনলি না তো আমাকে? তুই সেই রাতে লাঠি ছুঁড়েছিলি… আমাকে, আমি প্রতিশোধ নেব। আজ তোর বিচার হবে।” চাচার চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই রাতের দৃশ্য—ঝিরঝির বৃষ্টি, হুক্কা হুয়া করে শেয়ালের ডাক.. #ghost #Bhoot
    Like
    Love
    2
    ·161 Views ·0 Reviews
  • মানুষ কখনও পাহাড়ে হোঁচট খায় না, হোঁচট খায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইট পাথরের টুকরাতে। পাহাড়ের মতো বিশাল কিছুর সামনে আমরা সতর্ক থাকি, প্রস্তুত থাকি। কিন্তু ইট পাথরগুলো আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, যে কারণে প্রায়ই আমরা ইট পাথরে পা হড়কে পড়ে যাই।

    জীবনের মতোই, সম্পর্কের পথও এরকমই। একটি সম্পর্ক – সেটা প্রেম, বন্ধুত্ব, দাম্পত্য কিংবা পারিবারিক যাই হোক না কেন – কখনোই বড় কোনো ইস্যুতে ভেঙে পড়ে না। সম্পর্ক ভাঙে ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি, অবহেলা, না বলা কথার ভেতরে জমে থাকা কষ্ট, কিংবা সময়মতো একটুখানি মনোযোগ না দেওয়ার কারণে। এই ছোট ছোট অপ্রাপ্তিগুলো প্রথমে হয়ত তেমন একটা গুরুত্ব পায় না, কিন্তু দিনে দিনে সেগুলো জমতে জমতে পাহাড়ের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে। একটা সময়ে গিয়ে যখন আর বোঝাপড়ার কোনো রাস্তা খোলা থাকে না, বিচ্ছেদ হয়ে ওঠে একমাত্র সমাধান।

    আমরা অনেক সময় ভাবি, “এতো ছোট একটা বিষয়, ও এতটা রাগ করল কেন?” কিন্তু ওই ছোট্ট বিষয়টাই হয়ত তার কাছে বড় ছিল। হয়ত সে প্রতিদিন একটু কথা বলে হালকা হতে চেয়েছিল, হয়ত ও একটুখানি বেশি সময় চেয়েছিল, হয়ত আপনার কোনো একটা বাক্য বা অভিব্যক্তি তার মনে অনেক গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। একটি ক্ষতের জন্য সবসময় বড় অস্ত্র লাগে না, ক্ষত গভীর হয় তখনই যখন অনুভূতির জায়গায় আঘাত লাগে।

    তাই একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে বড় কিছু করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে ছোট ছোট যত্নের, সামান্য খেয়ালের, একটুখানি বোঝাপড়ার।

    সময়মতো একটি মেসেজ, ক্লান্ত দিনে এক কাপ চা, কষ্টে থাকা মানুষটার পাশে নীরব উপস্থিতি, কিংবা কেবল মন দিয়ে তার মনের কথাগুলো শোনা — এই ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলোই আজীবনের বন্ধন গড়ে তোলে।

    সম্পর্ক মানে একে অপরের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতে পারা। তার অনুভূতিকে তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করা। একটুখানি কেয়ার, একটুখানি সম্মান, একটুখানি গুরুত্ব দেওয়া, একটুখানি সহানুভূতি — এগুলোই একটি সম্পর্কের মেরুদণ্ড।

