• গল্পের নাম: সে প্রতিদিন আসে...

    হাতে লাল গোলাপ আর দু’কাপ চা।
    নরম ঠান্ডা হাওয়া বইছে। রাস্তার পাশে ছোট একটা বেঞ্চে বসে আছে একজন বৃদ্ধ। শীতল চোখে তাকিয়ে আছে সামনের পথটার দিকে—যেন কেউ আসবে, কেউ ফিরবে।

    পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষগুলো মাঝে মাঝে অবাক হয়ে তাকায়, কেউ জিজ্ঞেস করে—
    “কাকু, কাকে জন্যে অপেক্ষা করছেন?”
    বৃদ্ধটি হাসেন, আস্তে বলেন—
    “সে প্রতিদিন আসবে বলেছিল... আমি অপেক্ষা করছি।”

    তাকে কেউ নাম জানে না, কেউ চিনেও না ঠিক করে।
    তবে যারা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যায়, তারা জানে—এই মানুষটি প্রতিদিন এখানে আসে, বিকেল ঠিক পাঁচটায়।

    ---

    এই গল্প শুরু হয়েছিল আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে।

    তারা ছিল এক অসম্ভব রকম সাধারণ দম্পতি—নির্মল ভালোবাসায় ভরা।
    স্ত্রী রূপা খুব সাধারণ গৃহিণী, আর বৃদ্ধ লোকটি—আসাদ সাহেব, একজন অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার।

    তাদের জীবন ছিল ছোট্ট, কিন্তু গোছানো।

    প্রতিদিন বিকেলে, রূপা এক কাপ চা তৈরি করতেন। তারপর বলতেন—
    “এই সময়টা শুধু আমাদের। সারাদিন যত ব্যস্ত থাকো, বিকেলটা কিন্তু আমার জন্য রেখে দিও।”

    এই ছিল তাদের প্রেম—চোখে চোখ রাখা, চা এর কাপে ভাগ করে জীবন দেখা।

    ---

    কিন্তু এক সন্ধ্যায় সব বদলে যায়।
    রূপা আর ফিরে আসেনি।
    হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

    তারপর থেকে আসাদ সাহেবের জীবন থেমে গেলেও, একটা অভ্যাস থেকে গেল—প্রতিদিন বিকেলে দু’কাপ চা বানিয়ে নিয়ে বেঞ্চে বসে থাকা।
    একটা কাপ নিজের জন্য, আরেকটা রূপার জন্য।

    ---

    লোকজন হাসে, কেউ পাগল ভাবে, কেউ আবার করুণার চোখে তাকায়।
    কিন্তু আসাদ সাহেব কারো কথায় কান দেন না।
    কারণ, তিনি জানেন—ভালোবাসা চলে গেলেও, ভালোবাসার মানুষ কখনো পুরোপুরি চলে যায় না।

    তারা থেকে যায়—অভ্যাসে, অপেক্ষায়, আর প্রতিদিনের সেই এক কাপ চায়ের কাপেই।

    ---

    একদিন এক ছোট্ট ছেলে এসে জিজ্ঞেস করল—
    “চাচা, সে কি সত্যিই আসবে?”
    আসাদ সাহেব চায়ের কাপটি ছেলেটার হাতে দিয়ে বললেন—
    “তুই রেখে দে এই কাপটা, যদি কখনো আসে… যেন বোঝে, আমি এখনো ভুলিনি।”

    ---

    শেষ লাইন:

    ভালোবাসা সবসময় পাশে থাকার নাম নয়,
    ভালোবাসা মানে—যে চলে গেছে, তাকেও প্রতিদিন মনে রাখা… নিঃশব্দে, গভীরভাবে।

