#অসহ্য_থেকে_অনিবার্য
#পর্ব_১
#লেখিকা_তাসনিম_তালুকদার_বুশরা
[কপি করা নিষিদ্ধ 🚫]
বাসর ঘরে এক কোণে গুটিশুটি হয়ে বসে আছে আলো,প্রতিটা মেয়েরি বিয়ে নিয়ে অনেক সখ থাকে সপ্ন থাকে আলোও ছিলো অনেক সপ্ন কিন্তু থাকলেই যে সব পূর্ণ হতে হবে তা কোথায় লেখা আছে..?
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আলোর বিয়ে টা হলো ওর ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও, আর এখন বসে আছে তবুও ভয় পাচ্ছে, না জানি কি হয় লোকটা ওর সাথে কেমন আচরণ করে..?
আচ্ছা ওকে মারবে না তো..!শুনেছে লোকটার অনেক রাগ কিন্তু দেখেনি আর দেখবেই বা কিভাবে একদিন কথা হয়েছিলো আর আজকে বিয়ে,কি হবে তাই ভাবতে ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে আলোর,
হঠাৎ দরজায় শব্দ হতেই ঐ দিকে তাকায় দেখে আবরার মানে ওর স্বামী ঘরে ঢুকছে, দেখে বুঝাচ্ছে ভিষন রেগে আছে,
কোনো কথা না বলে, ডাইরেক্ট আলোর সামনে দাঁড়ালো, তারপর ওর বাহু টেলে দাঁড় করিয়ে গর্জে বললো, আমি না করেছিলাম না, বিয়ে টা তে না করতে, তাও কেন রাজি হলে...?
আলো ভিষন ব্যাথা লাগলো বাহুতে চোখ মুখ কুঁচকে চুপ করে রইলো, ওর চুপ থাকা দেখে আবারের আরো রাগ হলো, আরো শক্ত করে ধরে বললো, কি হলো কথা কানে যায় না আমি কি বলছি....?
আমি তোমাকে বলেছিলাম আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি আমার হৃদয় জোরে, আমার জীবনে অন্য কেউ আছে, তাকে আমি অনেক ভালোবাসি, কিন্তু তুমি রাজি হয়ে গেলো...?
আলো যতো টা ব্যাথা পেলো বাহুতে তার থেকে বেশি ব্যাথা পেলো তার মনে,নারি তার স্বামীর অতীত কেই সহ্য করতে পারে না সেখানে বর্তমান কিভাবে সহ্য করবে আলো..? আদোও কি সম্ভব..?
আবরার আবার বলতে শুরু করলো, কি বলবে দেখেছো বড়লোক বাড়ি অনেক টাকা আছে তাই আর লোভ সামলাতে পারো নি, আমারি ভুলো হয়েছে, তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেয়ে কে বিশ্বাস করা, তোমার সাথে কথা বলা,
আলো বললো, আমি কি করতাম আমার কোনো উপায় ছিলো না আমি চেষ্টা করেছিলাম তো..'
আবরার তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে, তাই বুঝি তা কিভাবে চেষ্টা করেছিলে..?যে তোমার পরিবার তোমার কথা শুনলো না, আমার মা অসুস্থ তাই আমি বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করছি আর তুমি কেনো করলে...?
তোমাদের মতো মেয়েদের চিনা আছে আমার, ছোটো লোক থার্ড ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে,অসহ্য বলেই ধাক্কা মেরে আলো কে ফেলে দিয়ে, ওয়াসরুমে চলে গেলো,
আর আলো পড়ে যেয়ে টি–টেবিলের কোণার সাথে কপাল কেটে গেলো,সাথে সাথে রক্ত বের হলো, আলো হাত দিয়ে রক্ত ছুঁয়ে তারপর তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
কি অসাধারণ ব্যাপার ছোট থেকে সৎ মার লাঠি ঝাটা খেয়ে বড় হলাম,ভাবলাম বিয়ের পরে স্বামী ভালোবাসবে সব ভুলে যাবো,কিন্তু কি ভাগ্য আমার...!কথায় আছে না অভাগি যে দিকে যায় সমুদ্র শুকিয়ে যায়, আমি ঐ অভাগি....'বলেই লম্বা করে একটা শ্বাস নেয়,
তারপর আস্তে আস্তে উঠে তারপর লাগিজ থেকে এক সেট সাদা রঙের ছেলোয়ার কামিজ বের করে, প্রায় বিশ মিনিট পর আবরার বের হয় মুখে বিরক্তির ছাপ যেনো সামনে কোনো দুর্গন্ধ আছে,
আলো নিচের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ ওয়াসরুমে চলে গেলো, আবরার রাগে টাওয়ার টা সোফায় ছুরে মেরে ব্যালকনিতে চলে গেলো, তারপর পকেট থেকে সিগারেট বের করে খেতে লাগলো..'