    মনে রাখবেন, সম্পর্ক একটি সুন্দর বাগানের মতো। প্রতিদিন সেখানে একটু করে পানি দিতে হয়, আগাছা পরিষ্কার করতে হয়, খেয়াল রাখতে হয় সূর্যের আলো পড়ছে কিনা। অবহেলা করলেই তা শুকিয়ে যায়। তাই সম্পর্কের ছোট ছোট বিষয়গুলোকে অবহেলা নয়, বরং যত্নে আলিঙ্গন করা উচিত। কেননা, জীবনের সবথেকে বড় সুখ লুকিয়ে থাকে ওই ছোট ছোট খুঁটিনাটিতেই!
    মানুষ কখনও পাহাড়ে হোঁচট খায় না, হোঁচট খায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইট পাথরের টুকরাতে। পাহাড়ের মতো বিশাল কিছুর সামনে আমরা সতর্ক থাকি, প্রস্তুত থাকি। কিন্তু ইট পাথরগুলো আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, যে কারণে প্রায়ই আমরা ইট পাথরে পা হড়কে পড়ে যাই। জীবনের মতোই, সম্পর্কের পথও এরকমই। একটি সম্পর্ক – সেটা প্রেম, বন্ধুত্ব, দাম্পত্য কিংবা পারিবারিক যাই হোক না কেন – কখনোই বড় কোনো ইস্যুতে ভেঙে পড়ে না। সম্পর্ক ভাঙে ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি, অবহেলা, না বলা কথার ভেতরে জমে থাকা কষ্ট, কিংবা সময়মতো একটুখানি মনোযোগ না দেওয়ার কারণে। এই ছোট ছোট অপ্রাপ্তিগুলো প্রথমে হয়ত তেমন একটা গুরুত্ব পায় না, কিন্তু দিনে দিনে সেগুলো জমতে জমতে পাহাড়ের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে। একটা সময়ে গিয়ে যখন আর বোঝাপড়ার কোনো রাস্তা খোলা থাকে না, বিচ্ছেদ হয়ে ওঠে একমাত্র সমাধান। আমরা অনেক সময় ভাবি, “এতো ছোট একটা বিষয়, ও এতটা রাগ করল কেন?” কিন্তু ওই ছোট্ট বিষয়টাই হয়ত তার কাছে বড় ছিল। হয়ত সে প্রতিদিন একটু কথা বলে হালকা হতে চেয়েছিল, হয়ত ও একটুখানি বেশি সময় চেয়েছিল, হয়ত আপনার কোনো একটা বাক্য বা অভিব্যক্তি তার মনে অনেক গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। একটি ক্ষতের জন্য সবসময় বড় অস্ত্র লাগে না, ক্ষত গভীর হয় তখনই যখন অনুভূতির জায়গায় আঘাত লাগে। তাই একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে বড় কিছু করার প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে ছোট ছোট যত্নের, সামান্য খেয়ালের, একটুখানি বোঝাপড়ার। সময়মতো একটি মেসেজ, ক্লান্ত দিনে এক কাপ চা, কষ্টে থাকা মানুষটার পাশে নীরব উপস্থিতি, কিংবা কেবল মন দিয়ে তার মনের কথাগুলো শোনা — এই ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলোই আজীবনের বন্ধন গড়ে তোলে। সম্পর্ক মানে একে অপরের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতে পারা। তার অনুভূতিকে তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করা। একটুখানি কেয়ার, একটুখানি সম্মান, একটুখানি গুরুত্ব দেওয়া, একটুখানি সহানুভূতি — এগুলোই একটি সম্পর্কের মেরুদণ্ড। মনে রাখবেন, সম্পর্ক একটি সুন্দর বাগানের মতো। প্রতিদিন সেখানে একটু করে পানি দিতে হয়, আগাছা পরিষ্কার করতে হয়, খেয়াল রাখতে হয় সূর্যের আলো পড়ছে কিনা। অবহেলা করলেই তা শুকিয়ে যায়। তাই সম্পর্কের ছোট ছোট বিষয়গুলোকে অবহেলা নয়, বরং যত্নে আলিঙ্গন করা উচিত। কেননা, জীবনের সবথেকে বড় সুখ লুকিয়ে থাকে ওই ছোট ছোট খুঁটিনাটিতেই!
    Love
    1
    ·120 Views ·0 Reviews

