Upgrade to Pro

  • সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি।
    তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না।
    আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি।
    এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম।

    দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ।
    মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব?

    বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম।
    রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।"

    আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো।
    তিশা? আমার তিশা?
    যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে?

    রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি।
    ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে।
    ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক।
    আমার হৃদয়টা থেমে গেল।

    আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ।
    সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ।

    তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়।

    — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?”
    — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?”
    — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?”
    — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।”
    — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।”

    সে ঠিক কথামতোই করল।
    তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল।
    আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল।

    সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না।
    আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি।

    রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত।
    সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।”

    আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল।
    ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে।
    রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব।

    ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।”

    আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।”
    আমার চোখে তখন আগুন।
    রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল।
    রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল।
    রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে—
    “কারে বাঁধতে চাস?”
    — “তিশারে।”
    “কার দামে?”
    — “অনিকের প্রাণ।”
    “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।”

    পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই।

    সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ।

    — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…”

    আমি হাসি।
    তাকে ঘরে তুলি।
    আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো।

    কিন্তু আমার ভুল ছিল।

    তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে—
    “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’”

    আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা।

    চলবে?

    গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা
    লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান

    দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে।

    Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence.

    #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি। তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না। আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি। এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম। দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ। মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব? বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম। রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।" আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো। তিশা? আমার তিশা? যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে? রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি। ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে। ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক। আমার হৃদয়টা থেমে গেল। আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ। সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ। তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?” — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?” — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?” — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।” — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।” সে ঠিক কথামতোই করল। তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল। আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল। সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না। আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি। রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত। সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।” আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল। ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে। রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব। ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।” আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।” আমার চোখে তখন আগুন। রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল। রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল। রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে— “কারে বাঁধতে চাস?” — “তিশারে।” “কার দামে?” — “অনিকের প্রাণ।” “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।” পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই। সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ। — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…” আমি হাসি। তাকে ঘরে তুলি। আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো। কিন্তু আমার ভুল ছিল। তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে— “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’” আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা। চলবে? গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে। Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence. #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    Love
    2
    ·206 Views ·0 Reviews
  • সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি।
    তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না।
    আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি।
    এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম।

    দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ।
    মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব?

    বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম।
    রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।"

    আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো।
    তিশা? আমার তিশা?
    যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে?

    রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি।
    ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে।
    ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক।
    আমার হৃদয়টা থেমে গেল।

    আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ।
    সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ।

    তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়।

    — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?”
    — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?”
    — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?”
    — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।”
    — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।”

    সে ঠিক কথামতোই করল।
    তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল।
    আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল।

    সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না।
    আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি।

    রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত।
    সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।”

    আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল।
    ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে।
    রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব।

    ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।”

    আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।”
    আমার চোখে তখন আগুন।
    রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল।
    রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল।
    রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে—
    “কারে বাঁধতে চাস?”
    — “তিশারে।”
    “কার দামে?”
    — “অনিকের প্রাণ।”
    “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।”

    পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই।

    সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ।

    — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…”

    আমি হাসি।
    তাকে ঘরে তুলি।
    আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো।

    কিন্তু আমার ভুল ছিল।

    তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে—
    “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’”

    আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা।

    চলবে?

    গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা
    লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান

    দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে।

    Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence.