আলো ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে, আবরার ঘরে নেই,সোফায় টাওয়ার টা পড়ে আছে বুঝতে পারে আবরার ব্যালকনি তে, আলো টাওয়ার টা হাতে নিয়ে ব্যালকনি দিকে যেতে নেয়, তখন আবরার কল বেজে উঠে..'
আলো আর এগোলো না চুপচাপ দাঁড়ালো, আবরার ফোনটা বের করে দেখে নিশাদ ফোন করেছে, আবরার ফোন টা ধরে, নিশাদ কান্না করতে করতে বলে,আবরার তুমি শুধু আমার কিভাবে তুমি বিয়ে করতে পারলে..? তুমি না বললে, তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না তাহলে এটা কি....?
আবরার বলে, নিশু (আবরার নিশাদ কে নিশু বলে ডাকে)তুমি কষ্ট কেনো পাচ্ছে, এটা জাস্ট একটা বিয়ে, কিন্তু আমার জীবনে শুধু তুমি আছো কেউ তোমার জায়গা নিতে পারবে না, দেখো তোমার আবরার শুধু তোমারি থাকবে,
নিশাদ বলে সত্যি তো,আবরার বলে,একদম সত্যি কথা এতে কোনো ভেজাল নেই, নিশাদ বলে আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি ঐ মেয়ের দিকে ভুলেও তাকাবে না, আর তাড়তাড়ি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো, আবরার বলে আচ্ছা, এখন রাখছি আর ঘুমিয়ে পড়ো এক দম এসব নিয়ে ভাববে না এই আবরার
শুধু তোমারি, নিশাদ হাসি দিয়ে বলে আছে তাহলে রাখছি,নিশাদ বলে লাভ ইউ বেবি, আবরার বলে লাই ইউ ঢু জান, তারপর ফোন কেটে দেয়।
পিছন থেকে সব কথা শুনে আলো, চোখ দিয়ে আপনা আপনি অশ্রু টপটপ করে গাল বেয়ে পড়তে থাকে, আলো বলে, আমার সঙ্গী এক মাত্র এই চোখের পানি, আর কেউ না কেউ কখনো আমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোই বাসলো না,
তারপর আর ব্যালকনিতে গেলো না,ঘরে এসে টাওয়ার টা আগের জায়াগায় রেখে বাতি অফ করে শুয়ে পড়লো...'
আবরার রুমে এসে দেখলো, আলো শুয়ে পড়ছে, আবরার বালিস টা নিয়ে সোফায় শুনে পড়লো, কালকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে,এই বিয়ের জামেলায় দুইদিন ছুটি নিছিলো, আবরার পেশায় একজন পাইলট, যদিও বাবার বিজনেস আছে বার বার বিজনেসে যোগ দিতে বলেছে কিন্তু ওর সপ্ন ছিলো পাইলট হওয়ার তাই হয়ছে,
যদিও বাবার বিজনেসে মাঝে মাঝে হেল্প করে বাট একদম পুরোপুরি বিজনেসে নেই,
ওর কথা হলো যেটা করে মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে তাই করবে,
আবরার ক্লান্ত ছিলো, তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলো, কিন্তু ঘুম নেই আলোর চোখে কিভাবে ঘুমাবে..?স্বামী যদি অন্য কোনো নারির প্রেমে আসক্ত থাকে তাহলে কি আর ঘুম আসে..?