  • .
    .
    .
    .
    .
    .
    .
    .
    .
    #BMW এর বিবর্তন: প্রকৌশল শ্রেষ্ঠত্বের একটি উত্তরাধিকার
    পরিচিতি
    বায়েরিচে মটোরেন ওয়ার্ক এজি, সাধারণত বিএমডব্লিউ নামে পরিচিত, একটি বিখ্যাত জার্মান অটোমোবাইল এবং মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক যার কর্মক্ষমতা ভিত্তিক যানবাহন এবং আধুনিক প্রযুক্তির জন্য উদযাপিত হয়। 1916 সালে প্রতিষ্ঠিত, বিএমডব্লিউ বিলাসিতা, নতুনত্ব এবং ড্রাইভিং আনন্দ সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছে। এই নিবন্ধটি অটোমোটিভ আড়াআড়ি উপর বিএমডব্লিউ এর ইতিহাস, বিবর্তন, এবং প্রভাব অনুসন্ধান করে।
    ইতিহাস ও ভিত্তি
    বিএমডব্লিউ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মিউনিখ, জার্মানিতে, মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক হিসাবে। কোম্পানির প্রথম পণ্য ছিল বিএমডব্লিউ IIIa বিমান ইঞ্জিন, যা তার কর্মক্ষমতা এবং নির্ভরযোগ্যতার জন্য প্রশংসা অর্জন করেছে। যাইহোক, ১৯১৮ সালে যুদ্ধের শেষে জার্মানিতে বিমানের ইঞ্জিন উত্পাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যার ফলে বিএমডব্লিউ এর প্রস্তাবগুলি বৈচিত্র্যময় করে তোলে। — বারসামা সুস্বাদু বেস্টি খাবার ১এম।
    1923 সালে, বিএমডব্লিউ তার ফোকাস মোটরসাইকেলে স্থানান্তরিত করে, R32 চালু করে, যেখানে একটি বৈপ্লবিক ফ্ল্যাট-টুইন ইঞ্জিন এবং শ্যাফট ড্রাইভ ছিল। এই মোটর সাইকেলটি দুই-চাকার বিভাগে বিএমডব্লিউ এর খ্যাতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল, অবশেষে পরবর্তী বছরগুলিতে বেশ কয়েকটি রেসিং সাফল্যের দিকে পরিচালিত করেছিল।
    অটোমোটিভ যুগ
    ১৯২৮ সালে ফাহরজেউগফ্যাব্রিক আইসেনাচ অর্জনের সঙ্গে বিএমডব্লিউ অটোমোটিভ বাজারে প্রবেশ করে। অস্টিন সেভেন এর উপর ভিত্তি করে প্রথম বিএমডব্লিউ গাড়িটি ছিল বিএমডব্লিউ ৩/১৫। 1930 সালে বিএমডব্লিউ 328 এর প্রবর্তন কোম্পানির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে চিহ্নিত করে, এটি উচ্চ-পারফরম্যান্স স্পোর্টস গাড়ির প্রস্তুতকারক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। ৩২৮ মোটরস্পোর্টে স্বীকৃতি লাভ করে, ১৯৪০ সালে মিল মিগলিয়া জিতেছিল।
    যাইহোক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিএমডব্লিউ এর জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। জার্মান যুদ্ধের প্রচেষ্টা সমর্থন করার জন্য কোম্পানীটি তার উৎপাদন পুনঃনির্দেশিত করতে বাধ্য হয়েছিল, যার ফলে এর কারখানা এবং অবকাঠামো গুরুতর ক্ষতি হয়েছিল। যুদ্ধের পরে, বিএমডব্লিউ তার পরিচয় পুনর্বিন্যাস এবং পুনর্বিন্যাসের কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছিল।
    যুদ্ধ-পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধি
    যুদ্ধ-পরবর্তী বছরে, ব
    🖤🥀🍁 . . . . . . . . . #BMW এর বিবর্তন: প্রকৌশল শ্রেষ্ঠত্বের একটি উত্তরাধিকার পরিচিতি বায়েরিচে মটোরেন ওয়ার্ক এজি, সাধারণত বিএমডব্লিউ নামে পরিচিত, একটি বিখ্যাত জার্মান অটোমোবাইল এবং মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক যার কর্মক্ষমতা ভিত্তিক যানবাহন এবং আধুনিক প্রযুক্তির জন্য উদযাপিত হয়। 1916 সালে প্রতিষ্ঠিত, বিএমডব্লিউ বিলাসিতা, নতুনত্ব এবং ড্রাইভিং আনন্দ সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছে। এই নিবন্ধটি অটোমোটিভ আড়াআড়ি উপর বিএমডব্লিউ এর ইতিহাস, বিবর্তন, এবং প্রভাব অনুসন্ধান করে। ইতিহাস ও ভিত্তি বিএমডব্লিউ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মিউনিখ, জার্মানিতে, মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক হিসাবে। কোম্পানির প্রথম পণ্য ছিল বিএমডব্লিউ IIIa বিমান ইঞ্জিন, যা তার কর্মক্ষমতা এবং নির্ভরযোগ্যতার জন্য প্রশংসা অর্জন করেছে। যাইহোক, ১৯১৮ সালে যুদ্ধের শেষে জার্মানিতে বিমানের ইঞ্জিন উত্পাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যার ফলে বিএমডব্লিউ এর প্রস্তাবগুলি বৈচিত্র্যময় করে তোলে। — বারসামা সুস্বাদু বেস্টি খাবার ১এম। 