Upgrade to Pro

গল্পের নাম: “ছায়ার মানুষ”

অধ্যায় ১: দেখা

নীলা ছিল একদম সাধারণ এক মেয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, বই পড়তে ভালোবাসে, বন্ধু বলতে শুধু নিজের ডায়েরি। একলা থাকলেও সে নিঃসঙ্গ ছিল না। কারণ তার জানালার পাশে প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটা ছায়া এসে দাঁড়াত।

সে ছায়া মানুষের মত, কিন্তু কোনো মুখ নেই। শুধু একটা অবয়ব—উঁচু লম্বা ছায়া। প্রতিদিন একই সময়ে, একই জায়গায় এসে দাঁড়াত, নীলা জানত না কে সে। প্রথম প্রথম সে ভয় পেত, তারপর কৌতূহল, তারপর একসময় অভ্যেস হয়ে গেল।

কিছুদিন পর সে ছায়ার সঙ্গে কথা বলা শুরু করল। ছায়া কোনো উত্তর দিত না। তবুও, নীলা তার দিনলিপি, দুঃখ, হাসি, স্বপ্ন সব বলত। মনে হতো, কেউ তাকে শুনছে।

একদিন হঠাৎ ছায়া মাথা নাড়ল। নীলা ভয় পেয়ে গেল, তারপর আনন্দে আত্মহারা। ওটা নড়েছে!

অধ্যায় ২: অদ্ভুত সংযোগ

নীলা ছায়াটাকে নাম দিল—"আরশি"।
আরশির সঙ্গে তার একরকম মানসিক সংযোগ তৈরি হল। নীলা যখন কাঁদত, ছায়া যেন কাঁপত। সে যখন হাসত, ছায়া একটু উজ্জ্বল লাগত।

কিন্তু ওটা কি আসলেই ছায়া? না কি কেউ ওকে দেখছে?

এক রাতে ঘুম থেকে উঠে জানালার দিকে তাকিয়ে নীলা হঠাৎ দেখল, ছায়াটা তার ঘরের মধ্যে চলে এসেছে। আরশি এবার হাত বাড়াল—ধীরে ধীরে, নিঃশব্দে।

নীলা হাত বাড়িয়ে ধরল। তখনই চারপাশ অদ্ভুত ঝাপসা হয়ে গেল। আলো নিভে গেল।
সে জ্ঞান হারাল।

অধ্যায় ৩: ছায়ার জগতে

নীলা যখন জ্ঞান ফেরে, সে দেখে সে এক অদ্ভুত জায়গায়। সবকিছু ছায়ার মত, অথচ স্পষ্ট। শহরের রাস্তা, ঘরবাড়ি, আকাশ—সবই যেন অন্য এক মাত্রায়।

আরশি এবার কথা বলে। তার কণ্ঠে সুরের মত নরম দোল।
"তুমি আমাকে ডেকেছিলে, তাই আমি এসেছি।"

নীলা জানল, আরশি এক ‘ছায়াজাত’ প্রাণী। যারা মানুষের আবেগ খেয়ে বাঁচে। কিন্তু অনেক বছর আগে, এক মানুষের প্রেমে পড়ে আরশি নিজেকে বদলে ফেলে। তার জাতীয় নিয়ম ভেঙে ফেলে। শাস্তি হিসেবে তাকে বন্দি করা হয় ছায়া হয়ে।

আর নীলাই সেই মেয়েটির পূনর্জন্ম—যার জন্য আরশি নিজেকে ত্যাগ করেছিল।

অধ্যায় ৪: ভালোবাসার মূল্য

আরশি আর নীলা একসঙ্গে থাকে সেই ছায়াজগতে। কিন্তু পৃথিবীর সময় থেমে থাকে না। বাস্তব জগতে, নীলার দেহ নিথর পড়ে থাকে। পরিবারের লোকেরা ভাবেন, সে কোমায় চলে গেছে।

ছায়াজগতে আরশি জানায়, যযদিনীলা এখানে বেশি দিন থাকে, সে আর পৃথিবীতে ফিরতে পারবে না।

নীলা দ্বিধায় পড়ে। সে আরশিকে ভালোবাসে, কিন্তু তার বাস্তব জীবন, মা-বাবা, স্বপ্ন—সব ফেলে কীভাবে থাকবে?

আরশি তাকে এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলে।

নীলা বলে, “আমি ফিরে যাব, কিন্তু যদি তুমি কথা দাও, আবার আসবে—আমার স্বপ্নে, আমার একাকীত্বে, আমার কবিতায়।”

আরশি শুধু বলে, “আমি তো তোমার ছায়া, যেখানে আলো থাকবে, আমি থাকব।”

অধ্যায় ৫: ফিরে আসা

নীলা জেগে ওঠে কোমা থেকে, ছয় মাস পরে। সবাই অবাক, ডাক্তাররা ব্যাখ্যা দিতে পারে না। নীলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে চুপ করে।
সন্ধ্যা নামে। জানালার পাশে এক ছায়া এসে দাঁড়ায়।

নীলা হালকা করে হাসে। ডায়েরির পাতায় লেখে—
"ভালোবাসা মানে একসাথে থাকা নয়, পাশে থাকা। অদৃশ্য হয়েও যে ভালোবাসে, সে-ই চিরন্তন।"