বুঝতে পারলো, আবরার ঘুমিয়ে গেছে, আলো ধীরে ধীরে উঠে বসলো,ব্যালকনির হালকা আলো তে আবরার মুখ টা দেখা যাচ্ছে, ফর্সা মুখটা জ্বল জ্বল করছে, যেনো অন্ধকারে একটুকরো হিরে,
আলো চোখ নামিয়ে নিলো, তারপর বিরবির করে বললো আলো এটা তোর না, এই মানুষ টা অন্য কাউকে ভালোবসে তাই মন ঐ দিকে দেস না,
তারপর ব্যালকনিতে চলে গেলো, চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখলো আজকে চাঁদটা একটু বেশি আলো দিচ্ছে, আলো বলতে লাগলো,জানো চাঁদ আজকের রাত টা নিয়ে অনেক সপ্ন দেখছিলাম আমি, অনেক কিছু করবো, নতুন করে পথ চলা শুরু করবো, তাহলে এরকম কেনো হলো...?
আমি কি কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না..? বলতে বলতে চোখ দিয়ে নোনাজল বেরিয়ে পড়লো, আলো বললো, হ্যাঁ তুই তো আমার সঙ্গী রে, আর কেউ কখনো ভালোই বাসে নি...!"
চলবে.....
#পর্ব_১
#লেখিকা_তাসনিম_তালুকদার_বুশরা
[কপি করা নিষিদ্ধ 🚫]
বাসর ঘরে এক কোণে গুটিশুটি হয়ে বসে আছে আলো,প্রতিটা মেয়েরি বিয়ে নিয়ে অনেক সখ থাকে সপ্ন থাকে আলোও ছিলো অনেক সপ্ন কিন্তু থাকলেই যে সব পূর্ণ হতে হবে তা কোথায় লেখা আছে..?
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আলোর বিয়ে টা হলো ওর ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও, আর এখন বসে আছে তবুও ভয় পাচ্ছে, না জানি কি হয় লোকটা ওর সাথে কেমন আচরণ করে..?
আচ্ছা ওকে মারবে না তো..!শুনেছে লোকটার অনেক রাগ কিন্তু দেখেনি আর দেখবেই বা কিভাবে একদিন কথা হয়েছিলো আর আজকে বিয়ে,কি হবে তাই ভাবতে ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে আলোর,
হঠাৎ দরজায় শব্দ হতেই ঐ দিকে তাকায় দেখে আবরার মানে ওর স্বামী ঘরে ঢুকছে, দেখে বুঝাচ্ছে ভিষন রেগে আছে,
কোনো কথা না বলে, ডাইরেক্ট আলোর সামনে দাঁড়ালো, তারপর ওর বাহু টেলে দাঁড় করিয়ে গর্জে বললো, আমি না করেছিলাম না, বিয়ে টা তে না করতে, তাও কেন রাজি হলে...?
আলো ভিষন ব্যাথা লাগলো বাহুতে চোখ মুখ কুঁচকে চুপ করে রইলো, ওর চুপ থাকা দেখে আবারের আরো রাগ হলো, আরো শক্ত করে ধরে বললো, কি হলো কথা কানে যায় না আমি কি বলছি....?
আমি তোমাকে বলেছিলাম আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি আমার হৃদয় জোরে, আমার জীবনে অন্য কেউ আছে, তাকে আমি অনেক ভালোবাসি, কিন্তু তুমি রাজি হয়ে গেলো...?
আলো যতো টা ব্যাথা পেলো বাহুতে তার থেকে বেশি ব্যাথা পেলো তার মনে,নারি তার স্বামীর অতীত কেই সহ্য করতে পারে না সেখানে বর্তমান কিভাবে সহ্য করবে আলো..? আদোও কি সম্ভব..?
আবরার আবার বলতে শুরু করলো, কি বলবে দেখেছো বড়লোক বাড়ি অনেক টাকা আছে তাই আর লোভ সামলাতে পারো নি, আমারি ভুলো হয়েছে, তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেয়ে কে বিশ্বাস করা, তোমার সাথে কথা বলা,
আলো বললো, আমি কি করতাম আমার কোনো উপায় ছিলো না আমি চেষ্টা করেছিলাম তো..'