1923 সালে, বিএমডব্লিউ তার ফোকাস মোটরসাইকেলে স্থানান্তরিত করে, R32 চালু করে, যেখানে একটি বৈপ্লবিক ফ্ল্যাট-টুইন ইঞ্জিন এবং শ্যাফট ড্রাইভ ছিল। এই মোটর সাইকেলটি দুই-চাকার বিভাগে বিএমডব্লিউ এর খ্যাতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল, অবশেষে পরবর্তী বছরগুলিতে বেশ কয়েকটি রেসিং সাফল্যের দিকে পরিচালিত করেছিল। অটোমোটিভ যুগ ১৯২৮ সালে ফাহরজেউগফ্যাব্রিক আইসেনাচ অর্জনের সঙ্গে বিএমডব্লিউ অটোমোটিভ বাজারে প্রবেশ করে। অস্টিন সেভেন এর উপর ভিত্তি করে প্রথম বিএমডব্লিউ গাড়িটি ছিল বিএমডব্লিউ ৩/১৫। 1930 সালে বিএমডব্লিউ 328 এর প্রবর্তন কোম্পানির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে চিহ্নিত করে, এটি উচ্চ-পারফরম্যান্স স্পোর্টস গাড়ির প্রস্তুতকারক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। ৩২৮ মোটরস্পোর্টে স্বীকৃতি লাভ করে, ১৯৪০ সালে মিল মিগলিয়া জিতেছিল। যাইহোক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিএমডব্লিউ এর জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। জার্মান যুদ্ধের প্রচেষ্টা সমর্থন করার জন্য কোম্পানীটি তার উৎপাদন পুনঃনির্দেশিত করতে বাধ্য হয়েছিল, যার ফলে এর কারখানা এবং অবকাঠামো গুরুতর ক্ষতি হয়েছিল। যুদ্ধের পরে, বিএমডব্লিউ তার পরিচয় পুনর্বিন্যাস এবং পুনর্বিন্যাসের কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধি যুদ্ধ-পরবর্তী বছরে, ব
    Love
    Like
    Wow
    7
    ·74 Views ·0 Reviews
  • দায়িত্বে'র কাছে মানুষ অসহায় ।
    দায়িত্বে'র কাছে মানুষ অসহায় ।😥😥
    Love
    Like
    Sad
    9
    1 Comments ·89 Views ·0 Reviews
  • পরিস্থিতি সবসময় নিজের অনুকূলে থাকে নাহ।
    আজকে যেটা অসহ্য মনে হচ্ছে
    কাল সেটা সহ্য হয়ে যাবে এটাই বাস্তবতা।
    পরিস্থিতি সবসময় নিজের অনুকূলে থাকে নাহ। আজকে যেটা অসহ্য মনে হচ্ছে কাল সেটা সহ্য হয়ে যাবে এটাই বাস্তবতা।
    Love
    Like
    Angry
    19
    ·217 Views ·0 Reviews
  • **উপন্যাসঃ তার পর !**
    **অধ্যায়ঃ ০৩**
    “দোস্ত, আমাদের একটা সুন্দর ছবি তুলে দে। ছেলে-মেয়েদের দেখাবো, যেন বলতে পারি—তোর বাবা এক সময় কতটা রোমান্টিক ছিল।”
    নাঈমের কণ্ঠে একধরনের স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাস, আর পাশে বসে থাকা রুহির গাল রঙ বদলাচ্ছিল লাজে।
    আমার হাতে আইফোন ১৫ প্রো। ক্যামেরাটা যেন মুহূর্তের ভেতর গল্প বলে দেয়।
    আমি ছবি তুলতে তুলতে গাইড করতে থাকি, “নাঈম, তোর ডান হাতটা ওর কাঁধে রাখ।”
    ও একটু অস্বস্তিতে হেসে নিল, তবু আমার কথা মেনে নিল।
    ওদের সম্পর্কটা ভার্চুয়াল পরিধি ছাড়িয়ে আজ বাস্তবের আলোয় ধরা দিয়েছে।
    এটাই প্রথম দেখা—একটা মিষ্টি টেনশন, একটা অপূর্ণতার ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে দুজনের চোখে-মুখে।
    আমি রুহিকে বললাম, “আপনার মাথাটা ওর বুকে রাখেন।”
    স্কুলে থাকতে ছবি তোলার জন্য আমাকে সবাই ‘মাস্টার’ বলত। আজ সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগল। ছবিগুলো যেন নিখুঁত মুহূর্তের ছাপ হয়ে রয়ে গেল।
    ছবি তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে এলো।
    রুহির চেহারায় তখন ক্ষুধার ছাপ স্পষ্ট।
    নাঈম ওয়েটার ডাকল। মাথায় ক্যাপ, চোখে সানগ্লাস, গায়ের রং শ্যামলা, হালকা স্থূল। পোশাক-আশাকে স্পষ্ট সে এই রেস্টুরেন্টের কর্মী।
    ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করল, “আপনারা কী নিতে চান, স্যার?”
    নাঈম মেনু চাইল। আমাকে জিজ্ঞেস করল, “তুই কী খাবি?”
    আমি রুহির দিকে তাকিয়ে বললাম, “ভাবি যা খাবেন, আমিও তাই।”
    নাঈম রুহিকে জিজ্ঞেস করলে সে মৃদু হেসে বলল, “তুমি যা খাবে, আমিও তাই খাব। খরচ কম করো, বেশি দরকার নেই।”
    আমি অবাক হয়ে গেলাম।
