Upgrade to Pro

  • মানুষ কয় অর্ধেক রুটি খরচ করলে কুকুর প্রেমে পইড়া যায়,অর্ধেক সিগারেট খরচ করলে শত্রুও বন্ধু হইয়্যা যায়, অথচ আমি আপনারে ভালোবাইসা আপনার লাইগ্যা আমার আস্ত একখান জীবন খরচ কইরা দিবার পরও আপনি মানুষখান আমার হইলেন না।

    দুনিয়ার কোন ভিক্ষুক অমন কইরা কারোও দরজায় ভিক্ষা চায় নাই, আমি যেমন কইরা আপনার দরজায় একচিমটি ভালোবাসা ভিক্ষা চাইছি। দুনিয়ার কোন মানুষ জীবন হারাইবার ভয়ে অমন হাউমাউ কইরা কাইন্দা উঠে নাই, আমি যেমন কইরা আপনারে হারানো ভয়ে কাইন্দা উঠছি। দুনিয়ার কোন ক্ষুধার্ত মানুষ খাওনের লাইগ্যা অত নতজানু হয় নাই, আমি যতখানি আপনার পাওনের লাইগয়া নতজানু হইছি। কোন নিঃসন্তান মা'ও সন্তান পাওনের লাইগাও অমন কইরা মাজার মসজিদে কপাল ঠেকায় নাই, আমি যেমন কইরা আপনারে পাওনের লাইগ্যা কপাল ঠেকাইছি। কোনো বেকার ছাওয়াল অমন কইরা চাকরি খুঁজে নাই আমি যেমন কইরা আপনারে পাওয়ার তরিকা খুঁজছি।

    দুনিয়ার বেবাক মানুষ বুঝল, আপনারে আমার লাগবোই লাগবো—শুধু আপনি মানুষখান বুঝলেন না।

    আপনারে গাঙ্গের জলে পাইলো, পথের ধূলে পাইলো, গাছের ফুলে পাইলো, আসমানের বৃষ্টি পাইলো, সমুদ্ররের জলে পাইলো, কবিতার ছন্দে পাইলো, গানে সুরে পাইলো, কত অজানা অচেনা মানুষ পাইলো–শুধু আমি মানুষখান আকুতি মিনতি কইরা চাইবার পরও আপনারে পাইলাম না। আমার চাওয়ায় বুঝি এতো পাপ?

    মসজিদে লেহা জান্নাত মিলে, মন্দিরে লেহা মুঙ্গল মিলে, স্কুলে লেহা শিক্ষা মিলে, রেষ্টুরেন্ট লেহা খাবার মিলে, ফার্মিসিতে লেহা ঔষুধ মিলে। অথচ শালা আমি তামাম দুনিয়া তন্নতন্ন কইরা খুুঁইজাও এমন একখান লেহা পাইলাম না যেইখানে গেলে আপনারে মিলে। আপনি কি আমারে কইবার পারেন-কোনখানে গেলে আপনারে পামু, কোনখানে গেলে আপনারে মিলে?..

    লেখা: আরিফ হুসাইন
    মানুষ কয় অর্ধেক রুটি খরচ করলে কুকুর প্রেমে পইড়া যায়,অর্ধেক সিগারেট খরচ করলে শত্রুও বন্ধু হইয়্যা যায়, অথচ আমি আপনারে ভালোবাইসা আপনার লাইগ্যা আমার আস্ত একখান জীবন খরচ কইরা দিবার পরও আপনি মানুষখান আমার হইলেন না। দুনিয়ার কোন ভিক্ষুক অমন কইরা কারোও দরজায় ভিক্ষা চায় নাই, আমি যেমন কইরা আপনার দরজায় একচিমটি ভালোবাসা ভিক্ষা চাইছি। দুনিয়ার কোন মানুষ জীবন হারাইবার ভয়ে অমন হাউমাউ কইরা কাইন্দা উঠে নাই, আমি যেমন কইরা আপনারে হারানো ভয়ে কাইন্দা উঠছি। দুনিয়ার কোন ক্ষুধার্ত মানুষ খাওনের লাইগ্যা অত নতজানু হয় নাই, আমি যতখানি আপনার পাওনের লাইগয়া নতজানু হইছি। কোন নিঃসন্তান মা'ও সন্তান পাওনের লাইগাও অমন কইরা মাজার মসজিদে কপাল ঠেকায় নাই, আমি যেমন কইরা আপনারে পাওনের লাইগ্যা কপাল ঠেকাইছি। কোনো বেকার ছাওয়াল অমন কইরা চাকরি খুঁজে নাই আমি যেমন কইরা আপনারে পাওয়ার তরিকা খুঁজছি। দুনিয়ার বেবাক মানুষ বুঝল, আপনারে আমার লাগবোই লাগবো—শুধু আপনি মানুষখান বুঝলেন না। আপনারে গাঙ্গের জলে পাইলো, পথের ধূলে পাইলো, গাছের ফুলে পাইলো, আসমানের বৃষ্টি পাইলো, সমুদ্ররের জলে পাইলো, কবিতার ছন্দে পাইলো, গানে সুরে পাইলো, কত অজানা অচেনা মানুষ পাইলো–শুধু আমি মানুষখান আকুতি মিনতি কইরা চাইবার পরও আপনারে পাইলাম না। আমার চাওয়ায় বুঝি এতো পাপ? মসজিদে লেহা জান্নাত মিলে, মন্দিরে লেহা মুঙ্গল মিলে, স্কুলে লেহা শিক্ষা মিলে, রেষ্টুরেন্ট লেহা খাবার মিলে, ফার্মিসিতে লেহা ঔষুধ মিলে। অথচ শালা আমি তামাম দুনিয়া তন্নতন্ন কইরা খুুঁইজাও এমন একখান লেহা পাইলাম না যেইখানে গেলে আপনারে মিলে। আপনি কি আমারে কইবার পারেন-কোনখানে গেলে আপনারে পামু, কোনখানে গেলে আপনারে মিলে?.. লেখা: আরিফ হুসাইন
    Like
    Love
    Haha
    7
    ·179 Views ·0 Reviews
  • আমারে হারাইতে দিওনা সোনাই, আমারে হারাইতে দিলে তোমার ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো। মন খারাপ হইবো কইতাছিনা, তয় তোমার মুখে অরুচি বাসা বাঁধবো, তিন-চারদিন তুমি ভাত সামনে লইয়্যা বইয়া থাকবা কিন্তু খাইবার পারবা না। একটা লোকমা দিয়া পরের লোকমা গলায় আটকাইয়া যাইবো, তুমি ভাববা আমি তোমারে মনে করতাছি। অথচ আমার মনের আনাচে-কানাচে কোথাও তুমি থাকবা না।