আবরার তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে, তাই বুঝি তা কিভাবে চেষ্টা করেছিলে..?যে তোমার পরিবার তোমার কথা শুনলো না, আমার মা অসুস্থ তাই আমি বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করছি আর তুমি কেনো করলে...?
তোমাদের মতো মেয়েদের চিনা আছে আমার, ছোটো লোক থার্ড ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে,অসহ্য বলেই ধাক্কা মেরে আলো কে ফেলে দিয়ে, ওয়াসরুমে চলে গেলো,
আর আলো পড়ে যেয়ে টি–টেবিলের কোণার সাথে কপাল কেটে গেলো,সাথে সাথে রক্ত বের হলো, আলো হাত দিয়ে রক্ত ছুঁয়ে তারপর তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
কি অসাধারণ ব্যাপার ছোট থেকে সৎ মার লাঠি ঝাটা খেয়ে বড় হলাম,ভাবলাম বিয়ের পরে স্বামী ভালোবাসবে সব ভুলে যাবো,কিন্তু কি ভাগ্য আমার...!কথায় আছে না অভাগি যে দিকে যায় সমুদ্র শুকিয়ে যায়, আমি ঐ অভাগি....'বলেই লম্বা করে একটা শ্বাস নেয়,
তারপর আস্তে আস্তে উঠে তারপর লাগিজ থেকে এক সেট সাদা রঙের ছেলোয়ার কামিজ বের করে, প্রায় বিশ মিনিট পর আবরার বের হয় মুখে বিরক্তির ছাপ যেনো সামনে কোনো দুর্গন্ধ আছে,
আলো নিচের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ ওয়াসরুমে চলে গেলো, আবরার রাগে টাওয়ার টা সোফায় ছুরে মেরে ব্যালকনিতে চলে গেলো, তারপর পকেট থেকে সিগারেট বের করে খেতে লাগলো..'
আলো ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে, আবরার ঘরে নেই,সোফায় টাওয়ার টা পড়ে আছে বুঝতে পারে আবরার ব্যালকনি তে, আলো টাওয়ার টা হাতে নিয়ে ব্যালকনি দিকে যেতে নেয়, তখন আবরার কল বেজে উঠে..'
আলো আর এগোলো না চুপচাপ দাঁড়ালো, আবরার ফোনটা বের করে দেখে নিশাদ ফোন করেছে, আবরার ফোন টা ধরে, নিশাদ কান্না করতে করতে বলে,আবরার তুমি শুধু আমার কিভাবে তুমি বিয়ে করতে পারলে..? তুমি না বললে, তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না তাহলে এটা কি....?
আবরার বলে, নিশু (আবরার নিশাদ কে নিশু বলে ডাকে)তুমি কষ্ট কেনো পাচ্ছে, এটা জাস্ট একটা বিয়ে, কিন্তু আমার জীবনে শুধু তুমি আছো কেউ তোমার জায়গা নিতে পারবে না, দেখো তোমার আবরার শুধু তোমারি থাকবে,
নিশাদ বলে সত্যি তো,আবরার বলে,একদম সত্যি কথা এতে কোনো ভেজাল নেই, নিশাদ বলে আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি ঐ মেয়ের দিকে ভুলেও তাকাবে না, আর তাড়তাড়ি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো, আবরার বলে আচ্ছা, এখন রাখছি আর ঘুমিয়ে পড়ো এক দম এসব নিয়ে ভাববে না এই আবরার
শুধু তোমারি, নিশাদ হাসি দিয়ে বলে আছে তাহলে রাখছি,নিশাদ বলে লাভ ইউ বেবি, আবরার বলে লাই ইউ ঢু জান, তারপর ফোন কেটে দেয়।
পিছন থেকে সব কথা শুনে আলো, চোখ দিয়ে আপনা আপনি অশ্রু টপটপ করে গাল বেয়ে পড়তে থাকে, আলো বলে, আমার সঙ্গী এক মাত্র এই চোখের পানি, আর কেউ না কেউ কখনো আমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোই বাসলো না,
তারপর আর ব্যালকনিতে গেলো না,ঘরে এসে টাওয়ার টা আগের জায়াগায় রেখে বাতি অফ করে শুয়ে পড়লো...'