    #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    সে আমার বুকে লাথি মেরে চলে গিয়েছিল। আমি তাকে কালো যাদুতে বাঁধছি। তিশা... আমার তিশা। আজ সে আর মানুষ না। আমার করা যাদুর কারণে ওর চোখে ঘুম নেই, ওর শরীরে শান্তি নেই, আর ওর মনে... কেবল আমি। এই গল্পটা যদি শুনতে সাহস থাকে, তাহলে শুরু করি সেই রাত থেকে—যেদিন ওর বিয়ের গেটের নিচে আমি দাঁড়িয়ে কাঁপছিলাম। দুই মাস আগের কথা। হঠাৎ তিশা কলেজে আসা বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিন পাত্তা দিইনি। কিন্তু পরদিন ফোন বন্ধ, ইনবক্স সাইলেন্ট, ফেসবুক ডিএক্টিভ। মাথায় আগুন ধরে গেল। ছয় বছরের প্রেম, একদিনও না জানিয়ে এভাবে গায়েব? বাধ্য হয়ে ওর বান্ধবী রুহিকে কল করলাম। রুহি চাপা গলায় বলল—"তিশা বিয়ের জন্য গ্রামে চলে গেছে। কাল গায়ে হলুদ।" আমার বুকটা ধপাস করে পড়ে গেলো। তিশা? আমার তিশা? যে রাত তিনটায় ফোন করে বলতো, ‘তুই ছাড়া আমি শ্বাস নিতে পারি না’—সেই তিশা কারো স্ত্রী হতে যাচ্ছে? রাতে ট্রেন ধরলাম। বৃষ্টি ছিল, চোখেও বৃষ্টি। ভোরে গিয়ে পৌঁছাই ওদের গ্রামে। ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি—লাল-সোনালী বিয়ের গেট, বাজছে শঙ্খ, ঢাক। আমার হৃদয়টা থেমে গেল। আমি বাড়ির দিকে এগোতেই উঠোনে তিশা বেরিয়ে আসে। আমার চোখে চোখ। সেই চোখে আমি নিজেকে খুঁজছিলাম, কিন্তু সেখানে আমি ছিলাম না—ছিল এক অচেনা মানুষ। তিশা হঠাৎ আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। — “তুই এখানে কেন এলি অর্ণব?” — “তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? বিয়ে করছিস, আমাকে কিছু বলবি না?” — “তোর সাথে যা ছিল, তা ছেলেমানুষি। আমি এখন ভবিষ্যৎ দেখি। তুই তো নিজে সামলাতে পারিস না, আমাকে কী দেবে?” — “তিশা... আমি তোকে ছাড়া বাঁচব না।” — “তুই মর। এখন যদি কিছু করিস, ওরা তোকে কুকুরের মতো পি'টাবে। আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতে আসবো না।” সে ঠিক কথামতোই করল। তার চাচাতো ভাই অনিকসহ চারজন আমাকে এমন পেটালো, আমার পাঁজর ভেঙে গেল। আমি রক্তে ভেসে পড়ে থাকলাম—আর আমার ভালোবাসা অন্য কাউকে গলায় মালা পরিয়ে হাসছিল। সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিলাম—তিশা আবার আমার হবে। আর কেউ তাকে পাবে না। আমি রওনা হলাম আমার একমাত্র বন্ধুর কাছে—রাব্বি। রাব্বি আগেও কিছু অদ্ভুত কাজ করত। সে বলল, “তুই যদি সত্যিই তিশারে পেতে চাস, তাহলে শেষ রাস্তা আছে—কালো যাদু।” আমাকে ওর ঘরের ভেতর নিয়ে গেল। ঘর অন্ধকার। কেবল চারটা কালো মোমবাতি জ্বলছে। রাব্বি খাটের নিচ থেকে একটা লোহায় মোড়ানো বাক্স বের করল। ভেতরে কাঁচের বোতলে একধরনের ঘোলাটে তরল, কিছু পুরনো হাড্ডি, আর একটা কিতাব। ও বলল—“এই পানি নাপাক, মৃত মানুষের সাথে মেশানো। এই সুতোতে মৃতার চুল জড়ানো। আর এখন যে আত্মাটারে ডাকবো, ও ভালোবাসার বাঁধন দিয়ে মানুষ ধরে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে চায় কিছু… জীবন্ত কিছু।” আমি নিঃশব্দে বললাম—“তিশার চাচাতো ভাই অনিক। ওর জীবন চাই।” আমার চোখে তখন আগুন। রাব্বি কিতাব খুলে মন্ত্র পড়তে শুরু করল। রুমটা ঠান্ডা হয়ে গেল। বাতাস থেমে গেল। হঠাৎ মোমবাতিগুলো নিজে নিজে নিভে গেল। রুমের কোণ থেকে একটা গলা ভেসে আসে— “কারে বাঁধতে চাস?” — “তিশারে।” “কার দামে?” — “অনিকের প্রাণ।” “গ্রহণযোগ্য। বাঁধন শুরু।” পরদিন ভোরে খবর আসে—অনিককে কেউ খু''ন করে লাশটা পুকুরে ফেলে গেছে। গলা কা'টা, চোখ নেই। সেই রাতেই তিশা আমার গেটে আসে। চোখে পানি, মুখে আর্তনাদ। — “তুই ছাড়া আমি কিছু বুঝি না অর্ণব। আমার মাথায় কী হচ্ছে আমি জানি না। আমি তোর হতে চাই... প্লিজ…” আমি হাসি। তাকে ঘরে তুলি। আমি জানি, সে আর সাধারণ মানুষ না। সে এখন বাঁধা। সে আমার, চিরদিনের মতো। কিন্তু আমার ভুল ছিল। তিন রাত পর, সে মাঝরাতে চিৎকার করে উঠে বলে— “ও আমাকে নিয়ে যেতে আসছে অর্ণব... আমাকে বাঁচা তুই... ও বলছে, ‘তুই শর্ত ভেঙেছিস।’” আমি দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি—ঘরের এক কোণায় দাঁড়িয়ে এক লম্বা, ছায়ামূর্তি। তার চোখ নেই, মুখ নেই, কেবল কুয়াশা। চলবে? গল্প: কালো জাদুর সত্য ঘটনা লেখক: ভূতের গল্প লেখক সান দ্রষ্টব্য: গল্পের লেখায় ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি সম্ভব হয়, মেসেজের মাধ্যমে জানাবেন। সবশেষে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, আজকের গল্পটি আপনার কেমন লেগেছে। Note: This AI-generated image portrays a fictional scenario designed for creative and storytelling purposes. It may include elements that could be unsettling to some viewers. Please exercise discretion when viewing. The content aims to delve into themes of suspense and mystery and does not endorse or encourage any form of violence. #fyp #viral #highlights #photochallenge #Amazing #trending #ভূতেরগল্প #ভৌতিক
    Like
    Love
    3
    ·218 Views ·0 Reviews
  • (এক)

    শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল।

    শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল।

    তারপর শুভকে ডাকল,শোন।

    শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস?

    শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে?

    শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে।

    শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে?

    আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়।



    ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে?

    ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর!

    ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে?

    ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে।



    শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি?

    ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি।

    ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি।

    ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি।



    (দুই)

    শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল।

    বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে।

    শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না।

    তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না।

    শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না।

    তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না।

    এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল।

    শক্তি মনে মনে অল্প হাসল।

    তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল।

    বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে।

    এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে।

    চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে।

    একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে।

    কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা।

    শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে।

    তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না।

    সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল।

    প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে।

    তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে।

    তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল।

    সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে।

    পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল।

    সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই।

    ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি।

    নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে।

    সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে।

    হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল।

    যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল।

    মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল।

    আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে।

    ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল।

    শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে।



    (তিন)

    দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল।

    প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল।

    শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো?

    লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন?

    ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না।

    ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না।

    তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য।

    তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী?



    লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে।

    তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই।

    আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে।

    কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

    রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক।

    ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না।

    মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়।

    কেউ কানে তুললেন না।

    তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব?

    তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল।

    মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব।

    তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম।

    বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর!

    কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি।

    তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে।

    এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার।

    কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া?

    আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না।



    (চার)

    কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল।

    শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে!

    তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন।

    জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন।

    ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই।

    শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে।

    বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন।

    শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে?

    শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম।

    তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন।

    সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়।

    তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন।

    -----সমাপ্ত----


    (এক) শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল। শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল। তারপর শুভকে ডাকল,শোন। শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস? শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে? শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে। শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে? আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়। ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে? ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর! ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে? ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে। শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি? ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি। ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি। ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি। (দুই) শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল। বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে। শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না। তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না। শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না। তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না। এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল। শক্তি মনে মনে অল্প হাসল। তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল। বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে। এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে। চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে। একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে। কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা। শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে। তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না। সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল। প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে। তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে। তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল। সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে। পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল। সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই। ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি। নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে। সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে। হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল। যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল। মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল। আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে। ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল। শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে। (তিন) দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল। প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল। শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো? লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন? ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না। ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না। তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য। তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী? লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে। তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই। আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে। কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক। ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না। মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়। কেউ কানে তুললেন না। তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব? তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল। মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব। তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম। বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর! কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি। তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে। এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার। কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া? আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না। (চার) কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল। শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে! তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন। জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই। শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে। বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন। শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে? শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম। তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন। সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়। তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন। -----সমাপ্ত----
    Love
    Like
    9
    ·200 Views ·0 Reviews
  • দুনিয়ার মোহো মায়ার কারণে কবরকে ভুলে গেলে চলবে না,,, কারণ কবরই হলো আমাদের একমাত্র স্থায়ী জায়গা,,, যেখানে আমাদেরকে সারাজীবন থাকতে হবে 🥹
    দুনিয়ার মোহো মায়ার কারণে কবরকে ভুলে গেলে চলবে না,,, কারণ কবরই হলো আমাদের একমাত্র স্থায়ী জায়গা,,, যেখানে আমাদেরকে সারাজীবন থাকতে হবে 🥹😥😥😥
    Love
    Like
    5
    ·182 Views ·0 Reviews
  • জীবন যাত্রায় হেরে গেলে চলবে না
    👑জীবন যাত্রায় হেরে গেলে চলবে না👑
    Love
    Like
    Wow
    Angry
    6
    ·74 Views ·0 Reviews
  • **উপন্যাসঃ তার পর !**
    **অধ্যায়ঃ ০৩**
    “দোস্ত, আমাদের একটা সুন্দর ছবি তুলে দে। ছেলে-মেয়েদের দেখাবো, যেন বলতে পারি—তোর বাবা এক সময় কতটা রোমান্টিক ছিল।”
    নাঈমের কণ্ঠে একধরনের স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাস, আর পাশে বসে থাকা রুহির গাল রঙ বদলাচ্ছিল লাজে।
    আমার হাতে আইফোন ১৫ প্রো। ক্যামেরাটা যেন মুহূর্তের ভেতর গল্প বলে দেয়।
    আমি ছবি তুলতে তুলতে গাইড করতে থাকি, “নাঈম, তোর ডান হাতটা ওর কাঁধে রাখ।”
    ও একটু অস্বস্তিতে হেসে নিল, তবু আমার কথা মেনে নিল।
    ওদের সম্পর্কটা ভার্চুয়াল পরিধি ছাড়িয়ে আজ বাস্তবের আলোয় ধরা দিয়েছে।
    এটাই প্রথম দেখা—একটা মিষ্টি টেনশন, একটা অপূর্ণতার ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে দুজনের চোখে-মুখে।
    আমি রুহিকে বললাম, “আপনার মাথাটা ওর বুকে রাখেন।”
    স্কুলে থাকতে ছবি তোলার জন্য আমাকে সবাই ‘মাস্টার’ বলত। আজ সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগল। ছবিগুলো যেন নিখুঁত মুহূর্তের ছাপ হয়ে রয়ে গেল।
    ছবি তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে এলো।
    রুহির চেহারায় তখন ক্ষুধার ছাপ স্পষ্ট।
    নাঈম ওয়েটার ডাকল। মাথায় ক্যাপ, চোখে সানগ্লাস, গায়ের রং শ্যামলা, হালকা স্থূল। পোশাক-আশাকে স্পষ্ট সে এই রেস্টুরেন্টের কর্মী।
    ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করল, “আপনারা কী নিতে চান, স্যার?”
    নাঈম মেনু চাইল। আমাকে জিজ্ঞেস করল, “তুই কী খাবি?”
    আমি রুহির দিকে তাকিয়ে বললাম, “ভাবি যা খাবেন, আমিও তাই।”
    নাঈম রুহিকে জিজ্ঞেস করলে সে মৃদু হেসে বলল, “তুমি যা খাবে, আমিও তাই খাব। খরচ কম করো, বেশি দরকার নেই।”
    আমি অবাক হয়ে গেলাম।
    সাধারণত মেয়েরা রেস্টুরেন্টে এসে যতটা না খায়, তার চেয়ে বেশি পকেট ঝালিয়ে নেয়। কিন্তু এই মেয়ে ঠিক উল্টোটা বলছে!
    আমার বন্ধুটি খুব আবেগী। প্রেমে পড়া তার স্বভাবে ছিল না।
    তবু কীভাবে যেন রুহির প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে—অদ্ভুত এক মায়া।
    আমি সবকিছুকে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করি।
    শুরু থেকেই বুঝেছিলাম, এই সম্পর্ক শেষমেশ টিকবে না। রাজশাহী আর ভোলার দূরত্ব, আর তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সীমাবদ্ধতা—সবই বলছিল, এই প্রেম বাস্তবের মাটিতে দাঁড়াবে না।
    তবু বন্ধুর আবেগ দেখে একসময় আমিও আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম।