    সাধারণত মেয়েরা রেস্টুরেন্টে এসে যতটা না খায়, তার চেয়ে বেশি পকেট ঝালিয়ে নেয়। কিন্তু এই মেয়ে ঠিক উল্টোটা বলছে!
    আমার বন্ধুটি খুব আবেগী। প্রেমে পড়া তার স্বভাবে ছিল না।
    তবু কীভাবে যেন রুহির প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে—অদ্ভুত এক মায়া।
    আমি সবকিছুকে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করি।
    শুরু থেকেই বুঝেছিলাম, এই সম্পর্ক শেষমেশ টিকবে না। রাজশাহী আর ভোলার দূরত্ব, আর তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সীমাবদ্ধতা—সবই বলছিল, এই প্রেম বাস্তবের মাটিতে দাঁড়াবে না।
    তবু বন্ধুর আবেগ দেখে একসময় আমিও আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম।
    এতক্ষণে অর্ডার দেওয়া হলো—Chicken Spring Roll দুইটা।
    আমি বললাম, “তিনটা দে, আমরা তো তিনজন।”
    নাঈমের চোখের ভাঁজে কিছুটা সংকোচ চোখে পড়ল। বুঝলাম, ওর পকেটে খুব বেশি টাকা নেই। তবু রুহিকে বুঝতে দিচ্ছে না।
    ওয়েটার চলে গেল।
    ওকে দেখে কেন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। কোথাও যেন আগে দেখেছি—ঠিক মনে পড়ছে না।
    পৃথিবীটা গোল, হয়তো কোথাও দেখা হয়ে যেতেও পারে।
    খাবার এসে গেল। আমাকে আলাদা একটা প্লেট দিল, ওরা দুজনে একটাতে খেতে শুরু করল।
    আমার ভিতরে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল।
    তবে সে অস্বস্তির মাঝেই এক অপূর্ব দৃশ্য ফুটে উঠল।
    নাঈম এক টুকরো খাবার তুলে দিল রুহির মুখে।
    রুহি চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইল।
    ওদের চাহনির গভীরতায় আমি যেন নিজেই হারিয়ে যাচ্ছিলাম।
    আমার মনে হচ্ছিল, সারাজীবন শুধু অন্যের প্রেম দেখেই কাটিয়ে দেব নাকি?
    কোথাও কি আমার জন্যও এমন কেউ অপেক্ষা করছে না?
    যার চোখে চোখ রাখলে বুক কেঁপে উঠবে? যাকে ঘিরে থাকবে হারানোর ভয়।
    ভালোবাসা মানেই তো সেই ভয়—হারিয়ে ফেলার ভয়। আর সেই ভয় না থাকলে, ভালোবাসাও টেকে না।
    আমি কাশলাম। ওরা দুজনেই লজ্জায় রাঙা হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগল।
    আমিও হাসলাম।
    ঠিক তখনই নাঈমের ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল আসে।
    ও ফোনটা কানে নিতেই ওপাশ থেকে একটা কণ্ঠ—
    “তোমার নাম কী? তুমি কোথায় থাকো?”
    নাঈম থমকে যায়।
    “আপনি কে? কোনো ভূমিকা না দিয়েই পরিচয় চাইছেন?”
    ওর চোখে চিন্তার রেখা ফুটে ওঠে।
    আমি নম্বরটা দেখতে চাইলাম। নম্বরটা শেষ হচ্ছিল ২০ দিয়ে।
    রুহি হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলল,
    “ফোনটা কেটে দাও! এটা আমার ভাইয়ার নম্বর!”
    আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
    নাঈম ধীরে ফোনটা কেটে রাখল।
    আর আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম—এই গল্পটা কি এখানেই শেষ, না কি শুরু হলো নতুন কোনো অধ্যায়?
    Writer: #rifat_pir
    #চলব
    এরকম আরো গল্প করতে ফেসবুকে আমাকে F O L L O W (https://www.facebook.com/profile.php?id=61575602968495) করুন
    **উপন্যাসঃ তার পর !** **অধ্যায়ঃ ০৩** “দোস্ত, আমাদের একটা সুন্দর ছবি তুলে দে। ছেলে-মেয়েদের দেখাবো, যেন বলতে পারি—তোর বাবা এক সময় কতটা রোমান্টিক ছিল।” নাঈমের কণ্ঠে একধরনের স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাস, আর পাশে বসে থাকা রুহির গাল রঙ বদলাচ্ছিল লাজে। আমার হাতে আইফোন ১৫ প্রো। ক্যামেরাটা যেন মুহূর্তের ভেতর গল্প বলে দেয়। আমি ছবি তুলতে তুলতে গাইড করতে থাকি, “নাঈম, তোর ডান হাতটা ওর কাঁধে রাখ।” ও একটু অস্বস্তিতে হেসে নিল, তবু আমার কথা মেনে নিল। ওদের সম্পর্কটা ভার্চুয়াল পরিধি ছাড়িয়ে আজ বাস্তবের আলোয় ধরা দিয়েছে। এটাই প্রথম দেখা—একটা মিষ্টি টেনশন, একটা অপূর্ণতার ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে দুজনের চোখে-মুখে। আমি রুহিকে বললাম, “আপনার মাথাটা ওর বুকে রাখেন।” স্কুলে থাকতে ছবি তোলার জন্য আমাকে সবাই ‘মাস্টার’ বলত। আজ সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগল। ছবিগুলো যেন নিখুঁত মুহূর্তের ছাপ হয়ে রয়ে গেল। ছবি তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে এলো। রুহির চেহারায় তখন ক্ষুধার ছাপ স্পষ্ট। নাঈম ওয়েটার ডাকল। মাথায় ক্যাপ, চোখে সানগ্লাস, গায়ের রং শ্যামলা, হালকা স্থূল। পোশাক-আশাকে স্পষ্ট সে এই রেস্টুরেন্টের কর্মী। ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করল, “আপনারা কী নিতে চান, স্যার?” নাঈম মেনু চাইল। আমাকে জিজ্ঞেস করল, “তুই কী খাবি?” আমি রুহির দিকে তাকিয়ে বললাম, “ভাবি যা খাবেন, আমিও তাই।” নাঈম রুহিকে জিজ্ঞেস করলে সে মৃদু হেসে বলল, “তুমি যা খাবে, আমিও তাই খাব। খরচ কম করো, বেশি দরকার নেই।” আমি অবাক হয়ে গেলাম। সাধারণত মেয়েরা রেস্টুরেন্টে এসে যতটা না খায়, তার চেয়ে বেশি পকেট ঝালিয়ে নেয়। কিন্তু এই মেয়ে ঠিক উল্টোটা বলছে! আমার বন্ধুটি খুব আবেগী। প্রেমে পড়া তার স্বভাবে ছিল না। তবু কীভাবে যেন রুহির প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে—অদ্ভুত এক মায়া। আমি সবকিছুকে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করি। শুরু থেকেই বুঝেছিলাম, এই সম্পর্ক শেষমেশ টিকবে না। রাজশাহী আর ভোলার দূরত্ব, আর তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সীমাবদ্ধতা—সবই বলছিল, এই প্রেম বাস্তবের মাটিতে দাঁড়াবে না। তবু বন্ধুর আবেগ দেখে একসময় আমিও আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম। এতক্ষণে অর্ডার দেওয়া হলো—Chicken Spring Roll দুইটা। আমি বললাম, “তিনটা দে, আমরা তো তিনজন।” নাঈমের চোখের ভাঁজে কিছুটা সংকোচ চোখে পড়ল। বুঝলাম, ওর পকেটে খুব বেশি টাকা নেই। তবু রুহিকে বুঝতে দিচ্ছে না। ওয়েটার চলে গেল। ওকে দেখে কেন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। কোথাও যেন আগে দেখেছি—ঠিক মনে পড়ছে না। পৃথিবীটা গোল, হয়তো কোথাও দেখা হয়ে যেতেও পারে। খাবার এসে গেল। আমাকে আলাদা একটা প্লেট দিল, ওরা দুজনে একটাতে খেতে শুরু করল। আমার ভিতরে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল। তবে সে অস্বস্তির মাঝেই এক অপূর্ব দৃশ্য ফুটে উঠল। নাঈম এক টুকরো খাবার তুলে দিল রুহির মুখে। রুহি চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইল। ওদের চাহনির গভীরতায় আমি যেন নিজেই হারিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, সারাজীবন শুধু অন্যের প্রেম দেখেই কাটিয়ে দেব নাকি? কোথাও কি আমার জন্যও এমন কেউ অপেক্ষা করছে না? যার চোখে চোখ রাখলে বুক কেঁপে উঠবে? যাকে ঘিরে থাকবে হারানোর ভয়। ভালোবাসা মানেই তো সেই ভয়—হারিয়ে ফেলার ভয়। আর সেই ভয় না থাকলে, ভালোবাসাও টেকে না। আমি কাশলাম। ওরা দুজনেই লজ্জায় রাঙা হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগল। আমিও হাসলাম। ঠিক তখনই নাঈমের ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল আসে। ও ফোনটা কানে নিতেই ওপাশ থেকে একটা কণ্ঠ— “তোমার নাম কী? তুমি কোথায় থাকো?” নাঈম থমকে যায়। “আপনি কে? কোনো ভূমিকা না দিয়েই পরিচয় চাইছেন?” ওর চোখে চিন্তার রেখা ফুটে ওঠে। আমি নম্বরটা দেখতে চাইলাম। নম্বরটা শেষ হচ্ছিল ২০ দিয়ে। রুহি হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলল, “ফোনটা কেটে দাও! এটা আমার ভাইয়ার নম্বর!” আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম। নাঈম ধীরে ফোনটা কেটে রাখল। আর আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম—এই গল্পটা কি এখানেই শেষ, না কি শুরু হলো নতুন কোনো অধ্যায়? Writer: #rifat_pir #চলবে এরকম আরো গল্প করতে ফেসবুকে আমাকে F O L L O W (https://www.facebook.com/profile.php?id=61575602968495) করুন
    Like
    Love
    Sad
    7
    ·71 Views ·0 Reviews
  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