আবরার রুমে এসে দেখলো, আলো শুয়ে পড়ছে, আবরার বালিস টা নিয়ে সোফায় শুনে পড়লো, কালকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে,এই বিয়ের জামেলায় দুইদিন ছুটি নিছিলো, আবরার পেশায় একজন পাইলট, যদিও বাবার বিজনেস আছে বার বার বিজনেসে যোগ দিতে বলেছে কিন্তু ওর সপ্ন ছিলো পাইলট হওয়ার তাই হয়ছে,
যদিও বাবার বিজনেসে মাঝে মাঝে হেল্প করে বাট একদম পুরোপুরি বিজনেসে নেই,
ওর কথা হলো যেটা করে মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে তাই করবে,
আবরার ক্লান্ত ছিলো, তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলো, কিন্তু ঘুম নেই আলোর চোখে কিভাবে ঘুমাবে..?স্বামী যদি অন্য কোনো নারির প্রেমে আসক্ত থাকে তাহলে কি আর ঘুম আসে..?
বুঝতে পারলো, আবরার ঘুমিয়ে গেছে, আলো ধীরে ধীরে উঠে বসলো,ব্যালকনির হালকা আলো তে আবরার মুখ টা দেখা যাচ্ছে, ফর্সা মুখটা জ্বল জ্বল করছে, যেনো অন্ধকারে একটুকরো হিরে,
আলো চোখ নামিয়ে নিলো, তারপর বিরবির করে বললো আলো এটা তোর না, এই মানুষ টা অন্য কাউকে ভালোবসে তাই মন ঐ দিকে দেস না,
তারপর ব্যালকনিতে চলে গেলো, চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখলো আজকে চাঁদটা একটু বেশি আলো দিচ্ছে, আলো বলতে লাগলো,জানো চাঁদ আজকের রাত টা নিয়ে অনেক সপ্ন দেখছিলাম আমি, অনেক কিছু করবো, নতুন করে পথ চলা শুরু করবো, তাহলে এরকম কেনো হলো...?
আমি কি কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না..? বলতে বলতে চোখ দিয়ে নোনাজল বেরিয়ে পড়লো, আলো বললো, হ্যাঁ তুই তো আমার সঙ্গী রে, আর কেউ কখনো ভালোই বাসে নি...!"
চলবে.....
#অসহ্য_থেকে_অনিবার্য
#পর্ব_১
#লেখিকা_তাসনিম_তালুকদার_বুশরা
[কপি করা নিষিদ্ধ 🚫]
বাসর ঘরে এক কোণে গুটিশুটি হয়ে বসে আছে আলো,প্রতিটা মেয়েরি বিয়ে নিয়ে অনেক সখ থাকে সপ্ন থাকে আলোও ছিলো অনেক সপ্ন কিন্তু থাকলেই যে সব পূর্ণ হতে হবে তা কোথায় লেখা আছে..?
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আলোর বিয়ে টা হলো ওর ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও, আর এখন বসে আছে তবুও ভয় পাচ্ছে, না জানি কি হয় লোকটা ওর সাথে কেমন আচরণ করে..?
আচ্ছা ওকে মারবে না তো..!শুনেছে লোকটার অনেক রাগ কিন্তু দেখেনি আর দেখবেই বা কিভাবে একদিন কথা হয়েছিলো আর আজকে বিয়ে,কি হবে তাই ভাবতে ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে আলোর,
হঠাৎ দরজায় শব্দ হতেই ঐ দিকে তাকায় দেখে আবরার মানে ওর স্বামী ঘরে ঢুকছে, দেখে বুঝাচ্ছে ভিষন রেগে আছে,
কোনো কথা না বলে, ডাইরেক্ট আলোর সামনে দাঁড়ালো, তারপর ওর বাহু টেলে দাঁড় করিয়ে গর্জে বললো, আমি না করেছিলাম না, বিয়ে টা তে না করতে, তাও কেন রাজি হলে...?