    এতক্ষণে অর্ডার দেওয়া হলো—Chicken Spring Roll দুইটা।
    আমি বললাম, “তিনটা দে, আমরা তো তিনজন।”
    নাঈমের চোখের ভাঁজে কিছুটা সংকোচ চোখে পড়ল। বুঝলাম, ওর পকেটে খুব বেশি টাকা নেই। তবু রুহিকে বুঝতে দিচ্ছে না।
    ওয়েটার চলে গেল।
    ওকে দেখে কেন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। কোথাও যেন আগে দেখেছি—ঠিক মনে পড়ছে না।
    পৃথিবীটা গোল, হয়তো কোথাও দেখা হয়ে যেতেও পারে।
    খাবার এসে গেল। আমাকে আলাদা একটা প্লেট দিল, ওরা দুজনে একটাতে খেতে শুরু করল।
    আমার ভিতরে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল।
    তবে সে অস্বস্তির মাঝেই এক অপূর্ব দৃশ্য ফুটে উঠল।
    নাঈম এক টুকরো খাবার তুলে দিল রুহির মুখে।
    রুহি চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইল।
    ওদের চাহনির গভীরতায় আমি যেন নিজেই হারিয়ে যাচ্ছিলাম।
    আমার মনে হচ্ছিল, সারাজীবন শুধু অন্যের প্রেম দেখেই কাটিয়ে দেব নাকি?
    কোথাও কি আমার জন্যও এমন কেউ অপেক্ষা করছে না?
    যার চোখে চোখ রাখলে বুক কেঁপে উঠবে? যাকে ঘিরে থাকবে হারানোর ভয়।
    ভালোবাসা মানেই তো সেই ভয়—হারিয়ে ফেলার ভয়। আর সেই ভয় না থাকলে, ভালোবাসাও টেকে না।
    আমি কাশলাম। ওরা দুজনেই লজ্জায় রাঙা হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগল।
    আমিও হাসলাম।
    ঠিক তখনই নাঈমের ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল আসে।
    ও ফোনটা কানে নিতেই ওপাশ থেকে একটা কণ্ঠ—
    “তোমার নাম কী? তুমি কোথায় থাকো?”
    নাঈম থমকে যায়।
    “আপনি কে? কোনো ভূমিকা না দিয়েই পরিচয় চাইছেন?”
    ওর চোখে চিন্তার রেখা ফুটে ওঠে।
    আমি নম্বরটা দেখতে চাইলাম। নম্বরটা শেষ হচ্ছিল ২০ দিয়ে।
    রুহি হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলল,
    “ফোনটা কেটে দাও! এটা আমার ভাইয়ার নম্বর!”
    আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
    নাঈম ধীরে ফোনটা কেটে রাখল।
    আর আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম—এই গল্পটা কি এখানেই শেষ, না কি শুরু হলো নতুন কোনো অধ্যায়?
    Writer: #rifat_pir
    #চলব
    এরকম আরো গল্প করতে ফেসবুকে আমাকে F O L L O W (https://www.facebook.com/profile.php?id=61575602968495) করুন
    **উপন্যাসঃ তার পর !** **অধ্যায়ঃ ০৩** “দোস্ত, আমাদের একটা সুন্দর ছবি তুলে দে। ছেলে-মেয়েদের দেখাবো, যেন বলতে পারি—তোর বাবা এক সময় কতটা রোমান্টিক ছিল।” নাঈমের কণ্ঠে একধরনের স্নিগ্ধ উচ্ছ্বাস, আর পাশে বসে থাকা রুহির গাল রঙ বদলাচ্ছিল লাজে। আমার হাতে আইফোন ১৫ প্রো। ক্যামেরাটা যেন মুহূর্তের ভেতর গল্প বলে দেয়। আমি ছবি তুলতে তুলতে গাইড করতে থাকি, “নাঈম, তোর ডান হাতটা ওর কাঁধে রাখ।” ও একটু অস্বস্তিতে হেসে নিল, তবু আমার কথা মেনে নিল। ওদের সম্পর্কটা ভার্চুয়াল পরিধি ছাড়িয়ে আজ বাস্তবের আলোয় ধরা দিয়েছে। এটাই প্রথম দেখা—একটা মিষ্টি টেনশন, একটা অপূর্ণতার ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে দুজনের চোখে-মুখে। আমি রুহিকে বললাম, “আপনার মাথাটা ওর বুকে রাখেন।” স্কুলে থাকতে ছবি তোলার জন্য আমাকে সবাই ‘মাস্টার’ বলত। আজ সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগল। ছবিগুলো যেন নিখুঁত মুহূর্তের ছাপ হয়ে রয়ে গেল। ছবি তুলতে তুলতে দুপুর হয়ে এলো। রুহির চেহারায় তখন ক্ষুধার ছাপ স্পষ্ট। নাঈম ওয়েটার ডাকল। মাথায় ক্যাপ, চোখে সানগ্লাস, গায়ের রং শ্যামলা, হালকা স্থূল। পোশাক-আশাকে স্পষ্ট সে এই রেস্টুরেন্টের কর্মী। ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করল, “আপনারা কী নিতে চান, স্যার?” নাঈম মেনু চাইল। আমাকে জিজ্ঞেস করল, “তুই কী খাবি?” আমি রুহির দিকে তাকিয়ে বললাম, “ভাবি যা খাবেন, আমিও তাই।” নাঈম রুহিকে জিজ্ঞেস করলে সে মৃদু হেসে বলল, “তুমি যা খাবে, আমিও তাই খাব। খরচ কম করো, বেশি দরকার নেই।” আমি অবাক হয়ে গেলাম। সাধারণত মেয়েরা রেস্টুরেন্টে এসে যতটা না খায়, তার চেয়ে বেশি পকেট ঝালিয়ে নেয়। কিন্তু এই মেয়ে ঠিক উল্টোটা বলছে! আমার বন্ধুটি খুব আবেগী। প্রেমে পড়া তার স্বভাবে ছিল না। তবু কীভাবে যেন রুহির প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে—অদ্ভুত এক মায়া। আমি সবকিছুকে যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিচার করি। শুরু থেকেই বুঝেছিলাম, এই সম্পর্ক শেষমেশ টিকবে না। রাজশাহী আর ভোলার দূরত্ব, আর তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সীমাবদ্ধতা—সবই বলছিল, এই প্রেম বাস্তবের মাটিতে দাঁড়াবে না। তবু