    ---

    আপনিও কি এমন কাউকে হারিয়েছেন, যাকে আজও প্রতিদিন মনে রাখেন?
    কমেন্টে লিখে জানান, সেই অদৃশ্য ভালোবাসার গল্প।
    গল্পের নাম: সে প্রতিদিন আসে... হাতে লাল গোলাপ আর দু’কাপ চা। নরম ঠান্ডা হাওয়া বইছে। রাস্তার পাশে ছোট একটা বেঞ্চে বসে আছে একজন বৃদ্ধ। শীতল চোখে তাকিয়ে আছে সামনের পথটার দিকে—যেন কেউ আসবে, কেউ ফিরবে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষগুলো মাঝে মাঝে অবাক হয়ে তাকায়, কেউ জিজ্ঞেস করে— “কাকু, কাকে জন্যে অপেক্ষা করছেন?” বৃদ্ধটি হাসেন, আস্তে বলেন— “সে প্রতিদিন আসবে বলেছিল... আমি অপেক্ষা করছি।” তাকে কেউ নাম জানে না, কেউ চিনেও না ঠিক করে। তবে যারা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যায়, তারা জানে—এই মানুষটি প্রতিদিন এখানে আসে, বিকেল ঠিক পাঁচটায়। --- এই গল্প শুরু হয়েছিল আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে। তারা ছিল এক অসম্ভব রকম সাধারণ দম্পতি—নির্মল ভালোবাসায় ভরা। স্ত্রী রূপা খুব সাধারণ গৃহিণী, আর বৃদ্ধ লোকটি—আসাদ সাহেব, একজন অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার। তাদের জীবন ছিল ছোট্ট, কিন্তু গোছানো। প্রতিদিন বিকেলে, রূপা এক কাপ চা তৈরি করতেন। তারপর বলতেন— “এই সময়টা শুধু আমাদের। সারাদিন যত ব্যস্ত থাকো, বিকেলটা কিন্তু আমার জন্য রেখে দিও।” এই ছিল তাদের প্রেম—চোখে চোখ রাখা, চা এর কাপে ভাগ করে জীবন দেখা। --- কিন্তু এক সন্ধ্যায় সব বদলে যায়। রূপা আর ফিরে আসেনি। হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে আসাদ সাহেবের জীবন থেমে গেলেও, একটা অভ্যাস থেকে গেল—প্রতিদিন বিকেলে দু’কাপ চা বানিয়ে নিয়ে বেঞ্চে বসে থাকা। একটা কাপ নিজের জন্য, আরেকটা রূপার জন্য। --- লোকজন হাসে, কেউ পাগল ভাবে, কেউ আবার করুণার চোখে তাকায়। কিন্তু আসাদ সাহেব কারো কথায় কান দেন না। কারণ, তিনি জানেন—ভালোবাসা চলে গেলেও, ভালোবাসার মানুষ কখনো পুরোপুরি চলে যায় না। তারা থেকে যায়—অভ্যাসে, অপেক্ষায়, আর প্রতিদিনের সেই এক কাপ চায়ের কাপেই। --- একদিন এক ছোট্ট ছেলে এসে জিজ্ঞেস করল— “চাচা, সে কি সত্যিই আসবে?” আসাদ সাহেব চায়ের কাপটি ছেলেটার হাতে দিয়ে বললেন— “তুই রেখে দে এই কাপটা, যদি কখনো আসে… যেন বোঝে, আমি এখনো ভুলিনি।” --- শেষ লাইন: ভালোবাসা সবসময় পাশে থাকার নাম নয়, ভালোবাসা মানে—যে চলে গেছে, তাকেও প্রতিদিন মনে রাখা… নিঃশব্দে, গভীরভাবে। --- আপনিও কি এমন কাউকে হারিয়েছেন, যাকে আজও প্রতিদিন মনে রাখেন? কমেন্টে লিখে জানান, সেই অদৃশ্য ভালোবাসার গল্প।
    Like
    Love
    Wow
    3
    · 0 মন্তব্য ·0 শেয়ার ·113 দেখেছে ·0 রিভিউ
  • তারা ঢাকা থেকে এসেছে 🙂
    আমি ঠিক তার পাশাপাশি সিটে বসা, তাদের সামনের সিটে একটা বয়স্ক ভদ্রমহিলা বসে তাদের অনেকক্ষণ যাবত খেয়াল করছেন। আমিও তাদের সবকিছু ফলো করছি। ছেলেটা একমুহূর্তের জন্যও মেয়েটির হাত ছাড়ছে না। ভদ্রমহিলাটা হঠাৎ তাদের জিগ্যেস করলো এমনে যে মাইনসের সামনে হাত দইরা বইয়া আছ বাবা মাইসে তো অনেককিছু কানাকানি করতাছে। তুমি কি হেরে বেশি ভালোবাসো?
    কইত্তে আইছো তোমরা? কই যাইবা? বাড়ি কই? নাম কি তোমডার?
    ছেলেটি বললো চাচি আমার নাম আরিফ ওর নাম হলো তারিন। আমরা ঢাকা থেকে এসেছি।
    আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। দুই বছর হলো আমাদের সম্পর্ক। ওর বড় ভাই আমাদের সম্পর্কের কথা জেনে গেছে তাকে দুইদিন ঘরে আটকে রেখে খুব মেরেছে। তার মা আমাকে পছন্দ করতো তাই আজকে আমরা সুযোগ বুঝে পালিয়ে এসেছি। আসার সময় তার মা আমার হাতে তার মেয়েকে তুলে দিয়ে বললো আমার মেয়ের হাত কখনো ছেড়ো না বাবা, ওর বাবা নেই তুমি তারিনকে কখনো কষ্ট দিও না।
    চাচি ভালোবাসা কি আমি বুঝি না আমি শুধু ওরে বুঝি, যা হবে পরে দেখা যাবে। যা ভাবার ভাবুক লোকে এই হাত আমরণ আগলে রাখবো।