আলো ভিষন ব্যাথা লাগলো বাহুতে চোখ মুখ কুঁচকে চুপ করে রইলো, ওর চুপ থাকা দেখে আবারের আরো রাগ হলো, আরো শক্ত করে ধরে বললো, কি হলো কথা কানে যায় না আমি কি বলছি....?
আমি তোমাকে বলেছিলাম আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি আমার হৃদয় জোরে, আমার জীবনে অন্য কেউ আছে, তাকে আমি অনেক ভালোবাসি, কিন্তু তুমি রাজি হয়ে গেলো...?
আলো যতো টা ব্যাথা পেলো বাহুতে তার থেকে বেশি ব্যাথা পেলো তার মনে,নারি তার স্বামীর অতীত কেই সহ্য করতে পারে না সেখানে বর্তমান কিভাবে সহ্য করবে আলো..? আদোও কি সম্ভব..?
আবরার আবার বলতে শুরু করলো, কি বলবে দেখেছো বড়লোক বাড়ি অনেক টাকা আছে তাই আর লোভ সামলাতে পারো নি, আমারি ভুলো হয়েছে, তোমার মতো থার্ড ক্লাস মেয়ে কে বিশ্বাস করা, তোমার সাথে কথা বলা,
আলো বললো, আমি কি করতাম আমার কোনো উপায় ছিলো না আমি চেষ্টা করেছিলাম তো..'
আবরার তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে, তাই বুঝি তা কিভাবে চেষ্টা করেছিলে..?যে তোমার পরিবার তোমার কথা শুনলো না, আমার মা অসুস্থ তাই আমি বাধ্য হয়ে বিয়ে টা করছি আর তুমি কেনো করলে...?
তোমাদের মতো মেয়েদের চিনা আছে আমার, ছোটো লোক থার্ড ক্লাস ফ্যামিলির মেয়ে,অসহ্য বলেই ধাক্কা মেরে আলো কে ফেলে দিয়ে, ওয়াসরুমে চলে গেলো,
আর আলো পড়ে যেয়ে টি–টেবিলের কোণার সাথে কপাল কেটে গেলো,সাথে সাথে রক্ত বের হলো, আলো হাত দিয়ে রক্ত ছুঁয়ে তারপর তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
কি অসাধারণ ব্যাপার ছোট থেকে সৎ মার লাঠি ঝাটা খেয়ে বড় হলাম,ভাবলাম বিয়ের পরে স্বামী ভালোবাসবে সব ভুলে যাবো,কিন্তু কি ভাগ্য আমার...!কথায় আছে না অভাগি যে দিকে যায় সমুদ্র শুকিয়ে যায়, আমি ঐ অভাগি....'বলেই লম্বা করে একটা শ্বাস নেয়,
তারপর আস্তে আস্তে উঠে তারপর লাগিজ থেকে এক সেট সাদা রঙের ছেলোয়ার কামিজ বের করে, প্রায় বিশ মিনিট পর আবরার বের হয় মুখে বিরক্তির ছাপ যেনো সামনে কোনো দুর্গন্ধ আছে,
আলো নিচের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ ওয়াসরুমে চলে গেলো, আবরার রাগে টাওয়ার টা সোফায় ছুরে মেরে ব্যালকনিতে চলে গেলো, তারপর পকেট থেকে সিগারেট বের করে খেতে লাগলো..'
আলো ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখে, আবরার ঘরে নেই,সোফায় টাওয়ার টা পড়ে আছে বুঝতে পারে আবরার ব্যালকনি তে, আলো টাওয়ার টা হাতে নিয়ে ব্যালকনি দিকে যেতে নেয়, তখন আবরার কল বেজে উঠে..'
আলো আর এগোলো না চুপচাপ দাঁড়ালো, আবরার ফোনটা বের করে দেখে নিশাদ ফোন করেছে, আবরার ফোন টা ধরে, নিশাদ কান্না করতে করতে বলে,আবরার তুমি শুধু আমার কিভাবে তুমি বিয়ে করতে পারলে..? তুমি না বললে, তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না তাহলে এটা কি....?