বন্ধুর আবেগ দেখে একসময় আমিও আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম। এতক্ষণে অর্ডার দেওয়া হলো—Chicken Spring Roll দুইটা। আমি বললাম, “তিনটা দে, আমরা তো তিনজন।” নাঈমের চোখের ভাঁজে কিছুটা সংকোচ চোখে পড়ল। বুঝলাম, ওর পকেটে খুব বেশি টাকা নেই। তবু রুহিকে বুঝতে দিচ্ছে না। ওয়েটার চলে গেল। ওকে দেখে কেন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। কোথাও যেন আগে দেখেছি—ঠিক মনে পড়ছে না। পৃথিবীটা গোল, হয়তো কোথাও দেখা হয়ে যেতেও পারে। খাবার এসে গেল। আমাকে আলাদা একটা প্লেট দিল, ওরা দুজনে একটাতে খেতে শুরু করল। আমার ভিতরে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করছিল। তবে সে অস্বস্তির মাঝেই এক অপূর্ব দৃশ্য ফুটে উঠল। নাঈম এক টুকরো খাবার তুলে দিল রুহির মুখে। রুহি চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইল। ওদের চাহনির গভীরতায় আমি যেন নিজেই হারিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, সারাজীবন শুধু অন্যের প্রেম দেখেই কাটিয়ে দেব নাকি? কোথাও কি আমার জন্যও এমন কেউ অপেক্ষা করছে না? যার চোখে চোখ রাখলে বুক কেঁপে উঠবে? যাকে ঘিরে থাকবে হারানোর ভয়। ভালোবাসা মানেই তো সেই ভয়—হারিয়ে ফেলার ভয়। আর সেই ভয় না থাকলে, ভালোবাসাও টেকে না। আমি কাশলাম। ওরা দুজনেই লজ্জায় রাঙা হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগল। আমিও হাসলাম। ঠিক তখনই নাঈমের ফোনে অচেনা নম্বর থেকে কল আসে। ও ফোনটা কানে নিতেই ওপাশ থেকে একটা কণ্ঠ— “তোমার নাম কী? তুমি কোথায় থাকো?” নাঈম থমকে যায়। “আপনি কে? কোনো ভূমিকা না দিয়েই পরিচয় চাইছেন?” ওর চোখে চিন্তার রেখা ফুটে ওঠে। আমি নম্বরটা দেখতে চাইলাম। নম্বরটা শেষ হচ্ছিল ২০ দিয়ে। রুহি হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলল, “ফোনটা কেটে দাও! এটা আমার ভাইয়ার নম্বর!” আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলাম। নাঈম ধীরে ফোনটা কেটে রাখল। আর আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম—এই গল্পটা কি এখানেই শেষ, না কি শুরু হলো নতুন কোনো অধ্যায়? Writer: #rifat_pir #চলবে এরকম আরো গল্প করতে ফেসবুকে আমাকে F O L L O W (https://www.facebook.com/profile.php?id=61575602968495) করুন
    Like
    Love
    Sad
    7
    ·95 Views ·0 Reviews
  • আমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হয়ে একসাথে মিলেমিশে কাজ করব জনসাথীর কথা মেনে নিব আর গাইড লাইন মেনে চলবো সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করে যাও
    আমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হয়ে একসাথে মিলেমিশে কাজ করব জনসাথীর কথা মেনে নিব আর গাইড লাইন মেনে চলবো সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করে যাও
    Love
    Like
    Haha
    7
    1 Comments ·122 Views ·0 Reviews
  • ভারতে আমাদের টেলিভিশন চলতে দেয়া হয় না তাহলে বাংলাদেশে কেন ভারতের টিভি চলবে? সরকারকে দ্রুত ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করতে হবে৷
    আওয়াজ তোল একসাথে...
    #Elias Hossain
    ভারতে আমাদের টেলিভিশন চলতে দেয়া হয় না তাহলে বাংলাদেশে কেন ভারতের টিভি চলবে? সরকারকে দ্রুত ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ করতে হবে৷ আওয়াজ তোল একসাথে... #Elias Hossain
    Love
    Like
    Haha
    Angry
    Wow
    74
    2 Comments ·796 Views ·0 Reviews
  • মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার ছায়াপথে নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না!
    মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার ছায়াপথে নিজেকে ভুলে গেলে চলবে না!💛
    Love
    Like
    Haha
    Angry
    15
    ·150 Views ·0 Reviews
  • চলবে নাকি প্লেটার
    চলবে নাকি প্লেটার 😋😋😋
    Love
    Like
    Wow
    8
    1 Comments ·88 Views ·0 Reviews
  • বউয়ের কথায় চলব, কিন্তু আমি বললে বউকে শুয়ে পড়তে হবে🫠
    বউয়ের কথায় চলব, কিন্তু আমি বললে বউকে শুয়ে পড়তে হবে🫠
    Like
    Love
    3
    ·51 Views ·0 Reviews
  • এডমিন ভাইয়াদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনাদের এই আপগ্রেড প্রসেস আর কতক্ষন চলবে।
    এডমিন ভাইয়াদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনাদের এই আপগ্রেড প্রসেস আর কতক্ষন চলবে।
    Love
    4
    ·93 Views ·0 Reviews
More Results
Jono Sathi - Bangladeshi Social Media Platform https://jonosathi.com