    আমি তোমারে ভুইলা যামু, আমি তখন ব্যাস্ত থাকুমু,আমারে যারে বুকে হারাইতে দিছো তারে লইয়্যা। সে কি খাইতে পছন্দ করে ছোট মাছের ঝোল? নাকি ইলিশ মাছ, শুটকির ভর্তা নাকি কষা মাংস।

    আমারে হারাইতে দিওনা সোনাই, আমারে হারাইতে দিলে ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো। তোমার জীবন হইবো মাছের মতন, অক্সিজেন শূন্য হইবো ফুসফুস, তোমার জীবনখান আউলািয়া যাইবো। তুমি ভাববা আমিও তোমার অভাবে তোমার মতোন আউলিয়া যামু, অথচ তোমার ধারনা ভুল। তুমি যহন আমার লাইগ্যা মন খারাপ করবা, আমি তহন আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো তার পছন্দ অপছন্দ নিয়া ব্যাস্ত থাকমু। কোন রঙের শাড়িতে আমারে ভালো মানাইবো? কাচের কাকন নাকি মেটালের চুড়ি পরলে মানুষটা খুশি হইবো। কপালে কালো টিপ নাকি ঠোটে লিপিস্টিক, কানের ঝুমকো নাকি চোখের কাজল।

    আমি তোমার লাইগ্যা একচিমটিও মন খারাপ করুম না। আমি মন খারাপ করুম,আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো তাঁরে লইয়্যা, তাঁর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে দেরি হইলে, কোনো অপরিচিত নাম্বার থেইকা তাঁর ফোনে মেয়েলী কন্ঠ ভাইসা আইলে। আমি মন খারাপ করুম তার শার্টে লম্বা চুল পাইলে।

    আমি তোমার লাইগ্যা কাইন্দা কাইন্দা আর চোখ ফুলামুনা, রাইত জাইগা চোখের নিচে দাগ ফালামুনা। আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো, আমি তার বুকে শুইয়া বাবুর নাম নিয়া মিষ্টি ঝগড়া করুম, হানিমুনের আলাপ উঠতেই লজ্জাতে গাল করুম লাল লাল। তুমি যহন আমার অভাবে নরম ঠোঁটে সিগারেট ঠাইসা দিবা, আমি তহন আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো, তাঁর ঠোঁটে চুমু খামু, নরম আঙুলে শক্ত কইরা ধরুম চুলে।

    আমারে হারাইতে দিওনা সোনই, আমারে হারাইতে দিলে তোমার ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো।

    যেই আমি তোমারে নাকের নঁথে আটকাইবার চাইলাম, শাড়ির আঁচলে বাধঁতে চাইলাম, আলুথালু কইরা একটা জীবন তোমার লগে সংসার কইরা কাটাইয়া দিবার চাইলাম, সেই আমি তোমারে ভুইলা যামু। কী বিশ্রী ভাবে'ই না ভুইলা যামু।

    নিজেরে বুঝামু আমি তুমি থাকলে যেই সংসার হইতো এখনও সেই সংসার হইবো, তুমি রাইখা দিলে তোমার লগে আর ফিরাইয়া দিলে আলাদা মানুষ, নিয়ম-কানুন সব'তো একওই।