এইরকম সুন্দর সুন্দর গল্প পেতে অবশ্যই আইডিতে ফলো দিয়ে পাশেই থাকুন
গল্পের নাম: “ছায়ার মানুষ” অধ্যায় ১: দেখা নীলা ছিল একদম সাধারণ এক মেয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, বই পড়তে ভালোবাসে, বন্ধু বলতে শুধু নিজের ডায়েরি। একলা থাকলেও সে নিঃসঙ্গ ছিল না। কারণ তার জানালার পাশে প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটা ছায়া এসে দাঁড়াত। সে ছায়া মানুষের মত, কিন্তু কোনো মুখ নেই। শুধু একটা অবয়ব—উঁচু লম্বা ছায়া। প্রতিদিন একই সময়ে, একই জায়গায় এসে দাঁড়াত, নীলা জানত না কে সে। প্রথম প্রথম সে ভয় পেত, তারপর কৌতূহল, তারপর একসময় অভ্যেস হয়ে গেল। কিছুদিন পর সে ছায়ার সঙ্গে কথা বলা শুরু করল। ছায়া কোনো উত্তর দিত না। তবুও, নীলা তার দিনলিপি, দুঃখ, হাসি, স্বপ্ন সব বলত। মনে হতো, কেউ তাকে শুনছে। একদিন হঠাৎ ছায়া মাথা নাড়ল। নীলা ভয় পেয়ে গেল, তারপর আনন্দে আত্মহারা। ওটা নড়েছে! অধ্যায় ২: অদ্ভুত সংযোগ নীলা ছায়াটাকে নাম দিল—"আরশি"। আরশির সঙ্গে তার একরকম মানসিক সংযোগ তৈরি হল। নীলা যখন কাঁদত, ছায়া যেন কাঁপত। সে যখন হাসত, ছায়া একটু উজ্জ্বল লাগত। কিন্তু ওটা কি আসলেই ছায়া? না কি কেউ ওকে দেখছে? এক রাতে ঘুম থেকে উঠে জানালার দিকে তাকিয়ে নীলা হঠাৎ দেখল, ছায়াটা তার ঘরের মধ্যে চলে এসেছে। আরশি এবার হাত বাড়াল—ধীরে ধীরে, নিঃশব্দে। নীলা হাত বাড়িয়ে ধরল। তখনই চারপাশ অদ্ভুত ঝাপসা হয়ে গেল। আলো নিভে গেল। সে জ্ঞান হারাল। অধ্যায় ৩: ছায়ার জগতে নীলা যখন জ্ঞান ফেরে, সে দেখে সে এক অদ্ভুত জায়গায়। সবকিছু ছায়ার মত, অথচ স্পষ্ট। শহরের রাস্তা, ঘরবাড়ি, আকাশ—সবই যেন অন্য এক মাত্রায়। আরশি এবার কথা বলে। তার কণ্ঠে সুরের মত নরম দোল। "তুমি আমাকে ডেকেছিলে, তাই আমি এসেছি।" নীলা জানল, আরশি এক ‘ছায়াজাত’ প্রাণী। যারা মানুষের আবেগ খেয়ে বাঁচে। কিন্তু অনেক বছর আগে, এক মানুষের প্রেমে পড়ে আরশি নিজেকে বদলে ফেলে। তার জাতীয় নিয়ম ভেঙে ফেলে। শাস্তি হিসেবে তাকে বন্দি করা হয় ছায়া হয়ে। আর নীলাই সেই মেয়েটির পূনর্জন্ম—যার জন্য আরশি নিজেকে ত্যাগ করেছিল। অধ্যায় ৪: ভালোবাসার মূল্য আরশি আর নীলা একসঙ্গে থাকে সেই ছায়াজগতে। কিন্তু পৃথিবীর সময় থেমে থাকে না। বাস্তব জগতে, নীলার দেহ নিথর পড়ে থাকে। পরিবারের লোকেরা ভাবেন, সে কোমায় চলে গেছে। ছায়াজগতে আরশি জানায়, যযদিনীলা এখানে বেশি দিন থাকে, সে আর পৃথিবীতে ফিরতে পারবে না। নীলা দ্বিধায় পড়ে। সে আরশিকে ভালোবাসে, কিন্তু তার বাস্তব জীবন, মা-বাবা, স্বপ্ন—সব ফেলে কীভাবে থাকবে? আরশি তাকে এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলে। নীলা বলে, “আমি ফিরে যাব, কিন্তু যদি তুমি কথা দাও, আবার আসবে—আমার স্বপ্নে, আমার একাকীত্বে, আমার কবিতায়।” আরশি শুধু বলে, “আমি তো তোমার ছায়া, যেখানে আলো থাকবে, আমি থাকব।” অধ্যায় ৫: ফিরে আসা নীলা জেগে ওঠে কোমা থেকে, ছয় মাস পরে। সবাই অবাক, ডাক্তাররা ব্যাখ্যা দিতে পারে না। নীলা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে চুপ করে। সন্ধ্যা নামে। জানালার পাশে এক ছায়া এসে দাঁড়ায়। নীলা হালকা করে হাসে। ডায়েরির পাতায় লেখে— "ভালোবাসা মানে একসাথে থাকা নয়, পাশে থাকা। অদৃশ্য হয়েও যে ভালোবাসে, সে-ই চিরন্তন।" এইরকম সুন্দর সুন্দর গল্প পেতে অবশ্যই আইডিতে ফলো দিয়ে পাশেই থাকুন 🥰
ডোনেট জনসাথী
Love
Like
3
·142 Views ·0 Reviews
Jono Sathi - Bangladeshi Social Media Platform https://jonosathi.com