    স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

    জননিরাপত্তা বিভাগ

    রাজনৈতিক শাখা-২

    প্রজ্ঞাপন

    তারিখ: ২৯ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ/ ১২ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ

    এস.আর.ও নং ১৩৭-আইন/২০২৫। যেহেতু ২০০৯ সালে ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের উপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে; এবং

    যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশী ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; এবং

    যেহেতু উল্লেখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে; এবং

    যেহেতু এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার উপর হামলা, উস্কানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী কর্তৃক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে; এবং

    (৪২১৩)

    মূল্য: টাকা ৪.০০

    Nest line
    ৪২১৪

    বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, মে ১২, ২০২৫

    যেহেতু এসকল কর্মকান্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে; এবং

    যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনের ন্যায় বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে; এবং

    যেহেতু, সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাস বিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন;

    সেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

    ০২। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
    গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগ রাজনৈতিক শাখা-২ প্রজ্ঞাপন তারিখ: ২৯ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ/ ১২ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ এস.আর.ও নং ১৩৭-আইন/২০২৫। যেহেতু ২০০৯ সালে ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের উপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে; এবং যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশী ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; এবং যেহেতু উল্লেখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে; এবং যেহেতু এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার উপর হামলা, উস্কানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী কর্তৃক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইন-শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে; এবং (৪২১৩) মূল্য: টাকা ৪.০০ Nest line ৪২১৪ বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, মে ১২, ২০২৫ যেহেতু এসকল কর্মকান্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে; এবং যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনের ন্যায় বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে; এবং যেহেতু, সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাস বিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন; সেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। ০২। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
    Love
    5
    ·86 Views ·0 Reviews
  • প্রার্থনা করি
    যারা যাকে ভালোবাসে
    তাকেই যেন পায় !
    কেন না অসমাপ্ত ভালোবাসা
    সত্যি খুব কাদায়।
    প্রার্থনা করি যারা যাকে ভালোবাসে তাকেই যেন পায় ! কেন না অসমাপ্ত ভালোবাসা সত্যি খুব কাদায়।
    Love
    Like
    Angry
    10
    1 Comments ·234 Views ·0 Reviews