    লেখা: আরিফ হুসাইন
    #বৃহস্পপতিবার
    আমারে হারাইতে দিওনা সোনাই, আমারে হারাইতে দিলে তোমার ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো। মন খারাপ হইবো কইতাছিনা, তয় তোমার মুখে অরুচি বাসা বাঁধবো, তিন-চারদিন তুমি ভাত সামনে লইয়্যা বইয়া থাকবা কিন্তু খাইবার পারবা না। একটা লোকমা দিয়া পরের লোকমা গলায় আটকাইয়া যাইবো, তুমি ভাববা আমি তোমারে মনে করতাছি। অথচ আমার মনের আনাচে-কানাচে কোথাও তুমি থাকবা না। আমি তোমারে ভুইলা যামু, আমি তখন ব্যাস্ত থাকুমু,আমারে যারে বুকে হারাইতে দিছো তারে লইয়্যা। সে কি খাইতে পছন্দ করে ছোট মাছের ঝোল? নাকি ইলিশ মাছ, শুটকির ভর্তা নাকি কষা মাংস। আমারে হারাইতে দিওনা সোনাই, আমারে হারাইতে দিলে ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো। তোমার জীবন হইবো মাছের মতন, অক্সিজেন শূন্য হইবো ফুসফুস, তোমার জীবনখান আউলািয়া যাইবো। তুমি ভাববা আমিও তোমার অভাবে তোমার মতোন আউলিয়া যামু, অথচ তোমার ধারনা ভুল। তুমি যহন আমার লাইগ্যা মন খারাপ করবা, আমি তহন আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো তার পছন্দ অপছন্দ নিয়া ব্যাস্ত থাকমু। কোন রঙের শাড়িতে আমারে ভালো মানাইবো? কাচের কাকন নাকি মেটালের চুড়ি পরলে মানুষটা খুশি হইবো। কপালে কালো টিপ নাকি ঠোটে লিপিস্টিক, কানের ঝুমকো নাকি চোখের কাজল। আমি তোমার লাইগ্যা একচিমটিও মন খারাপ করুম না। আমি মন খারাপ করুম,আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো তাঁরে লইয়্যা, তাঁর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে দেরি হইলে, কোনো অপরিচিত নাম্বার থেইকা তাঁর ফোনে মেয়েলী কন্ঠ ভাইসা আইলে। আমি মন খারাপ করুম তার শার্টে লম্বা চুল পাইলে। আমি তোমার লাইগ্যা কাইন্দা কাইন্দা আর চোখ ফুলামুনা, রাইত জাইগা চোখের নিচে দাগ ফালামুনা। আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো, আমি তার বুকে শুইয়া বাবুর নাম নিয়া মিষ্টি ঝগড়া করুম, হানিমুনের আলাপ উঠতেই লজ্জাতে গাল করুম লাল লাল। তুমি যহন আমার অভাবে নরম ঠোঁটে সিগারেট ঠাইসা দিবা, আমি তহন আমারে যার বুকে হারাইতে দিছো, তাঁর ঠোঁটে চুমু খামু, নরম আঙুলে শক্ত কইরা ধরুম চুলে। আমারে হারাইতে দিওনা সোনই, আমারে হারাইতে দিলে তোমার ম্যালা ক্ষয়ক্ষতি হইবো। যেই আমি তোমারে নাকের নঁথে আটকাইবার চাইলাম, শাড়ির আঁচলে বাধঁতে চাইলাম, আলুথালু কইরা একটা জীবন তোমার লগে সংসার কইরা কাটাইয়া দিবার চাইলাম, সেই আমি তোমারে ভুইলা যামু। কী বিশ্রী ভাবে'ই না ভুইলা যামু। নিজেরে বুঝামু আমি তুমি থাকলে যেই সংসার হইতো এখনও সেই সংসার হইবো, তুমি রাইখা দিলে তোমার লগে আর ফিরাইয়া দিলে আলাদা মানুষ, নিয়ম-কানুন সব'তো একওই। লেখা: আরিফ হুসাইন #বৃহস্পপতিবার
    Love
    Like
    6
    ·186 Views ·0 Reviews
  • তাহমিদ ভাইয়ের বাবার অবস্থা ভালো না।

    প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে।

    শাহাদাত এখনও বাসাতেই আছে। এখন পর্যন্ত ওর গায়ে ফুলের টোকাও পড়ে নাই।

    তাহমিদ ভাইয়ের বাবার উপরের হামলা এক অর্থে আমাদের উপর হামলাও।

    আমার খালি এটুকু মনে থাকবে, ধানমন্ডি ৩২ ভেঙে আর আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করে একটা ছেলে ক্রমাগত ফাইট করে গেছে।

    ৩ মাস ধরে সরকারের কাছে প্রোটেকশন চাইয়া গেছে।

    সরকার কিছুই করে নাই। জাস্ট কিচ্ছু না।

    যখন তাহমিদ ভাইয়ের বাবা রক্তাক্ত হচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের জুলাই এর ঠিকাদাররা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করছিলো চারপাশ।

    মানে আমি আপনি মরলেও সর্বোচ্চ দুইটা স্লোগান পাবেন।

    এর বেশি কিছু পাবেন না।

    হাসিনার বাংলাদেশে মানুষের চে চেতনার দাম বেশি ছিলো।

    আমরা চাইছিলাম এমন এক বাংলাদেশ, যেই বাংলাদেশে চেতনার চে মানুষের দাম হবে বেশি। ৫ আগস্টের পর আমাদের আশা ছিলো এমন এক বাংলাদেশের, যেই বাংলাদেশে কথার দেশপ্রেমের চে কাজের দেশপ্রেমটা বেশি দেখবো।

    হলো না।

    নেতারা এসে ফেসবুকে বলছেন, ৪৭ আমার, ৭১ আমার, ২৪ আমার।

    একেবারে দেশপ্রেমের নহর বইয়ে দিতেছেন।

    অথচ ঠিক ঐ সময়ে তাদেরই একজন কমরেড রক্তাক্ত হচ্ছে, তারা প্রোটেকশন দিচ্ছেন না।

    তাই জুলাই এর নয় মাস পরেও তাহমিদ ভাইয়ের বাবা হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে।

    সন্ত্রাসী শাহাদত নিজের বাসায় বসে আরাম কেদারায় আরাম করছেন।

    ইউনূস আশার বাণী শোনাচ্ছেন, সারা বিশ্ব নাকি আমাদের দিকে তাকাই আছে।

    আর ছাত্রনেতারা এরে ওরে রাজাকার ট্যাগ দিতেছেন।

    ওদিকে বিপ্লবীরা মরতেছে।

    হাসিনার সময়েও মরেছে।

    এখনও মরেছে।

    তাহমিদ ভাইয়ের এই ঘটনা আমাদের বুঝাইয়া দেয়, এই বিপ্লব বেহাত হইছে। হেলাল হাফিজ লিখেছিলেন,

    কথা ছিলো, একটা পতাকা পেলে,
    আর লিখবো না দুঃখের কবিতা।

    আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, এরপর সেই স্বাধীনতা এমন কিছু মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি, যারা আমাদের রক্ত জানের নিরাপত্তাটাও দিতেছে না। তাদের নিরাপত্তা ঠিক আছে, তাদের ক্ষমতা ঠিক আছে, শুধু আমাদের বেলায় সরকার পারতেছে না।