আবরার বলে, নিশু (আবরার নিশাদ কে নিশু বলে ডাকে)তুমি কষ্ট কেনো পাচ্ছে, এটা জাস্ট একটা বিয়ে, কিন্তু আমার জীবনে শুধু তুমি আছো কেউ তোমার জায়গা নিতে পারবে না, দেখো তোমার আবরার শুধু তোমারি থাকবে,
নিশাদ বলে সত্যি তো,আবরার বলে,একদম সত্যি কথা এতে কোনো ভেজাল নেই, নিশাদ বলে আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি ঐ মেয়ের দিকে ভুলেও তাকাবে না, আর তাড়তাড়ি ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো, আবরার বলে আচ্ছা, এখন রাখছি আর ঘুমিয়ে পড়ো এক দম এসব নিয়ে ভাববে না এই আবরার
শুধু তোমারি, নিশাদ হাসি দিয়ে বলে আছে তাহলে রাখছি,নিশাদ বলে লাভ ইউ বেবি, আবরার বলে লাই ইউ ঢু জান, তারপর ফোন কেটে দেয়।
পিছন থেকে সব কথা শুনে আলো, চোখ দিয়ে আপনা আপনি অশ্রু টপটপ করে গাল বেয়ে পড়তে থাকে, আলো বলে, আমার সঙ্গী এক মাত্র এই চোখের পানি, আর কেউ না কেউ কখনো আমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোই বাসলো না,
তারপর আর ব্যালকনিতে গেলো না,ঘরে এসে টাওয়ার টা আগের জায়াগায় রেখে বাতি অফ করে শুয়ে পড়লো...'
আবরার রুমে এসে দেখলো, আলো শুয়ে পড়ছে, আবরার বালিস টা নিয়ে সোফায় শুনে পড়লো, কালকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে,এই বিয়ের জামেলায় দুইদিন ছুটি নিছিলো, আবরার পেশায় একজন পাইলট, যদিও বাবার বিজনেস আছে বার বার বিজনেসে যোগ দিতে বলেছে কিন্তু ওর সপ্ন ছিলো পাইলট হওয়ার তাই হয়ছে,
যদিও বাবার বিজনেসে মাঝে মাঝে হেল্প করে বাট একদম পুরোপুরি বিজনেসে নেই,
ওর কথা হলো যেটা করে মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে তাই করবে,
আবরার ক্লান্ত ছিলো, তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলো, কিন্তু ঘুম নেই আলোর চোখে কিভাবে ঘুমাবে..?স্বামী যদি অন্য কোনো নারির প্রেমে আসক্ত থাকে তাহলে কি আর ঘুম আসে..?
বুঝতে পারলো, আবরার ঘুমিয়ে গেছে, আলো ধীরে ধীরে উঠে বসলো,ব্যালকনির হালকা আলো তে আবরার মুখ টা দেখা যাচ্ছে, ফর্সা মুখটা জ্বল জ্বল করছে, যেনো অন্ধকারে একটুকরো হিরে,
আলো চোখ নামিয়ে নিলো, তারপর বিরবির করে বললো আলো এটা তোর না, এই মানুষ টা অন্য কাউকে ভালোবসে তাই মন ঐ দিকে দেস না,
তারপর ব্যালকনিতে চলে গেলো, চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখলো আজকে চাঁদটা একটু বেশি আলো দিচ্ছে, আলো বলতে লাগলো,জানো চাঁদ আজকের রাত টা নিয়ে অনেক সপ্ন দেখছিলাম আমি, অনেক কিছু করবো, নতুন করে পথ চলা শুরু করবো, তাহলে এরকম কেনো হলো...?
আমি কি কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না..? বলতে বলতে চোখ দিয়ে নোনাজল বেরিয়ে পড়লো, আলো বললো, হ্যাঁ তুই তো আমার সঙ্গী রে, আর কেউ কখনো ভালোই বাসে নি...!"
চলবে.....