  • *গল্প: “এক কাপ চা” *

    একবার এক গরিব ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই বিক্রি করতো। একদিন অনেক কষ্টে একটি বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ল — পেট খালি, গলায় পানি নেই।

    একজন তরুণী দরজা খুলল। ছেলেটি লজ্জায় বই না চেয়ে শুধুই বললো,
    “এক গ্লাস পানি কি পাবো?”

    মেয়েটি হাসিমুখে গেলো, আর ফিরল এক গ্লাস দুধ নিয়ে।
    ছেলেটি বিস্মিত, বললো, “আমি দুধ চাইনি...!”
    মেয়েটি বলল, “তুমি আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আজ দুধটাই তোমার দরকার।”

    ছেলেটি কৃতজ্ঞচিত্তে দুধ খেয়ে বিদায় নিলো।

    বছর পেরিয়ে গেছে…

    একদিন সেই তরুণী ভয়ংকর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হল। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একজন বিখ্যাত ডাক্তার দায়িত্ব নিলেন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সে সুস্থ হলো।

    কিন্তু হাসপাতালের বিল দেখে সে চিন্তিত হয়ে পড়ল।

    তবে একদিন বিলের কাগজের নিচে ছোট করে লেখা ছিল—
    ( এক গাস দুধ )

    হ্যাঁ, সেই ডাক্তারই ছিল সেই ছেলেটি… যে একদিন শুধু এক গ্লাস দুধ পেয়েছিলো, আর সেটা সে জীবনের সবচেয়ে বড় ঋণ মনে করে শোধ করল।

    ---

    *গল্পের শিক্ষা:*
    একটি ছোট উপকার অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। কখন কাকে সাহায্য করছেন, সেটাই হয়তো একদিন আপনার জীবন বদলে দিতে পারে।

    ---

    আরও গল্প চাইলে বলবেন,
    *গল্প: “এক কাপ চা” ☕* একবার এক গরিব ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই বিক্রি করতো। একদিন অনেক কষ্টে একটি বাড়ির দরজায় কড়া নাড়ল — পেট খালি, গলায় পানি নেই। একজন তরুণী দরজা খুলল। ছেলেটি লজ্জায় বই না চেয়ে শুধুই বললো, “এক গ্লাস পানি কি পাবো?” মেয়েটি হাসিমুখে গেলো, আর ফিরল এক গ্লাস দুধ নিয়ে। ছেলেটি বিস্মিত, বললো, “আমি দুধ চাইনি...!” মেয়েটি বলল, “তুমি আমার ছোট ভাইয়ের মতো। আজ দুধটাই তোমার দরকার।” ছেলেটি কৃতজ্ঞচিত্তে দুধ খেয়ে বিদায় নিলো। বছর পেরিয়ে গেছে… একদিন সেই তরুণী ভয়ংকর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হল। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একজন বিখ্যাত ডাক্তার দায়িত্ব নিলেন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সে সুস্থ হলো। কিন্তু হাসপাতালের বিল দেখে সে চিন্তিত হয়ে পড়ল। তবে একদিন বিলের কাগজের নিচে ছোট করে লেখা ছিল— ( এক গাস দুধ ) হ্যাঁ, সেই ডাক্তারই ছিল সেই ছেলেটি… যে একদিন শুধু এক গ্লাস দুধ পেয়েছিলো, আর সেটা সে জীবনের সবচেয়ে বড় ঋণ মনে করে শোধ করল। --- *গল্পের শিক্ষা:* একটি ছোট উপকার অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। কখন কাকে সাহায্য করছেন, সেটাই হয়তো একদিন আপনার জীবন বদলে দিতে পারে। --- আরও গল্প চাইলে বলবেন,
    Like
    Love
    Angry
    5
    ·48 Views ·0 Reviews
More Results
Jono Sathi - Bangladeshi Social Media Platform https://jonosathi.com