    তাই এ দেশে জুলাই আসে,জুলাই যায়।

    নেতাদের অবস্থা পরিবর্তন হলেও তাহমিদ ভাইয়ের মতো আমরা সাধারণ মানুষদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না!!
    #Sadiqur Rahman Khan
    তাহমিদ ভাইয়ের বাবার অবস্থা ভালো না। প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে। শাহাদাত এখনও বাসাতেই আছে। এখন পর্যন্ত ওর গায়ে ফুলের টোকাও পড়ে নাই। তাহমিদ ভাইয়ের বাবার উপরের হামলা এক অর্থে আমাদের উপর হামলাও। আমার খালি এটুকু মনে থাকবে, ধানমন্ডি ৩২ ভেঙে আর আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করে একটা ছেলে ক্রমাগত ফাইট করে গেছে। ৩ মাস ধরে সরকারের কাছে প্রোটেকশন চাইয়া গেছে। সরকার কিছুই করে নাই। জাস্ট কিচ্ছু না। যখন তাহমিদ ভাইয়ের বাবা রক্তাক্ত হচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের জুলাই এর ঠিকাদাররা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করছিলো চারপাশ। মানে আমি আপনি মরলেও সর্বোচ্চ দুইটা স্লোগান পাবেন। এর বেশি কিছু পাবেন না। হাসিনার বাংলাদেশে মানুষের চে চেতনার দাম বেশি ছিলো। আমরা চাইছিলাম এমন এক বাংলাদেশ, যেই বাংলাদেশে চেতনার চে মানুষের দাম হবে বেশি। ৫ আগস্টের পর আমাদের আশা ছিলো এমন এক বাংলাদেশের, যেই বাংলাদেশে কথার দেশপ্রেমের চে কাজের দেশপ্রেমটা বেশি দেখবো। হলো না। নেতারা এসে ফেসবুকে বলছেন, ৪৭ আমার, ৭১ আমার, ২৪ আমার। একেবারে দেশপ্রেমের নহর বইয়ে দিতেছেন। অথচ ঠিক ঐ সময়ে তাদেরই একজন কমরেড রক্তাক্ত হচ্ছে, তারা প্রোটেকশন দিচ্ছেন না। তাই জুলাই এর নয় মাস পরেও তাহমিদ ভাইয়ের বাবা হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। সন্ত্রাসী শাহাদত নিজের বাসায় বসে আরাম কেদারায় আরাম করছেন। ইউনূস আশার বাণী শোনাচ্ছেন, সারা বিশ্ব নাকি আমাদের দিকে তাকাই আছে। আর ছাত্রনেতারা এরে ওরে রাজাকার ট্যাগ দিতেছেন। ওদিকে বিপ্লবীরা মরতেছে। হাসিনার সময়েও মরেছে। এখনও মরেছে। তাহমিদ ভাইয়ের এই ঘটনা আমাদের বুঝাইয়া দেয়, এই বিপ্লব বেহাত হইছে। হেলাল হাফিজ লিখেছিলেন, কথা ছিলো, একটা পতাকা পেলে, আর লিখবো না দুঃখের কবিতা। আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, এরপর সেই স্বাধীনতা এমন কিছু মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি, যারা আমাদের রক্ত জানের নিরাপত্তাটাও দিতেছে না। তাদের নিরাপত্তা ঠিক আছে, তাদের ক্ষমতা ঠিক আছে, শুধু আমাদের বেলায় সরকার পারতেছে না। তাই এ দেশে জুলাই আসে,জুলাই যায়। নেতাদের অবস্থা পরিবর্তন হলেও তাহমিদ ভাইয়ের মতো আমরা সাধারণ মানুষদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না!! #Sadiqur Rahman Khan
    Love
    Like
    7
    ·281 Views ·0 Reviews
  • "কারো বিশ্বাস ভাঙিও না, কারণ একবার বিশ্বাস
    ভাঙলে সে আর একবারের জন্যও বিশ্বাস করবে না
    "কারো বিশ্বাস ভাঙিও না, কারণ একবার বিশ্বাস ভাঙলে সে আর একবারের জন্যও বিশ্বাস করবে না
    Love
    4
    1 Comments ·110 Views ·0 Reviews
  • প্রকৃতি — জীবনের নিঃশব্দ কবিতা

    প্রকৃতি আমাদের চারপাশের এক অলৌকিক সৌন্দর্য, যা প্রতিটি নিঃশ্বাসে জীবনের ছোঁয়া এনে দেয়। গাছের পাতায় ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির কুজন—এই সব কিছু যেন জীবনের এক নিরব ছন্দ।

    আজকের কংক্রিটের এই দুনিয়ায়, আমরা অনেকেই ভুলে যাই প্রকৃতি কতটা দরকারি আমাদের শরীর ও মনের জন্য। কিছুক্ষণ নিরিবিলি সবুজে চোখ রাখা মানে আত্মাকে প্রশান্ত করা। শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস নয়, প্রকৃতিই আমাদের শেখায় ধৈর্য, ভারসাম্য এবং কৃতজ্ঞতা।

    চলো, আমরা প্রকৃতিকে ভালোবাসি। গাছ লাগাই, নদী-নালা রক্ষা করি, প্লাস্টিক কমাই। প্রকৃতি আমাদের যত্ন করে, আমরাও তার বন্ধুর মতো হই।