    ভদ্রমহিলাটা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো, আমিও তোমার চাচার লগে ভাইগ্গা আইছিলাম। এই যে হাত ধরলো এক লগে বুড়ো বুড়ি হইলাম। কতো সুখ দুঃখ এক লগে কাটাইলাম বাবা! তোমার চাচা বড় বালা মানুষ আছিলো, পাঁচবছর আগে মইরা গেছে। কবরটা আমার ঘরের জানালার পাশে দিছি, যতোদিন বাঁইচ্চা থাকমু তার কবরটা দেইখা কাটাই দিমু।

    এমন অনেক ছোট বড় ভালোবাসার গল্প আছে আমাদের আসেপাশে। চামড়া ঝুলে যায়, চশমার পাওয়ার বেড়ে যায় তবুও ভালোবাসা কমে না! রাগ, অভিমান, সুখ, দুঃখ নিয়ে তারা একসাথে কাটিয়ে দেয় বেশ কয়েকটি যুগ।
    ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষগুলো। ❤️
    তারা ঢাকা থেকে এসেছে 🙂 আমি ঠিক তার পাশাপাশি সিটে বসা, তাদের সামনের সিটে একটা বয়স্ক ভদ্রমহিলা বসে তাদের অনেকক্ষণ যাবত খেয়াল করছেন। আমিও তাদের সবকিছু ফলো করছি। ছেলেটা একমুহূর্তের জন্যও মেয়েটির হাত ছাড়ছে না। ভদ্রমহিলাটা হঠাৎ তাদের জিগ্যেস করলো এমনে যে মাইনসের সামনে হাত দইরা বইয়া আছ বাবা মাইসে তো অনেককিছু কানাকানি করতাছে। তুমি কি হেরে বেশি ভালোবাসো? কইত্তে আইছো তোমরা? কই যাইবা? বাড়ি কই? নাম কি তোমডার? ছেলেটি বললো চাচি আমার নাম আরিফ ওর নাম হলো তারিন। আমরা ঢাকা থেকে এসেছি। আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। দুই বছর হলো আমাদের সম্পর্ক। ওর বড় ভাই আমাদের সম্পর্কের কথা জেনে গেছে তাকে দুইদিন ঘরে আটকে রেখে খুব মেরেছে। তার মা আমাকে পছন্দ করতো তাই আজকে আমরা সুযোগ বুঝে পালিয়ে এসেছি। আসার সময় তার মা আমার হাতে তার মেয়েকে তুলে দিয়ে বললো আমার মেয়ের হাত কখনো ছেড়ো না বাবা, ওর বাবা নেই তুমি তারিনকে কখনো কষ্ট দিও না। চাচি ভালোবাসা কি আমি বুঝি না আমি শুধু ওরে বুঝি, যা হবে পরে দেখা যাবে। যা ভাবার ভাবুক লোকে এই হাত আমরণ আগলে রাখবো। ভদ্রমহিলাটা একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললো, আমিও তোমার চাচার লগে ভাইগ্গা আইছিলাম। এই যে হাত ধরলো এক লগে বুড়ো বুড়ি হইলাম। কতো সুখ দুঃখ এক লগে কাটাইলাম বাবা! তোমার চাচা বড় বালা মানুষ আছিলো, পাঁচবছর আগে মইরা গেছে। কবরটা আমার ঘরের জানালার পাশে দিছি, যতোদিন বাঁইচ্চা থাকমু তার কবরটা দেইখা কাটাই দিমু। এমন অনেক ছোট বড় ভালোবাসার গল্প আছে আমাদের আসেপাশে। চামড়া ঝুলে যায়, চশমার পাওয়ার বেড়ে যায় তবুও ভালোবাসা কমে না! রাগ, অভিমান, সুখ, দুঃখ নিয়ে তারা একসাথে কাটিয়ে দেয় বেশ কয়েকটি যুগ। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষগুলো। ❤️
    Love
    Wow
    Sad
    4
    · 0 মন্তব্য ·0 শেয়ার ·198 দেখেছে ·0 রিভিউ
Jono Sathi – Connecting Bangladesh https://jonosathi.com