    প্রকৃতি রক্ষা মানে নিজেকে রক্ষা করা।
    #NatureLover #GreenLife #প্রকৃতি_আমার_ভালোবাসা
    🌿 প্রকৃতি — জীবনের নিঃশব্দ কবিতা 🌿 প্রকৃতি আমাদের চারপাশের এক অলৌকিক সৌন্দর্য, যা প্রতিটি নিঃশ্বাসে জীবনের ছোঁয়া এনে দেয়। গাছের পাতায় ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির কুজন—এই সব কিছু যেন জীবনের এক নিরব ছন্দ। আজকের কংক্রিটের এই দুনিয়ায়, আমরা অনেকেই ভুলে যাই প্রকৃতি কতটা দরকারি আমাদের শরীর ও মনের জন্য। কিছুক্ষণ নিরিবিলি সবুজে চোখ রাখা মানে আত্মাকে প্রশান্ত করা। শুধু শ্বাস-প্রশ্বাস নয়, প্রকৃতিই আমাদের শেখায় ধৈর্য, ভারসাম্য এবং কৃতজ্ঞতা। চলো, আমরা প্রকৃতিকে ভালোবাসি। গাছ লাগাই, নদী-নালা রক্ষা করি, প্লাস্টিক কমাই। প্রকৃতি আমাদের যত্ন করে, আমরাও তার বন্ধুর মতো হই। 🍃 প্রকৃতি রক্ষা মানে নিজেকে রক্ষা করা। #NatureLover #GreenLife #প্রকৃতি_আমার_ভালোবাসা
    Love
    Like
    4
    1 Comments ·79 Views ·0 Reviews
  • প্রকৃতি (Nature) আমাদের পৃথিবীর একটি অপরিহার্য এবং অনন্য দান। এটি শুধু গাছপালা, নদী, পাহাড় বা প্রাণীকুলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—প্রকৃতি মানে হলো জীবনের চক্র, ভারসাম্য এবং সৌন্দর্যের প্রতিফলন।

    প্রকৃতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:

    জীবনধারণের উৎস: বাতাস, পানি, খাদ্য—সবই আমরা প্রকৃতি থেকেই পাই।

    মানসিক শান্তি: সবুজ প্রকৃতি, নদীর ধারা, পাখির কুজন আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

    পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: গাছপালা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

    প্রেরণার উৎস: প্রকৃতি অনেক কবি, চিত্রশিল্পী ও বিজ্ঞানীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

    আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি ও রক্ষা করি, সে আমাদের সুস্থ, সবল ও সুন্দর জীবন উপহার দেয়।
    প্রকৃতি (Nature) আমাদের পৃথিবীর একটি অপরিহার্য এবং অনন্য দান। এটি শুধু গাছপালা, নদী, পাহাড় বা প্রাণীকুলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—প্রকৃতি মানে হলো জীবনের চক্র, ভারসাম্য এবং সৌন্দর্যের প্রতিফলন। প্রকৃতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো: জীবনধারণের উৎস: বাতাস, পানি, খাদ্য—সবই আমরা প্রকৃতি থেকেই পাই। মানসিক শান্তি: সবুজ প্রকৃতি, নদীর ধারা, পাখির কুজন আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: গাছপালা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রেরণার উৎস: প্রকৃতি অনেক কবি, চিত্রশিল্পী ও বিজ্ঞানীদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি ও রক্ষা করি, সে আমাদের সুস্থ, সবল ও সুন্দর জীবন উপহার দেয়।
    Love
    Like
    7
    2 Comments ·89 Views ·0 Reviews
  • (এক)

    শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল।

    শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল।

    তারপর শুভকে ডাকল,শোন।

    শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস?

    শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে?

    শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে।

    শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে?

    আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়।



    ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে?

    ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর!

    ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে?

    ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে।



    শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি?

    ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি।

    ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি।

    ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি।



    (দুই)

    শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল।

    বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে।

    শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না।

    তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না।

    শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না।

    তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না।

    এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল।

    শক্তি মনে মনে অল্প হাসল।

    তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল।

    বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে।

    এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে।

    চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে।

    একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে।

    কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা।

    শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে।

    তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না।

    সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল।

    প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে।

    তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে।

    তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল।

    সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে।

    পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল।

    সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই।

    ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি।

    নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে।

    সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে।

    হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল।

    যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল।

    মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল।

    আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে।

    ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল।

    শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে।



    (তিন)

    দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল।

    প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল।

    শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো?

    লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন?

    ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না।

    ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না।

    তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য।

    তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী?



    লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে।

    তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই।

    আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে।

    কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

    রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক।

    ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না।

    মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়।

    কেউ কানে তুললেন না।

    তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব?

    তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল।

    মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব।

    তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম।

    বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর!

    কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি।

    তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে।

    এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার।

    কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া?

    আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না।



    (চার)

    কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল।

    শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে!

    তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন।

    জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন।

    ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই।

    শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে।

    বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন।

    শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে?

    শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম।

    তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন।

    সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়।

    তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন।

    -----সমাপ্ত----


    (এক) শুভ বলে উঠল,চল শক্তি এবার শুয়ে পড়া যাক।রাত অনেকটা হল। শক্তি সাবধানে এদিক,ওদিক তাকিয়ে টিভিটা বন্ধ করে দিল। তারপর শুভকে ডাকল,শোন। শুভ সামনে আসার পর বলল,প্যাকেটটা কোথায় রেখেছিস? শুভ চোখদুটো বড়,বড় করে বলে উঠল,তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আমি তোকে আসার আগেই বলেছিলাম।ওসব বাজে জিনিস এখানে একদম চলবে না। তখন কী বলেছিলি মনে আছে? শক্তি বলে উঠল, সব মনে আছে।তোর মত অত শর্ট মেমোরি আমার নয়।ক্যামেস্ট্রিতে দু নাম্বার হলেও তোর থেকে বেশি পেয়েছি।আরে ইয়্যার আমি কী তোদের বাড়িতে খাচ্ছি নাকি? চল বাইরে।মাঠের দিকে খোলা হাওয়ায় একটু পায়চারি করে আসি।বিহু তিনবার কল করেছিল।ঠিক মত কথাও বলতে পারিনি।তোদের এইটুকু ঘরে ..এত মানুষের সব সময় আসা-যাওয়া! পাশ থেকে কে কি আওয়াজ দিয়ে চলে যাবে।সেই ভয়ে পরে করব বলে পাস কাটিয়ে গেছি।একবার ওর সাথেও খুলে কথা বলা হবে। শুভ একটু হেসে জবাব দিল,তোর মাথা,টাথা খারাপ হলেও আমার তো ঠিক আছে। এই সময় আর বাইরে? আমাদের গাঁয়ের কথা জানিস কিছু?চুপচাপ সিগারেটের কথা ভুলে শুয়ে পড়। ----কেনরে তোদের গায়ে কী রাতের বেলায় আমজাদ খান ঘোড়ায় চেপে ডাকাতি করতে আসে? ----তার থেকেও ভয়ঙ্কর! ---তাহলে নিশ্চয়ই সানি লিওন হবে? ----ইয়ার্কি না শক্তি।আমাদের গাঁয়ে রাত নটার পর আর কেউ বাইরে ঘোরে না। বছর তিনেক হল ভূতের উপদ্রব বেড়েছে।সেই ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাইরে বেরোই না। অনেকেই সেই ভূতের দেখা পেয়েছে। শক্তি কথাটা শুনে একটু হেসে বলে উঠল, আরে কিচ্ছু হবে না শুভ।তুই না সায়েন্সের স্টুডেন্ট! এসব ফালতু জিনিসেকে কবে থেকে বিশ্বাস করতে শুরু করলি? ---ফালতু! তোর কী মনে হয়,আমি ফালতু বকছি?আরে বাবা...আমার কাকু নিজের চোখে দু-দুবার দেখেছে।একবার তো বাড়ি এসেই দুম করে উঠোনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।ভাগ্যিস সেদিন আমি হোস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিলাম তাই রেহায়।মুখে জলের ঝাপটা আর নার্ভ পয়েন্টে আকুপাংচার করে জ্ঞান ফেরায়।তারপর নিজের মুখে আমি সব কথা সেদিন শুনেছিলাম। দ্যাখ শক্তি তুই সাধ করে আমাদের বাড়ি একদিন ঘুরতে এসেছিস।জেনেশুনে তোকে বিপদে ফেলতে পারিনা।আর আমারো শুধু,শুধু ঝুঁকি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।একটা রাত সিগারেট না খেয়ে অনায়াসে থাকা যায়।আমি তো সাতদিন পর্যন্ত থেকেছি।আর বিহুকে বোঝানোর দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দে। চল এবার শুয়ে পড়ি। ----তাহলে চল ছাদে গিয়ে দু টান মেরে আসি। ----ওখানে দাদু আর বাবা ঘুমোচ্ছে।সারা গ্রীষ্মকাল ওখানেই ঘুমোয়।আর বাথরুমে তো একদম চলবে না। কে,কোন সময় ঢুকবে..কোন ঠিক আছে কী?..ভস..ভস গন্ধ বেরুবে।ও সব বেহায়াগিরী ছাড়।চল গিয়ে শুয়ে পড়ি।একবার চোখ লাগলেই সকাল।তারপর আমি তোকে পুকুর পাড়ে নিয়ে যাব ।যতগুলো ইচ্ছে টানবি। (দুই) শক্তি মোবাইলের সুইচ টিপে একবার সময়টা দেখে নিল। বারোটা পনেরো।পাশেই শুভ মড়ার মত শুয়ে আছে।ঘর্ ঘর্ করে নাক ডাকছে। শুধু তার দুচোখে ঘুম নেই। সিগারেটের নেশাটা মস্তিস্কের স্নায়ুগুলোকে শিথিল হতে দিচ্ছে না। তাই এখনো অব্দি দু চোখ এক হল না। শক্তি বুঝে গেল।সিগারেটের ধোঁয়া অল্প না পেলে তার ঘুম আর আসবে না। তাই সাবধানে আস্তে করে ওঠে পড়ল।ফ্ল্যাসটা না জ্বেলে শুধু স্ক্রীনের আলোতে শুভর জিন্সের পকেটদুটো ঘাঁটল।প্যাকেটটা হাতে লাগল না। এবার সে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বালিসের তলায় ধীরে, ধীরে হাতটা বোলাল।প্যাকেট এবং মাচিস দুটোই পাওয়া গেল। শক্তি মনে মনে অল্প হাসল। তারপর পা টিপে,টিপে সদর দরজার লকটা নিঃশব্দে খুলে পরে সেটা আলতো ভেঁজিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে বাইরে বেরিয়ে পড়ল। বাইরের বাতাসটা একটু ঠান্ডা হয়ে এসেছে। এলোমেলা ঝাপটা মারছে।বেশ সুন্দর একটা অনুভূতি ফুটে উঠল শক্তির সারা গায়ে। চাঁদটা অর্ধেক হয়ে এসেছে।তবু জ্যোৎস্নাটা এখনো বেশ উজ্বল আছে। একেবারে দিন বলেই মনে হচ্ছে। কিছুদূর হেঁটে যেতেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা কালভার্ট পাওয়া গেল।উচু মত করা আছে।বসার একদম উপযুক্ত জায়গা। শক্তি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরাল।দু টান দিয়েছে। তারপরেই বিহুর কথা মনে পড়ে গেল।রাতও হয়েছে।আজ আর থাক।ওকে অসময়ে জাগিয়ে তোলাটা ভাল হবে না। সিগারেটের প্রথম ছাঁইটা আঙুল ঠুকে ফেলতে গিয়ে প্রথম শব্দটা কানে এল। প্রথমে ভাবল নিশ্চয়ই আশেপাশে কোথাও ইঁদুর চেঁচাচ্ছে।সেই রকম ধরণের একটা চি,চি আওয়াজ আসছে। তারপরেই বুঝল।না,তা নয়।কারণ ডাকটা ক্রমশ জোরে শোনা যাচ্ছে। তখনি একটা বিকট শব্দ তার কানের পর্দায় এসে ধাক্কা খেল। সম্ভবত রাতচরা পাখিদের মধ্যে ঝগড়ার কারণে হবে। পিছন ফিরে যেই তাকিয়েছে,এমনি তার হাত,পা ঠান্ডা হয়ে এল। সত্যি সত্যিই একটা প্রকান্ড মূর্তি হাত দশেক দূরত্বেই একদম খাঁড়া দাঁড়িয়ে আছে।শুধু অবয়বটুকুই সে বুঝতে পারল।হাত,পা,মুখ আছে কিনা জানা নেই। ভয়ে গলাটা শুকিয়ে আসছে ঠিক,তবু হিম্মতটুকু পুরোপুরি হারায়নি। নিজেকে বোঝাল। নিশ্চয়ই কোন কাপড়,টাপড় টাঙানো আছে। সেটা জ্যোৎস্নার আলোয় অন্য রূপ ধারণ করেছে। হাতের সিগারেটটাই আর একটা টান দিয়ে শক্তি, মূর্তিটার দিকে ধীর পায়ে অগ্রসর হতে লাগল। যত ভয় পাচ্ছে..তত ঘন,ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছে।সামনে যেতেই সিগারেটের আগুনটা ছ্যাত করে আঙুলের ডগায় লাগল। মোক্ষম সময়ে শেষ হয়ে গেল। আর একটা ধরাতে গিয়ে দেখল অবয়বটা নড়ছে। ঝপাত করে একটা পর্দা আকাশে ওড়ে গেল।তার ভেতর থেকে বীভৎস একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল। শক্তি ছুটতে গিয়ে টাল খেয়ে ধড়াম করে শুকনো মাটিতে পড়ে গেল।সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গেছে। (তিন) দু হাতের তালির শব্দ পেয়ে মানুষটা মোমবাতির আলোয় ঘুরে দাঁড়াল। প্রায় ছ ফুট উচ্চতা।তাগড়ায় চেহারা।এক মাথা ঝাঁকড়া চুল। শক্তি হাততালি থামিয়ে বলে উঠল, আর একটা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আপনার তো আবার সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য হয় না।...কী ঠিক বলেছি তো? লোকটা জড়ানো গলায় বলে উঠল,আ...আ....পনি!!..এখানে কী করে এলেন? ----প্রথমেই বলে রাখি।আমি কিন্তু শহরে বড় হয়েছি।আর ভূতকে আমি কোন কালেই ভয় পাই না।আমি বিজ্ঞানের ছাত্র বলে বলছি না। আসলে ওসব আমার ধাতে নেয়।আমি যেমন ভগবান আছে বলি বিশ্বাস করি না।তেমনি ভূতকেও না। ভূত যে সিগারেটের ধোঁয়ায় কাশে এটা আমার ঠিক ধারণা ছিল না। তাই ইচ্ছে করেই অজ্ঞান হওয়ার নাটক করে দুম করে পড়ে গেলাম।ঠিক তার পরের দৃশ্যগুলো দেখার জন্য। তারপর পিছু নিয়ে এখানে এসে পৌঁছলাম।তা ভূতবাবু, কেন করেন এসব? একটু খুলে বলবেন কী? লোকটা বুঝে গেল।আর লুকিয়ে কোন লাভ হবে না। একদম হাতে,নাতে ধরা পড়ে গেছে। তাই শান্ত গলায় বলে উঠল, আমার নাম মিলন চৌধুরি।বাংলায় এম.এ করেছি।তারপর অনেকদিন যাবৎ বেকার বসে ছিলাম।এই কয়েক বছর আগে ব্লক অফিসে একটা ছোটখাটো কাজ পেয়েছি।বাড়িতে একা থাকি।মা,বাবা কেউ বেঁচে নেই। বিয়েও করিনি।বেকার ছিলাম তাই। আসলে শিক্ষিত বলেই কষ্ট হত। জন্মভূমির বেহাল অবস্থা দেখে। কয়েক বছর আগে গ্রামটা একেবারে নরকপুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাত হলেই কুপির আলোয় ঝোঁপে,ঝাড়ে সর্বত্র জুয়াখেলার আসর বসত।তারসাথে চলত চোলায় মদের ঠেক। ঘরে,ঘরে অশান্তি লেগেই ছিল।তাছাড়া মানুষজন রাতের অন্ধকারে রাস্তার দুদিকে মল ত্যাগ করে একেবারে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে রেখেছিল। আমি ব্লক থেকে বি.ডি.ও সাহেবকে ডেকে গ্রামের সমস্ত পরিস্থিতি দেখায়।উনি ঘরে,ঘরে শৌচালয় করার ডাক দিলেন।কেউ আর এগিয়ে এলেন না। মাইকে করে ঘোষণা করা হল।যাতে রাতে জুয়ো এবং মদের আড্ডা বন্ধ করা হয়। কেউ কানে তুললেন না। তখনি আমি একদিন গভীরভাবে চিন্তা করতে বসলাম।কী ভাবে জন্মভূমির এই জঞ্জালকে সাফায় করব? তখনি হঠাৎ মাথার মধ্যে বুদ্ধিটা খেলে গেল। মানুষ বিনম্র মানাকে উপেক্ষা করে।কিন্তু ভূতের ভয়কে উপেক্ষা করার সাহস কারু নেয়। তাই আমি ঠিক করলাম।এবার থেকে আমি ভূত হব। তাই পরের রাত থেকেই আমি নেমে পড়লাম। বিভিন্ন রকম ভূতের বই পড়ে ভূত সম্বন্ধে নানা ধারণা জোগাড় করে ফেললাম।সেইমত সবাইকে ভয় দেখাতাম।ভূতকে আমি বিশ্বাস করি না।তবে মানুষের নৈতিক অধঃপতনকে অবশ্যই করি।যা ভূতের ভয় থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর! কিন্তু গাঁয়ের সাধারণ মানুষ সেসব বোঝেন না। তাই এসব করতে বাধ্য হয়েছি। তার ফলে আজ গ্রামের প্রত্যেক ঘরে পায়খানা,বাথরুম হয়েছে। এখন রাত কেন দিনের বেলাতেও অনেকেই মাঠে পায়খানা করেন না। ভূতের ভয়ে,জুয়ো,মদ সব বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অন্য গ্রামে বসে। এখন যা পরিস্থিতি সব গাঁয়ে আমার মত একজন করে শিক্ষিত,বিবেকবান ভুতের খুব দরকার। কিন্তু কে করবে এসব? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে? রাতের ঘুম বিসর্জণ দিয়ে?শুধু আমার মত একজন পাগল ছাড়া? আপনি অনায়াসে সত্য ঘটনাটা সবাইকে জানাতে পারেন।তবে ভেবে দেখুন...তার ফলটা কিন্তু এই গ্রামের পক্ষে মোটেও ভাল হবে না। (চার) কানে,কানে খবরটা এই ভর রাতেও চাউর হয়ে গেল। শুভদের বাড়ি ঘুরতে আসা শহুরে ছেলেটাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিক ভূতে টেনেছে! তাই এই রাত তিনটের সময় সকলে লাইট নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে শক্তিকে খুঁজতে বেরিয়েছেন। জানলার ফাঁকে গ্রামবাসিদের হৈ চৈ শব্দ শুনে মিলন এবং শক্তি বাইরে তাকিয়ে দেখল।সকলেই শক্তিকে খুঁজছেন। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মিলন বলে উঠল, আপনার আর ভেতরে থাকাটা ভাল হবে না। চলুন দেখা দিই। শক্তি শান্ত গলায় বলল,ঠিক বলেছেন।আসুন তাহলে। বাইরে বেরুতেই একজনের নজরে পড়ে গেল।তিনিই চিৎকার করে সকলকে ডাকলেন। শুভ হাঁপাতে,হাঁপাতে বলে উঠল,কোথায় ছিলি এত রাতে? তোকে আমি কত করে মানা করলাম।বেরুবি না। কেন এলি তুই বাইরে? শক্তি বলে উঠল,আমাকে ডাক পাড়ছিল তো।শক্তি আয়...শক্তি আয় বলে ।আমি ভাবলাম..কেউ বোধ হয় বিপদে পড়ে আমাকে সাহায্য করার জন্য ডাকছেন? তাই আমি বেরুলাম। তখনি এই ভদ্রলোক বাইরে আমাকে দেখে থামালেন।নিজের কাছে ডেকে বসালেন।তারপর সব কথা খুলে বললেন।আমাকে নাকি ভূতে পেয়েছে।তাই উনি আমাকে কোথাও যেতে দিলেন না। নিজের কাছে টেনে বসিয়ে রাখলেন। সবাই বলে উঠলেন,যাক এই যাত্রায় বড় বেঁচে গেছো।মিলনের দয়ায়।জানো না তো বাপু...এই গ্রামে ইয়া লম্বা,তাগড়ায় চেহারার এক দাপুটে ভূত আছে। সম্ভবত কোন অতৃপ্ত জমিদারের আত্মা,টাত্মা হবে বোধ হয়। তখনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে শক্তি টুক করে মিলনের পা ছুঁয়ে একটা প্রণাম করে বলে উঠল,প্রথম কোন দেবতার আজ দেখা পেলাম।ভাল থাকবেন। -----সমাপ্ত----
    Love
    4
    ·104 Views ·0 Reviews
  • সমস্যা আর সমস্যাশেষ কবে হয়ে এই সমস্যা
    সমস্যা আর সমস্যা😩শেষ কবে হয়ে এই সমস্যা 🙄
    Love
    Like
    8
    ·211 Views ·0 Reviews
  • ছাত্র ভাইয়েরা তোমাদের রাজনীতি আওয়ামিলীগ আর ভারত৷ এই জায়গায় স্থির থাকো জনগন তোমাদের পাশে থাকবে৷
    ছাত্র ভাইয়েরা তোমাদের রাজনীতি আওয়ামিলীগ আর ভারত৷ এই জায়গায় স্থির থাকো জনগন তোমাদের পাশে থাকবে৷
    Love
    4
    ·117 Views ·0 Reviews
  • দুনিয়ার মোহো মায়ার কারণে কবরকে ভুলে গেলে চলবে না,,, কারণ কবরই হলো আমাদের একমাত্র স্থায়ী জায়গা,,, যেখানে আমাদেরকে সারাজীবন থাকতে হবে 🥹
    দুনিয়ার মোহো মায়ার কারণে কবরকে ভুলে গেলে চলবে না,,, কারণ কবরই হলো আমাদের একমাত্র স্থায়ী জায়গা,,, যেখানে আমাদেরকে সারাজীবন থাকতে হবে 🥹😥😥😥
    Love
    Like
    4
    ·163 Views ·0 Reviews
  • তারপর অনেকদিন কথা হয়নি আর হবেও না, শুধু মনে থাকবে এক সময় আমরা অনেক কথা বলেছিলাম।
    তারপর অনেকদিন কথা হয়নি আর হবেও না, শুধু মনে থাকবে এক সময় আমরা অনেক কথা বলেছিলাম।😊💔
    Like
    Love
    Sad
    5
    ·139 Views ·0 Reviews
  • জীবনে একবারও পাত্রপক্ষের সামনে না বসা আমি!
    জীবনে একবারও পাত্রপক্ষের সামনে না বসা আমি!😁
    Love
    Wow
    6
    ·91 Views ·0 Reviews
More Results
Jono Sathi - Bangladeshi Social Media Platform https://jonosathi.com